বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য আইন, ২০১৭ (২০১৭ সনের ২ নং আইন) অনলাইনে প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ আইন মন্ত্রনালয়। উক্ত প্রকাশনাটি ফিশারীজের সাথে সংশ্লিষ্ট বিধায় প্রচারণা ও সচেতনা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এখানে হুবহু উপস্থাপন করা হল।

 

জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উহার উপাদানসমূহের টেকসই ব্যবহার, জীবসম্পদ ও তদ্‌সংশ্লিষ্ট জ্ঞান ব্যবহার হইতে প্রাপ্ত সুফলের সুষ্ঠু ও ন্যায্য হিস্যা বণ্টন এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে বিধান করিবার নিমিত্ত প্রণীত আইন

যেহেতু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি অংশের ১৮ক অনুচ্ছেদে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রহিয়াছে;

যেহেতু বাংলাদেশ জাতিসংঘের জীববৈচিত্র্য সনদ (Convention on Biological Diversity) এর পক্ষ হিসাবে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উহার উপাদানসমূহের টেকসই ব্যবহার, জীবসম্পদ ও তদ্‌সংশ্লিষ্ট জ্ঞান ব্যবহার হইতে প্রাপ্ত সুফলের সুষ্ঠু ও ন্যায্য হিস্যা বণ্টন এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে বিধান করিবার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিকভাবে অঙ্গীকারাবদ্ধ;

যেহেতু বাংলাদেশ জীবসম্পদ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের সহিত সম্পর্কিত প্রথাগত জ্ঞানে সমৃদ্ধ; এবং

যেহেতু জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণকল্পে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল: –

প্রথম অধ্যায়
প্রারম্ভিক
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন

১। (১) এই আইন বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য আইন, ২০১৭ নামে অভিহিত হইবে।

(২) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে তারিখ নির্ধারণ করিবে সেই তারিখে এই আইন কার্যকর হইবে।

সংজ্ঞা

২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-

(১) ‘‘অনিবাসী’’ বলিতে Income Tax Ordinance, 1984 (Ordinance No. XXXVI of 1984) এর section 2(42) এর সংজ্ঞা অনুযায়ী non-resident-কে বুঝাইবে;

(২) ‘‘ইউনিয়ন কমিটি’’ অর্থ ধারা ২৫ এর অধীন গঠিত ইউনিয়ন জীববৈচিত্র্য বিষয়ক ব্যবস্থাপনা ও তদারক কমিটি;

(৩) ‘‘উপজেলা কমিটি’’ অর্থ ধারা ১৯ এর অধীন গঠিত উপজেলা জীববৈচিত্র্য বিষয়ক ব্যবস্থাপনা ও তদারক কমিটি;

(৪) ‘‘কমিটি’’ অর্থ, ক্ষেত্রমত, জাতীয় কমিটি, কারিগরি কমিটি, সিটি কর্পোরেশন কমিটি, জেলা কমিটি, উপজেলা কমিটি, পৌরসভা কমিটি, ইউনিয়ন কমিটি, দল, সমিতি বা উপ-কমিটি;

(৫) ‘‘কালটিভার’’ অর্থ এমন প্রকারের উদ্ভিদ, যাহার বিবর্তন হইয়াছে এবং চাষাবাদের মাধ্যমে টিকিয়া আছে, এবং চাষাবাদের প্রয়োজনে যাহাদের বংশ বৃদ্ধি করা হইতেছে;

(৬) ‘‘কারিগরি কমিটি’’ অর্থ ধারা ১১ এর অধীন গঠিত জীববৈচিত্র্য বিষয়ক কারিগরি কমিটি;

(৭) ‘‘গবেষণা’’ অর্থ জীবসম্পদের উপর সমীক্ষা বা পদ্ধতিগত অনুসন্ধান অথবা জীবের বা উহার উপজাতের বা প্রতিবেশ ব্যবস্থার উপর গবেষণা;

(৮) ‘‘জাতীয় কমিটি’’ অর্থ ধারা ৮ এর অধীন গঠিত জীববৈচিত্র্য বিষয়ক জাতীয় কমিটি;

(৯) ‘‘জাতীয় জীববৈচিত্র্য কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা’’ অর্থ ধারা ৩১ এর অধীন প্রণীত জাতীয় জীববৈচিত্র্য কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা;

(১০)‘‘জেলা কমিটি’’ অর্থ ধারা ১৬ এর অধীন গঠিত জেলা জীববৈচিত্র্য বিষয়ক ব্যবস্থাপনা ও তদারক কমিটি;

(১১) ‘‘জীববৈচিত্র্য’’ অর্থ জীবজগতের মধ্যে বিরাজমান বিভিন্নতা, যাহা সামগ্রিকভাবে পরিবেশের অংশ এবং স্থলজ, জলজ বা সামুদ্রিক পরিবেশে বিদ্যমান প্রজাতিগত বিভিন্নতা (Species Diversity), কৌলিগত বিভিন্নতা (Genetic Diversity) ও প্রতিবেশগত বিভিন্নতাও (Ecosystem Diversity) ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(১২) ‘‘জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ ঐতিহ্যগত স্থান’’ অর্থ ধারা ৩২ এর অধীন জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ ঐতিহ্যগত স্থান হিসাবে ঘোষিত কোনো এলাকা;

(১৩) ‘‘জীবসম্পদ’’ অর্থ উদ্ভিদ, প্রাণী ও অণুজীব বা উহাদের অংশবিশেষ, বংশগত উপাদান ও উপজাতের (মূল সংযোজিত পণ্য বা উপকরণ ব্যতীত) অন্তর্গত কৌলিসম্পদ (Genetic Resources) অথবা কোনো প্রতিবেশ ব্যবস্থার অন্তর্গত এইরূপ কোনো জীবজ উপাদান (Biotic Component), মানুষের নিকট যাহার প্রকৃত বা সম্ভাব্য ব্যবহার বা ব্যবহারিক মূল্য রহিয়াছে, তবে মানব জীন উপাদান উহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না;

(১৪) ‘‘জীব-সমীক্ষা’’ বা ‘‘জীব-ব্যবহার’’ অর্থ কোনো উদ্দেশ্যে প্রজাতি ও উপ-প্রজাতি নির্বিশেষে জীবসম্পদের যে কোনো উপাদান, নির্যাস, কৌলিগত বৈশিষ্ট্য বা কোষ-কলার বৈশিষ্ট্য সংগ্রহ, নিরূপণ বা বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান সংশ্লিষ্ট কার্য;

(১৫) ‘‘টেকসই ব্যবহার’’ অর্থ জীববৈচিত্র্যের উপাদানসমূহের এইরূপ ব্যবহার পদ্ধতি, যাহা বা যে সকল কার্যক্রম জীববৈচিত্র্যের দীর্ঘমেয়াদে টিকিয়া থাকিবার ক্ষেত্রে কোনো প্রকার হুমকি সৃষ্টি না করিয়া বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রয়োজন মিটাইবার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়;

(১৬) ‘‘তহবিল’’ অর্থ ধারা ৩৬ এর অধীন গঠিত জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ তহবিল;

(১৭) ‘‘ন্যায্য হিস্যা বণ্টন’’ অর্থ ধারা ৩০ এর বিধান অনুযায়ী জীববৈচিত্র্য সম্পদের সুফলের ন্যায়সঙ্গত বণ্টন;

(১৮) ‘‘পৌরসভা কমিটি’’ অর্থ ধারা ২২ এর অধীন গঠিত পৌরসভা জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা ও তদারক কমিটি;

(১৯) ‘‘বাণিজ্যিক ব্যবহার’’ অর্থ বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে জীবসম্পদের ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন পণ্য তৈরি বা উৎপাদন যেমন: ঔষধ, শিল্পে ব্যবহার্য এনজাইম, খাদ্যের সুগন্ধি, মানবদেহে ব্যবহার্য সুগন্ধি ও প্রসাধনী, রং, ইমালসিফাইয়ার, ওলিওরেজিন্‌স, প্রভৃতিসহ অণুজীব, শস্য, মৎস্য এবং প্রাণিসম্পদের কৌলিগত পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে অন্য জীব হইতে নির্যাস বা জিন সংগ্রহ করা;

(২০) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;

(২১) ‘‘বিপন্ন প্রজাতি’’ অর্থ সেই সকল জীবসম্পদ বা উহাদের প্রজাতি বা উপ-প্রজাতি, যাহা মহাবিপন্ন নয় কিন্তু অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন এবং অদূর ভবিষ্যতে প্রকৃতি হইতে বিলুপ্ত হইবার আশঙ্কা রহিয়াছে;

