নান্দিনা মাছ বাংলাদেশে নান্দিল বা নান্দি নামে পরিচিত যার বৈজ্ঞানিক নাম Labeo nandina। এ মাছটি সিপ্রিনিফরমিস (Cyprinifoormes) বর্গের সিপ্রিনিডি (Cypriidae) গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। নান্দিনার ইংরেজী নাম Nandi labeo।

ভৌগোলিক বিস্তার:
বাংলাদেশ, পশ্চিম বাংলা এবং আসাম (ভারত) এবং মায়ানমার (Talwar and Jhingran, 1991)।

দেহ বর্ণনা:
মাছটির দেহ লম্বাটে এবং পিঠের অংশ পেটের অংশের তুলনায় উত্তল। চোখের মনির চারদিক লাল বর্ণের। পৃষ্ঠ পাখনা অনেকটা গোলাকার এবং পুচ্ছপাখনা গভীর খাঁজযুক্ত। মাথার নিচ দিক থেকে দেখলে চোখ বোঝা যায় না। ঠোঁট প্রান্তীয় ও পাতলা এবং নিচের অংশটি প্যাপিলা যুক্ত। তুণ্ড ভোঁতা এবং তুণ্ড ও মাথার উপরের অংশে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র বিদ্যমান। দুই জোড়া গোঁফ (বার্বেল) বিদ্যমান।

মাছটির পৃষ্ঠদেশ গাঢ় সবুজাভাব বা প্রায় কালচে এবং পার্শ্বদেশ ও পেটের অংশ হালকা বর্ণের। পার্শ্বদেশের কিছু অংশে কালির মতো ছড়ানো দাগ বিদ্যমান। আঁইশ ক্ষুদ্রাকৃতির এবং অনেক আঁইশ এর মধ্যভাগ লাল বর্ণের।

ফিন ফর্মুলা:
D. 24-26 (2/22-24), P1 15-16, P2 9 (I/8), A 7 (2/5)
(IUCN Bangladesh, 2000)

প্রাপ্যতা ও আকার:
বাংলাদেশে অতীতে এই মাছ বেশ পাওয়া গেলেও বর্তমানে তা পাওয়া খুবই দুষ্কর। মাছটি বাংলাদেশে অতি বিপন্ন (IUCN Bangladesh, 2000)। বাংলাদেশের সিলেট ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের নদী ও বিলসমূহে একসময় প্রচুর পরিমাণে এ মাছটি পাওয়া গেলেও বর্তমানে তেমন পাওয়া যায় না (Rahman, 1989)।

গত ২০ জানুয়ারি ২০১১ সালে নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার নবাবের তাম্বু গ্রামে ২টি নান্দিল মাছ পাওয়া যায় যা স্থানীয় জেলেরা পুরানো আত্রাই নদীর দহ সেঁচে মাছ ধরার সময় এগুলি সংগ্রহ করে। ২টি মাছের মধ্যে বড় মাছটির দৈর্ঘ্য ছিল ২০ সেমি এবং ছোটটির দৈর্ঘ্য ছিল ১৩ সেমি। কয়েকজন বৈজ্ঞানিক এর রেকর্ডকৃত নান্দিনা মাছটির সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য ২৬ সেমি (Talwar and Jhingran, 1991) এবং বাংলাদেশের সিলেটের ঘাছের দহর ফিশারী হতে প্রাপ্ত ৮১.২ সেমি (ওজন ৮.৬ কেজি) ও ৭৮ সেমি (ওজন ১০ কেজি) (Rahman, 1989)।

নান্দিনা মাছটি ডোবা বা পুকুরেও পালন করা সম্ভব (Rahman, 1989)। মাছটি বাসস্থান নষ্ট হওয়ার কারণে বর্তমানে বাংলাদেশ হতে বিলুপ্ত প্রায় (IUCN Bangladesh, 2000)।

তথ্যসূত্র:

  • IUCN Bangladesh. 2000. Red book of threatened fishes of Bangladesh, IUCN- The world conservation union. xii+116 pp.
  • Rahman AKA. 1989. Freshwater Fishes of Bangladesh, 1st edition, Zoological Society of Bangladesh, Department of Zoology, University of Dhaka, Dhaka-1000, p. 114.
  • Talwar PK and Jhingran AG. 1991. Inland Fishes of India and Adjacent Countries, Vol. II, Oxford & IBH Publishing Co. Pvt. Ltd. New Delhi-Calcutta, pp. 214-215.

Visited 625 times, 1 visits today | Have any fisheries relevant question?
মৎস্য পরিচিতি: নান্দিনা

Visitors' Opinion

রোকনুজ্জামান নয়ন

শিক্ষার্থী, ফিশারীজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। Email: nymphish10@gmail.com. বিস্তারিত এখানে

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.