(২২) ‘‘ব্যক্তি’’ অর্থে যে কোনো ধরনের কোম্পানি, সংঘ, সমিতি, অংশীদারি কারবার, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাসহ উহাদের প্রতিনিধিও অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(২৩) ‘‘ল্যান্ড রেইস’’ অর্থ আদিম কালটিভার, যাহা প্রাচীনকাল হইতে কৃষক ও তাহাদের বংশধরদের দ্বারা বন্য অবস্থা হইতে মাঠে প্রসার লাভ হইতেছে;

(২৪) ‘‘সিটি কর্পোরেশন কমিটি’’ অর্থ ধারা ১৩ এর অধীন গঠিত সিটি কর্পোরেশন জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা ও তদারক কমিটি; এবং

(২৫) ‘‘সংস্থা’’ অর্থে যে কোনো ধরনের কোম্পানি, প্রতিষ্ঠান, অংশীদারি কারবার বা একাধিক ব্যক্তি বা গোষ্ঠী সমন্বয়ে গঠিত সংঘ, সমিতি, সংগঠন বা সংস্থাও অন্তর্ভুক্ত হইবে।

আইনের প্রাধান্য
৩। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলী প্রাধান্য পাইবে।
দ্বিতীয় অধ্যায়
জীববৈচিত্র্য সম্পর্কিত কার্যক্রম গ্রহণ ও গবেষণালদ্ধ ফলাফল হস্তান্তরে বিধি-নিষেধ, আবেদন অনুমোদন ও প্রত্যাখান
জীববৈচিত্র্য সম্পর্কিত কার্যক্রম গ্রহণ ও গবেষণালব্ধ ফলাফল হস্তান্তরে বিধি-নিষেধ

৪। জাতীয় কমিটির পূর্বানুমোদন ব্যতীত-

(ক) বাংলাদেশের অনিবাসী কোনো নাগরিক ;

(খ) বাংলাদেশের নাগরিক নহেন এমন কোনো ব্যক্তি;

(গ) বিদ্যমান কোনো আইনের অধীন বাংলাদেশে নিবন্ধিত নহে এমন কোনো সংস্থা-

(অ) কোনো জীববৈচিত্র্য বা জীবসম্পদ বা তদ্‌বিষয়ক প্রথাগত জ্ঞান (traditional knowledge) সংগ্রহ করিতে বা অধিকারে লইতে পারিবেন না; অথবা

(আ) জীববৈচিত্র্য বা জীবসম্পদের বাণিজ্যিক ব্যবহার, জীব-সমীক্ষা, জীব-ব্যবহার বা জীব-পরীক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা বা এতদ্বিষয়ক কোনো গবেষণা করিতে পারিবেন না; অথবা

(ই) জীববৈচিত্র্য বা জীবসম্পদের আহরণ সংশ্লিষ্ট কোনো কার্যক্রমের সহিত যুক্ত হইতে পারিবেন না; অথবা

(ঈ) এর নিকট অন্য কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা জীববৈচিত্র্য বা জীবসম্পদ হইতে গবেষণালব্ধ ফলাফল হস্তান্তর বা প্রদান করিতে পারিবেন না।

গবেষণালব্ধ প্রবন্ধ প্রকাশ
৫। সরকারি বিধি-বিধান অনুযায়ী কোনো গবেষণালব্ধ প্রবন্ধ প্রকাশিত হইলে, উহা কোনো সেমিনার বা কর্মশালায় উপস্থাপন বা প্রচার করা যাইবে এবং উহাতে প্রাপ্ত ফলাফল বা মতামত জাতীয় কমিটি উহার কার্যাবলী সম্পাদনকালে বিবেচনায় লইতে পারিবে।
জীববৈচিত্র্য বিষয়ক মেধাস্বত্বের অধিকারের জন্য আবেদনে বিধি-নিষেধ

৬। (১) কোনো ব্যক্তি, জাতীয় কমিটির পূর্বানুমোদন ব্যতীত, কোনো জীবসম্পদ ব্যবহারের মাধ্যমে উদ্ভাবিত কোনো কিছুর মেধাস্বত্ব (Intelectual Property) অধিকারের জন্য বাংলাদেশ বা বাংলাদেশের বাহিরে আবেদন করিতে পারিবেন না।

(২) জাতীয় কমিটি, মেধাস্বত্ব অধিকারের আবেদন অনুমোদনের ক্ষেত্রে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, বেনিফিট শেয়ারিং ফি বা রয়্যালটি বা উভয় অথবা উক্ত অধিকারের বাণিজ্যিক ব্যবহারের ফলে উদ্ভূত আর্থিক লভ্যাংশের ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত করাসহ প্রয়োজনীয় শর্তাদি, আরোপ করিতে পারিবে।

আবেদন অনুমোদন, প্রত্যাখ্যান, ইত্যাদি

৭। (১) এই আইনের ধারা ৪ ও ৬ এর অধীন যে কোনো বিষয়ে জাতীয় কমিটির অনুমোদন লাভের নিমিত্ত, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ও ফি প্রদানপূর্বক, আবেদন করিতে হইবে।

(২) জাতীয় কমিটি, উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো আবেদন প্রাপ্ত হইলে উহা, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, যাচাই-বাছাইপূর্বক, অনুমোদন বা প্রত্যাখ্যান করিতে পারিবে; তবে, জাতীয় কমিটি প্রাপ্ত আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কারিগরি কমিটি বা অন্য কোন সরকারি দপ্তর বা সংস্থার পরামর্শ গ্রহণ করিতে পারিবে।

(৩) এই ধারার অধীন প্রাপ্ত প্রত্যেক আবেদন, উহা প্রাপ্তির তারিখ হইতে অনধিক ৯০ (নববই) দিনের মধ্যে নিষ্পত্তিকরত, ক্ষেত্রমত, উহা অনুমোদন বা প্রত্যাখ্যানের বিষয়, সংশ্লিষ্ট আবেদনকারীকে লিখিতভাবে অবহিত করিতে হইবে।

(৪) এই ধারার অধীন কোনো আবেদন প্রত্যাখ্যাত হইলে সংক্ষুদ্ধ ব্যক্তি ধারা ৪৮ এর অধীন পুনর্বিবেচনার (Review) জন্য আবেদন করিতে পারিবেন।

(৫) কোনো কমিটির আঞ্চলিক অধিক্ষেত্রভুক্ত জীববৈচিত্র্য বা জীবসম্পদ এবং তদ্‌সংশ্লিষ্ট জ্ঞান, ইত্যাদি ব্যবহারের নিমিত্ত অধিকারে লওয়া বিষয়ক কোনো আবেদনপত্রের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে জাতীয় কমিটিকে সংশ্লিষ্ট কমিটি বা কমিটিসমূহের সহিত পরামর্শ করিতে হইবে।

(৬) জাতীয় কমিটি, এই ধারার অধীন কোনো আবেদন অনুমোদনের ক্ষেত্রে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, সুনির্দিষ্ট শর্ত এবং, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, ফি বা রয়্যালটি আরোপ করিতে পারিবে।

(৭) জাতীয় কমিটি, এই ধারার অধীন কোনো আবেদন অনুমোদন করিলে, বিষয়টি জনগণকে অবহিত করিবার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।

তৃতীয় অধ্যায়
জীববৈচিত্র্য বিষয়ক কমিটি গঠন ও কার্যাবলী
জীববৈচিত্র্য বিষয়ক জাতীয় কমিটি গঠন

৮। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে ‘‘জীববৈচিত্র্য বিষয়ক জাতীয় কমিটি’’ নামে একটি কমিটি গঠিত হইবে, যথা: –

(ক) পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী, যিনি উহার সভাপতিও হইবেন; তবে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী সকলেই বিদ্যমান থাকিলে মন্ত্রী সভাপতি, এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, অন্য দুইজন বা একজন সহ-সভাপতিও হইবেন;

(খ) পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বা সচিব;

(গ) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উহার অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;

(ঘ) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উহার অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;

(ঙ) কৃষি মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উহার অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;

(চ) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উহার অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;

(ছ) ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উহার অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;

(জ) বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উহার অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;

(ঝ) সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উহার অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;

(ঞ) পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উহার অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;

(ট) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উহার অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;

(ঠ) শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উহার অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;

(ড) নিম্নবর্ণিত অধিদপ্তর বা প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রধান –

(অ) বন অধিদপ্তর;

(আ) জাতীয় জীবপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান;

(ই) বাংলাদেশ ন্যাশনাল হারবেরিয়াম;

(ঈ) বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল;

(উ) বিজ্ঞান এবং শিল্প গবেষণা পরিষদ;

(ঊ) বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান;

(ঋ) প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান;

(এ) বন গবেষণা ইনস্টিটিউট;

(ঢ) পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, যিনি ইহার সদস্য-সচিবও হইবেন;

(ণ) পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, কমিটির সাচিবিক দায়িত্ব পালন করিবে।

(২) জাতীয় কমিটি, প্রয়োজনীয় ও যথাযথ মনে করিলে, জীববৈচিত্র্য বিষয়ে অভিজ্ঞ যে কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার প্রতিনিধিকে উহার সদস্য হিসাবে কো-অপ্ট করিতে পারিবে।

জীববৈচিত্র্য বিষয়ক জাতীয় কমিটির সভা, ইত্যাদি

৯। (১) এই ধারার বিধানাবলী সাপেক্ষে, জাতীয় কমিটি উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।

(২) প্রতি বৎসর জাতীয় কমিটির কমপক্ষে দুইটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে, যাহা উক্ত কমিটির সভাপতি কর্তৃক নির্ধারিত স্থান ও সময়ে অনুষ্ঠিত হইবে।

(৩) জাতীয় কমিটির সভাপতি উহার সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন, তবে তাহার অনুপস্থিতিতে সভায় উপস্থিত সহ-সভাপতি ও সদস্যগণের মধ্যে যিনি শীর্ষে অবস্থান করিবেন তিনি উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করিতে পারিবেন।

(৪) সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের উপস্থিতিতে সভার কোরাম হইবে।

(৫) উপস্থিত সদস্যগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সভার সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।

(৬) শুধু কোনো সদস্যপদে শূন্যতা বা কমিটি গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে জাতীয় কমিটির কোনো কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না বা তদ্‌সর্ম্পকে আদালত বা অন্য কোথাও কোনো প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না।

(৭) জাতীয় কমিটির সদস্য-সচিব উক্ত কমিটির সভাপতির পূর্বানুমতিক্রমে সভা আহবান করিবেন এবং সভার কার্যবিবরণী প্রস্তুত ও সংরক্ষণ করিবেন।

(৮) জাতীয় কমিটি, প্রয়োজনে, কোনো বিশেষ বিষয়ে উহাকে সহায়তার জন্য, জীববৈচিত্র্য সম্পর্কিত বিষয়ের এক বা একাধিক বিশেষজ্ঞ সমন্বয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করিতে পারিবে অথবা তাহাদিগকে উহার সভায় অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানাইতে পারিবে অথবা তাহাদের মতামত গ্রহণ করিতে পারিবে।

জীববৈচিত্র্য বিষয়ক জাতীয় কমিটির কার্যাবলী

১০। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে জীববৈচিত্র্য বিষয়ক জাতীয় কমিটির কার্যাবলী হইবে নিম্নরূপ, যথা:-

(ক) এই আইনের অধীন প্রাপ্ত কোনো আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রদান;

(খ) জেলা কমিটি কর্তৃক প্রস্তুতকৃত ও সংরক্ষিত রেজিস্টারের সমন্বয়ে, পরিবেশ অধিদপ্তরের মাধ্যমে, জাতীয় জীববৈচিত্র্য বিষয়ক রেজিস্টার প্রস্তুত ও সংরক্ষণ;

(গ) কৌলিসম্পদ বা জীবসম্পদ হইতে প্রাপ্ত সুফলের ন্যায্য হিস্যা বণ্টন;

(ঘ) জীববৈচিত্র্যের গুরুত্বসম্পন্ন এলাকা চিহ্নিত করা এবং উক্ত এলাকাকে জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ ঐতিহ্যগত স্থান হিসাবে ঘোষণার জন্য সরকারকে পরামর্শ প্রদান;

(ঙ) জীববৈচিত্র্যসমৃদ্ধ ঐতিহ্যগত স্থান হিসাবে ঘোষিত এলাকার ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ প্রদান;

(চ) কৌলিসম্পদ বা জীবসম্পদ হইতে প্রাপ্ত সুফলের ন্যায্য হিস্যা বণ্টন নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে বিধি প্রণয়ন করিতে সরকারকে পরামর্শ প্রদান;

(ছ) জীববৈচিত্র্যসমৃদ্ধ ঐতিহ্যগত এলাকার ব্যবস্থাপনা এবং সংরক্ষণের নির্দেশিকা প্রস্তুত করিতে সরকারকে পরামর্শ প্রদান;

(জ) স্থানীয় সম্প্রদায়ের জীববৈচিত্র্য বিষয়ক জ্ঞানের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন, স্বীকৃতি প্রদান এবং উক্ত জ্ঞান সংরক্ষণ করিবার লক্ষ্যে সরকারকে পরামর্শ প্রদান;

(ঝ) বিভিন্ন শ্রেণির জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণকল্পে যথাযথ সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে মনোনীত বা দায়িত্ব প্রদান করিবার ক্ষেত্রে সরকারকে পরামর্শ প্রদান;

(ঞ) সাধারণত নিত্য-প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য হিসাবে বিপণন করা হইয়া থাকে এইরূপ কোনো জীবসম্পদকে এই আইনের আওতা হইতে অব্যাহতি প্রদান করিবার ক্ষেত্রে সরকারকে পরামর্শ প্রদান;

(ট) কমিটিসমূহের কার্যাবলী পর্যবেক্ষণ ও তদারক এবং, প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে, উহাদিগকে দিক্-নির্দেশনা প্রদান; এবং

(ঠ) এই আইনের যথাযথ বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অন্যান্য কার্যাবলী সম্পাদন করা।

জীববৈচিত্র্য বিষয়ক কারিগরি কমিটি গঠন, ইত্যাদি

১১। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, জীববৈচিত্র্য সম্পর্কিত কোনো বিষয় কোনো মন্ত্রণালয় বা বিভাগের কার্যতালিকাভুক্ত থাকিলে, উক্ত মন্ত্রণালয় বা বিভাগ ‘‘জীববৈচিত্র্য বিষয়ক কারিগরি কমিটি’’ নামে একটি কমিটি গঠন করিবে।

(২) কারিগরি কমিটি নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হইবে, যথা: –

(ক) সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা, যিনি উহার সভাপতিও হইবেন;

(খ) সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের কার্যতালিকার সহিত সম্পর্কিত, জীববৈচিত্র্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ের, একজন করিয়া বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি;

(গ) পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক মনোনীত উহার একজন উপযুক্ত প্রতিনিধি;

(ঘ) সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের অন্যূন সিনিয়র সহকারী সচিব পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা, যিনি উহার সদস্য-সচিবও হইবেন।

(৩) কারিগরি কমিটি স্বয়ং উহার সভার কার্যপদ্ধতিসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়াদি নির্ধারণ করিবে।

জীববৈচিত্র্য বিষয়ক কারিগরি কমিটির কার্যাবলী

১২। জীববৈচিত্র্য বিষয়ক কারিগরি কমিটির কার্যাবলী হইবে নিম্নরূপ, যথা:-

(ক) সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের কার্যতালিকাভুক্ত জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং তদ্‌সম্পর্কিত কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে উক্ত মন্ত্রণালয় বা বিভাগকে পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তা প্রদান;

(খ) জাতীয় কমিটির কার্যাবলী বাস্তবায়নে উক্ত কমিটিকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তা প্রদান;

(গ) জাতীয় কমিটি কর্তৃক কোনো আবেদনপত্র প্রেরিত হইলে উহা মূল্যায়নপূর্বক উক্ত কমিটি বরাবর সুপারিশ প্রেরণ; এবং

(ঘ) সরকার বা জাতীয় কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী অন্যান্য দায়িত্ব পালন।

সিটি কর্পোরেশন জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা ও তদারক কমিটি গঠন

১৩। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, প্রত্যেক সিটি কর্পোরেশনে নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে ‘‘সিটি কর্পোরেশন জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা ও তদারক কমিটি’’ নামে একটি কমিটি গঠিত হইবে, যথা:-

(ক) সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, যিনি উহার সভাপতিও হইবেন;

(খ) সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা;

(গ) বিভাগীয় কমিশনারের প্রতিনিধি;

(ঘ) মেট্রোপলিটান পুলিশ কমিশনারের প্রতিনিধি;

(ঙ) সিটি কর্পোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা;

(চ) সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নগর উন্নয়ন কর্মকর্তা;

(ছ) সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা;

(জ) বিভাগীয় বন কর্মকর্তা;

(ঝ) জেলা মৎস্য কর্মকর্তা;

(ঞ) উপ-পরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর;

(ট) জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা;

(ঠ) উপ-পরিচালক, সমাজসেবা কার্যালয়;

(ড) জেলা সমবায় কর্মকর্তা;

(ঢ) মেয়র কর্তৃক মনোনীত, পরিবেশ উন্নয়নে কার্যক্রম রহিয়াছে এইরূপ, বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) একজন প্রতিনিধি; এবং

(ণ) পরিবেশ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট পরিচালক বা জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, যিনি উহার সদস্য-সচিবও হইবেন।

(২) সিটি কর্পোরেশন কমিটি, প্রয়োজনীয় ও যথাযথ মনে করিলে, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ সংক্রান্ত কার্যক্রমে আগ্রহী যে কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার প্রতিনিধিকে উহার সদস্য হিসাবে কো-অপ্ট করিতে পারিবে।

সিটি কর্পোরেশন জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা ও তদারক কমিটির সভা, ইত্যাদি

১৪। (১) এই ধারার বিধানাবলী সাপেক্ষে, সিটি কর্পোরেশন কমিটি উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।

(২) প্রতি বৎসর সিটি কর্পোরেশন কমিটির কমপক্ষে দুইটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে, যাহা উক্ত কমিটির সভাপতি কর্তৃক নির্ধারিত স্থান ও সময়ে অনুষ্ঠিত হইবে।

(৩) সিটি কর্পোরেশন কমিটির সভাপতি উহার সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন, তবে তাহার অনুপস্থিতিতে তদ্‌কর্তৃক মনোনীত উক্ত কমিটির অন্য কোনো সদ্য সভাপতিত্ব করিতে পারিবেন।

(৪) সিটি কর্পোরেশন কমিটির সদস্য-সচিব উক্ত কমিটির সভাপতির পূর্বানুমতিক্রমে উহার সভা আহবান করিবেন এবং সভার কার্যবিবরণী প্রস্তুত ও সংরক্ষণ করিবেন।

(৫) সিটি কর্পোরেশন কমিটি, প্রয়োজনে, কোনো বিশেষ বিষয়ে উহাকে সহায়তার জন্য কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার প্রতিনিধিকে উহার সভায় অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানাইতে পারিবে অথবা কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার মতামত গ্রহণ করিতে পারিবে।

(৬) সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের উপস্থিতিতে সভার কোরাম হইবে।

(৭) উপস্থিত সদস্যগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সভার সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।

সিটি কর্পোরেশন জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা ও তদারক কমিটির দায়িত্ব ও কার্যাবলী

১৫। সিটি কর্পোরেশন কমিটির দায়িত্ব ও কার্যাবলী হইবে নিম্নরূপ, যথা: –

(ক) সিটি কর্পোরেশন এলাকার জীববৈচিত্র্য বিষয়ক রেজিস্টার প্রস্তুত ও সংরক্ষণ;

(খ) জাতীয় জীববৈচিত্র্য কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকারকে সহায়তাকরণ;

(গ) সিটি কর্পোরেশনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে স্থানীয় জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি;

(ঘ) সিটি কর্পোরেশন এলাকার জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য জাতীয় জীববৈচিত্র্য কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো বিষয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করা সমীচীন মর্মে প্রতীয়মান হইলে, তদ্‌বিষয়ে জাতীয় কমিটি সমীপে সুপারিশ প্রেরণ;

(ঙ) সিটি কর্পোরেশন এলাকার জীববৈচিত্র্যপূর্ণ এলাকাসমূহ, সময় সময়, সরেজমিন পরিদর্শন এবং জাতীয় কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনার বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ;

(চ) ওয়ার্ড জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা কমিটিসহ সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক দল বা সমিতি, যদি থাকে, উহাদের কার্যাবলী তদারক এবং, প্রয়োজনে, উহাদিগকে দিক্ নির্দেশনা প্রদান;

(ছ) সিটি কর্পোরেশনের জীববৈচিত্র্যের ক্ষতিসাধনকারী কোনো কাজ যাহাতে কেহ না করিতে পারে সেই বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখা এবং তদ্রূপ কাজ কেহ করিলে বা করার উদ্যোগ গ্রহণ করিলে অনতিবিলম্বে উহা বন্ধকরণের লক্ষ্যে যথাযথ প্রশাসনিক ও আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ; এবং

(জ) সরকার ও জাতীয় কমিটি কর্তৃক নির্দেশিত অন্যান্য কার্যাদি সম্পন্ন করা।

জেলা জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা ও তদারক কমিটি গঠন

১৬। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, প্রত্যেক জেলায় নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে ‘‘জেলা জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা ও তদারক কমিটি’’ নামে একটি কমিটি গঠিত হইবে, যথা:

(ক) জেলা প্রশাসক, যিনি উহার সভাপতিও হইবেন;

(খ) পুলিশ সুপার;

(গ) জেলার বন বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা;

(ঘ) জেলা মৎস্য কর্মকর্তা;

(ঙ) জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা;

(চ) জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা;

(ছ) উপ-পরিচালক, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়;

(জ) জেলা সমবায় কর্মকর্তা;

(ঝ) উপ-পরিচালক, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর;

(ঞ) জেলা প্রশাসক কর্তৃক মনোনীত একজন শিক্ষাবিদ বা সমাজসেবক;

(ট) জেলা প্রশাসক কর্তৃক মনোনীত কৃষিজীবী ও মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের একজন করিয়া প্রতিনিধি;

(ঠ) জেলা প্রশাসক কর্তৃক মনোনীত, পরিবেশ উন্নয়নে কার্যক্রম রহিয়াছে এইরূপ, বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) একজন প্রতিনিধি;

(ড) জেলায় কর্মরত পরিবেশ অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, যিনি উহার সদস্য-সচিবও হইবেন।

(২) জেলা কমিটি, প্রয়োজনীয় ও যথাযথ মনে করিলে, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ সংক্রান্ত কার্যক্রমে আগ্রহী যে কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার প্রতিনিধিকে উহার সদস্য হিসাবে কো-অপ্ট করিতে পারিবে।

(৩) জেলার সংসদ-সদস্যগণ জেলা কমিটির উপদেষ্টা হইবেন।

জেলা জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা ও তদারক কমিটির সভা, ইত্যাদি

১৭। (১) এই ধারার বিধানাবলী সাপেক্ষে, জেলা কমিটি উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।

(২) প্রতি বৎসর জেলা কমিটির কমপক্ষে তিনটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে, যাহা উক্ত কমিটির সভাপতি কর্তৃক নির্ধারিত স্থান ও সময়ে অনুষ্ঠিত হইবে।

(৩) জেলা কমিটির সভাপতি উহার সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন, তবে তাহার অনুপস্থিতিতে তদ্‌কর্তৃক মনোনীত উক্ত কমিটির অন্য কোনো সদস্য সভাপতিত্ব করিতে পারিবেন।

(৪) জেলা কমিটির সদস্য-সচিব উক্ত কমিটির সভাপতির পূর্বানুমতিক্রমে উহার সভা আহবান করিবেন এবং সভার কার্যবিবরণী প্রস্তুত ও সংরক্ষণ করিবেন।

(৫) জেলা কমিটি, প্রয়োজনে, কোনো বিশেষ বিষয়ে উহাকে সহায়তার জন্য কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার প্রতিনিধিকে উহার সভায় অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানাইতে পারিবে অথবা কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার মতামত গ্রহণ করিতে পারিবে।

(৬) সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের উপস্থিতিতে সভার কোরাম হইবে।

(৭) উপস্থিত সদস্যগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সভার সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।

জেলা জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা ও তদারক কমিটির দায়িত্ব ও কার্যাবলী

১৮। জেলা জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা ও তদারক কমিটির দায়িত্ব ও কার্যাবলী হইবে নিম্নরূপ, যথা:-

(ক) উপজেলা কমিটি কর্তৃক প্রস্তুতকৃত ও সংরক্ষিত উপজেলা জীববৈচিত্র্য বিষয়ক রেজিস্টারের সমন্বয়ে, জেলার জীববৈচিত্র্য বিষয়ক রেজিস্টার প্রস্তুত ও সংরক্ষণ;

(খ) জাতীয় জীববৈচিত্র্য কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকারকে সহায়তাকরণ;

(গ) জেলার জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে স্থানীয় জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি;

(ঘ) জেলার জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য জাতীয় জীববৈচিত্র্য কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো বিষয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করা সমীচীন মর্মে প্রতীয়মান হইলে, তদ্‌বিষয়ে জাতীয় কমিটি সমীপে সুপারিশ প্রেরণ;

(ঙ) জেলার জীববৈচিত্র্যপূর্ণ এলাকাসমূহ, সময় সময়, সরেজমিন পরিদর্শন এবং জাতীয় কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনার বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ;

(চ) উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা কমিটিসহ জেলাধীন জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক দল বা সমিতির, যদি থাকে, কার্যাবলী তদারক এবং, প্রয়োজনে, উহাদিগকে দিক্ নির্দেশনা প্রদান;

(ছ) জেলার জীববৈচিত্র্যের ক্ষতিসাধনকারী কোনো কাজ যাহাতে কেহ না করিতে পারে সেই বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখা এবং তদ্রূপ কাজ কেহ করিলে বা করার উদ্যোগ গ্রহণ করিলে অনতিবিলম্বে উহা বন্ধকরণের লক্ষ্যে যথাযথ প্রশাসনিক ও আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ; এবং

(জ) সরকার ও জাতীয় কমিটি কর্তৃক নির্দেশিত অন্যান্য কার্যাদি সম্পন্ন করা।

উপজেলা জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা ও তদারক কমিটি গঠন

১৯। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, প্রত্যেক উপজেলায় নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে ‘‘উপজেলা জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা ও তদারক কমিটি’’ নামে একটি কমিটি গঠিত হইবে, যথা: –

(ক) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, যিনি উহার সভাপতিও হইবেন;

(খ) সহকারী কমিশনার (ভূমি);

(গ) উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা;

(ঘ) উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা;

(ঙ) উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা;

(চ) উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা;

(ছ) রেঞ্জ কর্মকর্তা (বন), যদি থাকে;

(জ) উপজেলার আওতাধীন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ;

(ঝ) উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা;

(ঞ) উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা;

(ট) উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা;

(ঠ) উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা;

(ড) উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা;

(ঢ) উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা;

(ণ) উপজেলাধীন পৌরসভার মেয়র কর্তৃক মনোনীত একজন কাউন্সিলর;

(ত) উপজেলাধীন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ;

(থ) উপজেলার চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত একজন প্রতিনিধি;

(দ) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃক মনোনীত স্থানীয় কৃষিজীবী ও মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের একজন করিয়া প্রতিনিধি;

(ধ) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃক মনোনীত, পরিবেশ উন্নয়নে কার্যক্রম রহিয়াছে এইরূপ, বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) একজন প্রতিনিধি;

(ন) উপজেলায় কর্মরত পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা অথবা, তাহার অবর্তমানে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃক মনোনীত কোনো কর্মকর্তা, যিনি উহার সদস্য-সচিবও হইবেন।

(২) উপজেলা কমিটি, প্রয়োজনীয় ও যথাযথ মনে করিলে, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ সংক্রান্ত কার্যক্রমে আগ্রহী যে কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার প্রতিনিধিকে উহার সদস্য হিসাবে কো-অপ্ট করিতে পারিবে।

(৩) স্থানীয় সংসদ সদস্য উপজেলা কমিটির উপদেষ্টা হইবেন।

উপজেলা জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা ও তদারক কমিটির সভা, ইত্যাদি

২০। (১) এই ধারার বিধানাবলী সাপেক্ষে, উপজেলা কমিটি উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।

(২) প্রতি বৎসর উপজেলা কমিটির কমপক্ষে তিনটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে, যাহা উক্ত কমিটির সভাপতি কর্তৃক নির্ধারিত স্থান ও সময়ে অনুষ্ঠিত হইবে।

(৩) উপজেলা কমিটির সভাপতি উহার সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন, তবে তাহার অনুপস্থিতিতে তৎকর্তৃক মনোনীত উক্ত কমিটির অন্য কোনো সদস্য সভাপতিত্ব করিতে পারিবেন।

(৪) উপজেলা কমিটির সদস্য-সচিব উক্ত কমিটির সভাপতির পূর্বানুমতিক্রমে উহার সভা আহবান করিবেন এবং সভার কার্যবিবরণী প্রস্তুত ও সংরক্ষণ করিবেন।

(৫) উপজেলা কমিটি, প্রয়োজনে, কোনো বিশেষ বিষয়ে উহাকে সহায়তার জন্য কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার প্রতিনিধিকে উহার সভায় অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানাইতে পারিবে অথবা কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার মতামত গ্রহণ করিতে পারিবে।

(৬) সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের উপস্থিতিতে সভার কোরাম হইবে।

(৭) উপস্থিত সদস্যগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সভার সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।

উপজেলা জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা ও তদারক কমিটির দায়িত্ব ও কার্যাবলী

২১। উপজেলা জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা ও তদারক কমিটির দায়িত্ব ও কার্যাবলী হইবে নিম্নরূপ, যথা:-

(ক) ইউনিয়ন কমিটি ও পৌরসভা কমিটি কর্তৃক প্রস্তুতকৃত ও সংরক্ষিত ইউনিয়ন ও পৌরসভার জীববৈচিত্র্য বিষয়ক রেজিস্টারের সমন্বয়ে, উপজেলার জীববৈচিত্র্য বিষয়ক রেজিস্টার প্রস্তুত ও সংরক্ষণ;

(খ) জাতীয় জীববৈচিত্র্য কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকারকে সহায়তাকরণ;

(গ) উপজেলার জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে স্থানীয় জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি;

(ঘ) উপজেলার জীববৈচিত্র্যপূর্ণ এলাকাসমূহ, সময় সময়, সরেজমিন পরিদর্শন এবং জাতীয় কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনার বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ;

(ঙ) উপজেলার জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য জাতীয় জীববৈচিত্র্য কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করা সমীচীন মর্মে প্রতীয়মান হইলে, তদ্‌বিষয়ে জেলা কমিটি সমীপে সুপারিশ প্রেরণ;

(চ) জাতীয় জীববৈচিত্র্য কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনার উপকারিতা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণকে অবহতিকরণ এবং উক্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়তাকরণে তাহাদিগকে উদ্বুদ্ধকরণ;

(ছ) পৌরসভা ও ইউনিয়ন জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা কমিটিসহ উপজেলাধীন জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক অন্যান্য দল বা সমিতি, যদি থাকে, উহাদের কার্যাবলী তদারক ও পর্যবেক্ষণ এবং, প্রয়োজনে, উহাদিগকে দিক্ নির্দেশনা প্রদান;

(জ) উপজেলায় জীববৈচিত্র্যের ক্ষতিসাধনকারী কোনো কাজ যাহাতে কেহ না করিতে পারে সেই বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখা এবং তদ্রূপ কাজ কেহ করিলে বা করার উদ্যোগ গ্রহণ করিলে অবিলম্বে উহা বন্ধকরণের লক্ষ্যে যথাযথ প্রশাসনিক ও আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ; এবং

(ঝ) সরকার, জাতীয় কমিটি ও জেলা কমিটি কর্তৃক সময় সময়, নির্দেশিত অন্যান্য কার্যাদি সম্পন্ন করণ।

পৌরসভা জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা ও তদারক কমিটি গঠন

২২। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, প্রত্যেক পৌরসভায় নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে ‘‘পৌরসভা জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা ও তদারক কমিটি’’ নামে একটি কমিটি গঠিত হইবে, যথা: –

(ক) পৌরসভার মেয়র, যিনি উহার সভাপতিও হইবেন;

(খ) উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা;

(গ) উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা;

(ঘ) রেঞ্জ কর্মকর্তা (বন) এর একজন প্রতিনিধি, যদি থাকে;

(ঙ) পৌরসভার আওতাধীন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার একজন প্রতিনিধি;

(চ) উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা;

(ছ) উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা;

(জ) উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা;

(ঝ) উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা;

(ঞ) পৌরসভার কাউন্সিলরগণ;

(ট) পৌরসভার মেয়র কর্তৃক মনোনীত একজন ইমাম ও একজন পুরোহিত বা অন্য কোনো ধর্মীয় নেতা;

(ঠ) উপজেলা চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত একজন স্থানীয় সমাজসেবক;

(ড) পৌরসভার মেয়র কর্তৃক মনোনীত, পরিবেশ উন্নয়নে কার্যক্রম রহিয়াছে এইরূপ, বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) একজন প্রতিনিধি;

(ঢ) পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা সচিব, যিনি উহার সদস্য-সচিবও হইবেন।

(২) পৌরসভা কমিটি, প্রয়োজনীয় ও যথাযথ মনে করিলে, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ সংক্রান্ত কার্যক্রমে আগ্রহী যে কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার প্রতিনিধিকে উহার সদস্য হিসাবে কো-অপ্ট করিতে পারিবে।

(৩) স্থানীয় সংসদ সদস্য, পৌরসভা কমিটির উপদেষ্টা হইবেন।

পৌরসভা জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা ও তদারক কমিটির সভা, ইত্যাদি

২৩। (১) এই ধারার বিধানাবলী সাপেক্ষে, পৌরসভা কমিটি উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।

(২) প্রতি বৎসর পৌরসভা কমিটির কমপক্ষে তিনটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে, যাহা উক্ত কমিটির সভাপতি কর্তৃক নির্ধারিত স্থান ও সময়ে অনুষ্ঠিত হইবে।

(৩) পৌরসভা কমিটির সভাপতি উহার সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন, তবে তাহার অনুপস্থিতিতে তদ্‌কর্তৃক মনোনীত উক্ত কমিটির অন্য কোনো সদস্য সভায় সভাপতিত্ব করিতে পারিবেন।

(৪) পৌরসভা কমিটির সদস্য-সচিব উক্ত কমিটির সভাপতির পূর্বানুমোদনক্রমে উহার সভা আহবান করিবেন এবং সভার কার্যবিবরণী প্রস্তুত ও সংরক্ষণ করিবেন।

(৫) পৌরসভা কমিটি, প্রয়োজনে, কোনো বিশেষ বিষয়ে উহাকে সহায়তার জন্য, কোনো ব্যক্তিকে উহার সভায় অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানাইতে পারিবে অথবা কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার মতামত গ্রহণ করিতে পারিবে।

(৬) সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের উপস্থিতিতে সভার কোরাম হইবে।

(৭) উপস্থিত সদস্যগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সভার সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।

পৌরসভা জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা ও তদারক কমিটির কার্যাবলী

২৪। পৌরসভা জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা ও তদারক কমিটির দায়িত্ব ও কার্যাবলী হইবে নিম্নরূপ, যথা:-

(ক) পৌর এলাকার জীববৈচিত্র্য বিষয়ক রেজিস্টার প্রস্তুত ও সংরক্ষণ;

(খ) নিম্নরূপ বিষয়ে স্থানীয় জনসাধারণকে উৎসাহ প্রদান, যথা:-

(অ) জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উহার টেকসই ব্যবহার;

(আ) প্রতিবেশ ব্যবস্থা, কালটিভার ও ল্যান্ড রেইস সংরক্ষণ; এবং

(ই) প্রাণী, দেশিয় মৎস্য প্রজাতি এবং অণুজীবের ডমিস্টিকেটেড স্টক ও ব্রীড সংরক্ষণ; এবং

(ঈ) জীববৈচিত্র্য সংক্রান্ত জ্ঞান ডকুমেন্টেশন;

(গ) পৌর এলাকার জীববৈচিত্র্য এবং পরিবেশের অবক্ষয়ের পরিণাম সম্পর্কে এলাকাবাসীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি;

(ঘ) জাতীয় জীববৈচিত্র্য কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন;

(ঙ) জীববৈচিত্র্য সংশ্লিষ্ট সংকট উত্তরণে জাতীয় জীববৈচিত্র্য কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনার উপকারিতা সম্পর্কে এলাকাবাসীদের অবহিতকরণ ও উক্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়তাকরণে তাহাদিগকে উদ্বুদ্ধকরণ;

(চ) জাতীয় জীববৈচিত্র্য কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা ছাড়াও সংশ্লিষ্ট এলাকার জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য অন্য কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করা সমীচীন মর্মে প্রতীয়মান হইলে সেই বিষয়ে উপজেলা কমিটি সমীপে সুপারিশ প্রেরণ;

(ছ) জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে পৌর এলাকায় সাধারণভাবে করণীয় ও করণীয় নয় এইরূপ বিষয়ে গণসচেতনতা সৃষ্টি;

(জ) পৌরসভাধীন জীববৈচিত্র্যপূর্ণ এলাকাসমূহ, সময় সময়, সরেজমিন পরিদর্শন এবং জাতীয় জীববৈচিত্র্য কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ;

(ঝ) জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের কারণে পৌর এলাকায় কোনো কর্ম নিষিদ্ধকরণের ফলে জীবিকার্জনের পথ রুদ্ধ হইয়া যাওয়া এলাকাবাসীর জীবিকার্জনের বিকল্প উপায় উদ্ভাবন;

(ঞ) ধারা ২৮ এর অধীন গঠিত দল বা সমিতির, যদি থাকে, কার্যাবলী তদারক এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে দিক্-নির্দেশনা প্রদান;

(ট) পৌরসভাভুক্ত এলাকায় পরিবেশের ক্ষতিসাধনকারী কোনো কাজ যাহাতে কেহ না করিতে পারে সেই ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখা এবং তদ্রূপ কাজ কেহ করিলে বা করার উদ্যোগ গ্রহণ করিলে অবিলম্বে উহা বন্ধকরণের লক্ষ্যে যথাযথ প্রশাসনিক ও আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ; এবং

(ঠ) সরকার, জাতীয় কমিটি, জেলা কমিটি ও উপজেলা কমিটি কর্তৃক নির্দেশিত অন্যান্য কার্যাদি।

ইউনিয়ন জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন

২৫। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, প্রত্যেক ইউনিয়নে নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে ‘‘ইউনিয়ন জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা কমিটি’’ নামে একটি কমিটি গঠিত হইবে, যথা:-

(ক) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, যিনি উহার সভাপতিও হইবেন;

(খ) উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা;

(গ) ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা;

(ঘ) উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা কর্তৃক মনোনীত একজন ইউনিয়ন আনসার ও ভিডিপি দলনেতা;

(ঙ) রেঞ্জ কর্মকর্তা (বন) এর একজন প্রতিনিধি, যদি থাকে;

(চ) ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যগণ;

(ছ) উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কর্তৃক মনোনীত একজন ভেটেরিনারী ফিল্ড এসিসটেন্ট, যদি থাকে;

(জ) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত, পরিবেশ উন্নয়ন কার্যক্রমে আগ্রহী বিদ্যালয়, মাদ্রাসা বা মহাবিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক;

(ঝ) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত একজন ইমাম ও একজন পুরোহিত বা অন্য কোনো ধর্মীয় নেতা;

(ঞ) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত স্থানীয় কৃষিজীবী ও মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের একজন করিয়া প্রতিনিধি;

(ট) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত, পরিবেশ উন্নয়নে কার্যক্রম রহিয়াছে এইরূপ, বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) একজন প্রতিনিধি;

(ঠ) ইউনিয়ন পরিষদের সচিব, যিনি উহার সদস্য-সচিবও হইবেন।

(২) ইউনিয়ন কমিটি, প্রয়োজনীয় ও যথাযথ মনে করিলে, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ সংক্রান্ত কার্যক্রমে আগ্রহী যে কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার প্রতিনিধিকে উহার সদস্য হিসাবে কো-অপ্ট করিতে পারিবে।

ইউনিয়ন জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা, ইত্যাদি

২৬। (১) এই ধারার বিধানাবলী সাপেক্ষে, ইউনিয়ন কমিটি উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।

(২) প্রতি বৎসর ইউনিয়ন কমিটির কমপক্ষে তিনটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে, যাহা উক্ত কমিটির সভাপতি কর্তৃক নির্ধারিত স্থান ও সময়ে অনুষ্ঠিত হইবে।

(৩) ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি উহার সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন, তবে তাহার অনুপস্থিতিতে তদ্‌কর্তৃক মনোনীত উক্ত কমিটির অন্য কোনো সদস্য সভায় সভাপতিত্ব করিতে পারিবেন।

(৪) ইউনিয়ন কমিটির সদস্য-সচিব উক্ত কমিটির সভাপতির পূর্বানুমোদনক্রমে উহার সভা আহবান করিবেন এবং সভার কার্যবিবরণী প্রস্তুত ও সংরক্ষণ করিবেন।

(৫) ইউনিয়ন কমিটি, প্রয়োজনে, কোনো বিশেষ বিষয়ে উহাকে সহায়তার জন্য, কোনো ব্যক্তিকে উহার সভায় অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানাইতে পারিবে অথবা কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার মতামত গ্রহণ করিতে পারিবে।

(৬) সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের উপস্থিতিতে সভার কোরাম হইবে।

(৭) উপস্থিত সদস্যগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সভার সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।

ইউনিয়ন জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা কমিটির কার্যাবলী

২৭। ইউনিয়ন জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা কমিটির দায়িত্ব ও কার্যাবলী হইবে নিম্নরূপ, যথা: –

(ক) ইউনিয়নের জীববৈচিত্র্য বিষয়ক রেজিস্টার প্রস্তুত ও সংরক্ষণ;

(খ) নিম্নরূপ বিষয়ে স্থানীয় জনসাধারণকে উৎসাহ প্রদান, যথা:

(অ) জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উহার টেকসই ব্যবহার;

(আ) প্রতিবেশ ব্যবস্থা, কালটিভার ও ল্যান্ড রেইস সংরক্ষণ;

(ই) প্রাণী, দেশিয় মৎস্য প্রজাতি এবং অণুজীবের ডমিস্টিকেটেড স্টক ও ব্রীড সংরক্ষণ; এবং

(ঈ) জীববৈচিত্র্য সংক্রান্ত জ্ঞান ডকুমেন্টেশন;

(গ) ইউনিয়নের জীববৈচিত্র্য এবং পরিবেশের অবক্ষয়ের পরিণাম সম্পর্কে এলাকাবাসীর মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি;

(ঘ) জাতীয় জীববৈচিত্র্য কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও উহার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ;

(ঙ) জীববৈচিত্র্য সংশ্লিষ্ট সংকট উত্তরণে জাতীয় জীববৈচিত্র্য কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনার উপকারিতা সম্পর্কে এলাকাবাসীদের অবহতিকরণ ও উক্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সহায়তাকরণে তাহাদের উদ্বুদ্ধকরণ;

(চ) জাতীয় জীববৈচিত্র্য কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা ছাড়াও সংশ্লিষ্ট এলাকার জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য অন্য কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করা সমীচীন মর্মে প্রতীয়মান হইলে সেই বিষয়ে উপজেলা কমিটি সমীপে সুপারিশ প্রেরণ;

(ছ) জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে ইউনিয়নে সাধারণভাবে করণীয় ও করণীয় নয় এইরূপ বিষয়ে গণসচেতনতা সৃষ্টি;

(জ) ইউনিয়নের এলাকাধীন জীববৈচিত্র্যসমৃদ্ধ এলাকাসমূহ, সময় সময়, সরেজমিন পরিদর্শন;

(ঝ) জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের কারণে ইউনিয়নে কোনো কর্ম নিষিদ্ধকরণের ফলে জীবিকার্জনের পথ রুদ্ধ হইয়া যাওয়া এলাকাবাসীর জীবিকার্জনের বিকল্প উপায় উদ্ভাবন;

(ঞ) ধারা ২৮ এর অধীন গঠিত দল বা সমিতির, যদি থাকে, কার্যাবলী পর্যবেক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে দিক্-নির্দেশনা প্রদান;

(ট) ইউনিয়নভুক্ত এলাকায় পরিবেশের ক্ষতিসাধনকারী কোনো কাজ যাহাতে কেহ না করিতে পারে সেই ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখা এবং তদ্রূপ কাজ কেহ করিলে বা করার উদ্যোগ গ্রহণ করিলে অবিলম্বে উহা বন্ধকরণের লক্ষ্যে যথাযথ প্রশাসনিক ও আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ; এবং

(ঠ) সরকার, জাতীয় কমিটি, জেলা কমিটি ও উপজেলা কমিটি কর্তৃক নির্দেশিত অন্যান্য কার্যাদি।

চতুর্থ অধ্যায়
জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা দল, সমিতি ও উপ-কমিটি গঠন, ইত্যাদি
তৃণমূল পর্যায়ে জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা দল বা সমিতি গঠন, ইত্যাদি

২৮। (১) সিটি কর্পোরেশন কমিটি, পৌরসভা কমিটি ও ইউনিয়ন কমিটি তৃণমূল পর্যায়ে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে, প্রয়োজনীয়তা ও বাস্তবতার নিরিখে, প্রতিবেশের উন্নয়নে সক্ষম ও আগ্রহী ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে গ্রাম, অঞ্চল, পেশা বা সম্প্রদায়ভিত্তিক জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা দল বা সমিতি গঠন করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন গঠিত দল বা সমিতির কার্যক্রম সমবায় সমিতি হিসাবে পরিচালনা করা যাইবে এবং তজ্জন্য উহাকে, সমবায় সমিতি আইন, ২০০১ (২০০১ সনের ৪৭ নং আইন) এর বিধান অনুযায়ী সমবায় সমিতি হিসাবে নিবন্ধিত হইতে হইবে।

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন গঠিত দল বা সমিতির সদস্যদের জীবন ও জীবিকার মানোন্নয়নে তাহাদের অনুকূলে তহবিল হইতে ক্ষুদ্র মূলধন অনুদান হিসাবে বরাদ্দ করা যাইবে এবং উক্ত অনুদানের অর্থ কিরূপে ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনা করা হইবে তদ্‌বিষয়ে জাতীয় কমিটি, সময় সময়, প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করিবে।

(৪) উপ-ধারা (১) এর অধীন গঠিত সমিতি উহার সদস্যদের অর্থনৈতিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নের জন্য প্রকল্প বা কর্মসূচি গ্রহণ করিতে পারিবে এবং উক্ত প্রকল্প বা কর্মসূচি হইতে বৎসরান্তে অর্জিত মুনাফার অংশবিশেষ বা সম্পূর্ণ পুনরায় বিনিয়োগ করিতে অথবা নিজেদের মধ্যে বন্টন করিতে পারিবে।

(৫) উপ-ধারা (১) এর অধীন গঠিত দল বা সমিতির গঠন পদ্ধতি ও আনুষঙ্গিক বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

(৬) উপ-ধারা (১) এর অধীন গঠিত দল বা সমিতির কার্যাবলী হইবে নিম্নরূপ, যথা: –

(ক) সংশ্লিষ্ট গ্রাম বা অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য বিষয়ক রেজিস্টার প্রস্তুত ও সংরক্ষণ;

(খ) সংশ্লিষ্ট গ্রাম বা অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের অবক্ষয়ের পরিণাম সম্পর্কে এলাকাবাসীর মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি;

(গ) জীববৈচিত্র্য সংশ্লিষ্ট সংকট উত্তরণে জাতীয় জীববৈচিত্র্য কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনার উপকারিতা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট গ্রাম বা অঞ্চলের জনগণকে অবহতিকরণ এবং উক্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সহায়তাকরণে উদ্বুদ্ধকরণ;

(ঘ) জাতীয় জীববৈচিত্র্য কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা ছাড়াও সংশ্লিষ্ট এলাকার জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য অন্য কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করা সমীচীন মর্মে প্রতীয়মান হইলে সেই বিষয়ে, ক্ষেত্রমত, সিটি কর্পোরেশন কমিটি বা পৌরসভা কমিটি বা ইউনিয়ন কমিটি সমীপে সুপারিশ প্রেরণ;

(ঙ) জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সংশ্লিষ্ট গ্রাম বা অঞ্চলের জনগণের সাধারণভাবে করণীয় ও করণীয় নয় এইরূপ বিষয়ে গণসচেতনতা সৃষ্টি;

(চ) সংশ্লিষ্ট এলাকা, সময় সময়, সরেজমিন পরিদর্শন এবং জাতীয় জীববৈচিত্র্য কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ;

(ছ) জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সংশ্লিষ্ট গ্রাম বা অঞ্চলে কোনো কর্ম নিষিদ্ধকরণের ফলে জীবিকার্জনের পথ রুদ্ধ হইয়া যাওয়া এলাকাবাসীর জীবিকার্জনের বিকল্প উপায় উদ্ভাবন;

(জ) এলাকায় পরিবেশের ক্ষতিসাধনকারী কোনো কাজ যাহাতে কেহ না করিতে পারে সেই ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখা এবং তদ্রুপ কাজ কেহ করিলে বা করার উদ্যোগ গ্রহণ করিলে অবিলম্বে উহা বন্ধকরণের লক্ষ্যে যথাযথ প্রশাসনিক ও আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ; এবং

(ঝ) সরকার, জাতীয় কমিটি, সিটি কর্পোরেশন কমিটি, জেলা কমিটি, উপজেলা কমিটি ও পৌরসভা কমিটি বা ইউনিয়ন কমিটি কর্তৃক নির্দেশিত অন্যান্য কার্যাদি।

উপ-কমিটি গঠন, ইত্যাদি
২৯। সিটি কর্পোরেশন কমিটি, জেলা কমিটি, উপজেলা কমিটি, ইউনিয়ন কমিটি ও পৌরসভা কমিটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ, বাস্তবায়ন ও আনুষঙ্গিক বিষয়ে উহাকে সহায়তা প্রদানের জন্য উপ-কমিটি গঠন ও কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।
পঞ্চম অধ্যায়
কৌলি বা জীবসম্পদের ন্যায্য হিস্যা বণ্টন
কৌলিসম্পদ বা জীবসম্পদ হইতে প্রাপ্ত সুফলের ন্যায্য হিস্যা বণ্টন

৩০। (১) জাতীয় কমিটি, এই আইনের অধীন কোনো আবেদন অনুমোদনের ক্ষেত্রে, নিম্নবর্ণিত সকল বা যে কোনো পদ্ধতি অনুসরণের মাধ্যমে কৌলিসম্পদ বা জীবসম্পদ হইতে প্রাপ্ত সুফলের ন্যায্য হিস্যা বন্টন নিশ্চিত করিবে, যথা:-

(ক) আবেদনকারী কর্তৃক জীবসম্পদ, কৌলিসম্পদ বা উহাদের উপজাত দ্রব্যাদি অথবা তদ্‌সংশ্লিষ্ট উদ্ভাবন এবং উক্তরূপ সম্পদ ব্যবহার বিষয়ক জ্ঞান অধিকারে লইবার বা ব্যবহারের বিষয়ে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও সম্পদের আইনসঙ্গত দাবিদারগণকে প্রাক-অবহিতকরণের মাধ্যমে তাহাদের সম্মত শর্তাধীনে;

(খ) দাবিদার সুনির্দিষ্ট থাকিলে তাহার অনুকূলে মেধাসম্পদের মালিকানা মঞ্জুর করা, অন্যথায় যৌথভাবে মেধাসম্পদের মালিকানা মঞ্জুর;

(গ) স্থানীয় সম্প্রদায় বা জনগোষ্ঠীর মধ্যকার সুফলভোগীদের অনুকূলে জীববৈচিত্র্যের উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রযুক্তির হস্তান্তর নিশ্চিতকরণ;

(ঘ) উৎপাদন, গবেষণা বা প্রকল্পের বিষয় যেন সুফলের দাবিদারগণের জীবনমান উন্নয়নে সহায়ক হয় তাহা নিশ্চিতকরণ;

(ঙ) জীবসম্পদের উন্নয়ন, জীব-সমীক্ষা বা জীব-ব্যবহার বিষয়ক গবেষণা বা তদ্‌সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে বাংলাদেশের বিজ্ঞানী বা তাহাদের সংগঠন এবং সুফলের দাবিদার ও স্থানীয় সম্প্রদায়কে সম্পৃক্তকরণ; এবং

(চ) জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণকারী, জ্ঞানধারণকারী এবং উদ্ভাবনকারীদেরকে, জাতীয় কমিটির বিবেচনা অনুযায়ী, আর্থিক ক্ষতিপূরণ বা অন্য কোনো সুবিধা প্রদান।

(২) সুফলের ন্যায্য হিস্যা বণ্টনের ক্ষেত্রে জাতীয় কমিটি আবেদনকারী ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে কোনো অর্থ আদায়ের জন্য আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।

(৩) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, জাতীয় কমিটির সহিত পরামর্শক্রমে, প্রয়োজনে, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।

ষষ্ঠ অধ্যায়
জীববৈচিত্র্য বিষয়ক কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, ঐতিহ্যগত স্থান ঘোষণা ও জীববৈচিত্র্যের উপর বিরূপ প্রভাব সৃষ্টিকারী কার্যক্রম নিষিদ্ধকরণ, ইত্যাদি
জীববৈচিত্র্য বিষয়ক জাতীয় কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, ইত্যাদি

৩১। (১) জীবসম্পদের সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও টেকসই ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে সরকার জাতীয় জীববৈচিত্র্য কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন এবং, সময় সময়, হালনাগাদ করিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রণীত জাতীয় জীববৈচিত্র্য কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনায় অন্যান্যের মধ্যে নিম্নবর্ণিত বিষয়াদি অন্তর্ভুক্ত থাকিবে, যথা:-

(ক) জীববৈচিত্র্য সম্পদে সমৃদ্ধ অঞ্চল চিহ্নিতকরণ ও পর্যবেক্ষণ;

(খ) ইন-সিটু (In-Situ) এবং এক্স-সিটু (Ex-Situ) সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ সংক্রান্ত নির্দেশনা ও নিয়মাবলী; এবং

(গ) জীববৈচিত্র্য বিষয়ে গবেষণামূলক ও শিক্ষা-সচেতনতামূলক কার্যক্রম।

(৩) জীববৈচিত্র্য সম্পদে সমৃদ্ধ কোনো এলাকায় উক্ত সম্পদের অতিরিক্ত আহরণ, অপব্যবহার বা অবহেলার ফলে উক্ত সম্পদ অবক্ষয় বা অবলুপ্তির দিকে যাইতেছে মর্মে সরকারের নিকট যুক্তিসঙ্গত ও সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ থাকিলে, সরকার উক্তরূপ অবক্ষয় বা অবলুপ্তি রোধ করিবার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সংস্থাকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ প্রদান করিবে।

(৪) জীবসম্পদের সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও টেকসই ব্যবহারের লক্ষ্যে সরকার উহার পরিকল্পনা, কার্যক্রম ও নীতির মধ্যে সমন্বয় সাধনের উদ্যোগ গ্রহণ করিবে।

(৫) কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে কোনো এলাকার জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হইবার সম্ভাবনা থাকিলে উক্ত ক্ষতি হ্রাস বা পরিহারের লক্ষ্যে প্রকল্প গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষকে উক্ত এলাকার জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করিয়া পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ বা আগাম অনুসন্ধান পরিচালনা করিতে হইবে।

(৬) সরকার স্থানীয় সম্প্রদায়ের জীববৈচিত্র্য বিষয়ক প্রচলিত জ্ঞানের স্বীকৃতি প্রদান ও সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণ করিবে।

ব্যাখ্যা।- এই ধারায়-

(ক) ‘‘ইন-সিটু (In-Situ) সংরক্ষণ’’ অর্থ বাস্তুসংস্থান ও প্রাকৃতিক আবাসভূমির সংরক্ষণ এবং প্রাকৃতিক পরিবেশে বসবাসকারী প্রজাতির রক্ষণাবেক্ষণ, যাহাতে উক্ত প্রজাতি টিকিয়া থাকিবার সক্ষমতা অর্জন করিতে পারে এবং গৃহপালিত বা আবাদকৃত প্রজাতির ক্ষেত্রে যে পারিপার্শ্বিক পরিবেশে সংশ্লিষ্ট উদ্ভিদ বা প্রাণী উহার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য অর্জন করিয়াছে, উহাকে সেই পরিবেশের মধ্যে রক্ষণাবেক্ষণ করা বা ফিরাইয়া আনা; এবং

(খ) ‘‘এক্স-সিটু (Ex-Situ) সংরক্ষণ’’ অর্থ জীববৈচিত্র্য সম্পদ বা উহার অংশবিশেষকে স্বাভাবিক বা প্রাকৃতিক আবাসস্থল হইতে অন্যত্র সংরক্ষণ করা।

জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ ঐতিহ্যগত স্থান ঘোষণা, ইত্যাদি

৩২। (১) সরকার কোনো স্থান বা এলাকার জীববৈচিত্রের ঐতিহ্যগত গুরুত্ব বিবেচনা করিয়া উক্ত স্থান বা এলাকাকে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ ঐতিহ্যগত স্থান হিসাবে ঘোষণা করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন ঘোষণার পূর্বে স্থানীয় জনগণ ও কর্তৃপক্ষের সহিত আলোচনা এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সহিত সমন্বয় করিতে হইবে।

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত কোনো ঘোষণার কারণে কোনো স্থান বা এলাকার কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হইলে, তাহাদিগকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান বা পুনর্বাসনের লক্ষ্যে, সরকার বিশেষ প্রকল্প (project) বা পরিকল্প (scheme) গ্রহণ করিতে পারিবে।

(৪) সরকার জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ ঐতিহ্যগত স্থানের ব্যবস্থাপনা, সংরক্ষণ ও উন্নয়নে নির্দেশিকা প্রণয়ন করিতে পারিবে।

বিপন্ন প্রাণী বা জীবসম্পদের উপর বিরূপ প্রভাব সৃষ্টিকারী কার্যক্রম প্রহণ নিষিদ্ধকরণ, ইত্যাদি

৩৩। (১) বিদ্যমান অন্য কোনো আইনের বিধানকে ক্ষুণ্ণ না করিয়া, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, দেশের কোনো জীবসম্পদ বা উহাদের কোনো প্রজাতিকে বিপন্ন প্রজাতি হিসাবে ঘোষণা করিতে পারিবে।

(২) সরকার উপ-ধারা (১) এর অধীন ঘোষিত বিপন্ন প্রজাতির আহরণ বন্ধ ও উহাদের যথাযথ সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করিতে পারিবে।

(৩) কোনো ব্যক্তি এইরূপ কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করিতে পারিবেন না, যাহা –

(ক) বিপন্ন প্রজাতির উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে বা ফেলিতে পারে;

(খ) সঙ্কটাপন্ন বা বিপন্ন বাস্তুসংস্থানিক সম্প্রদায়ের (ecological community) প্রতিবেশগত বৈশিষ্ট্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে বা ফেলিতে পারে; অথবা

(গ) রামসার কনভেনশন অনুযায়ী জলাভূমি ঘোষিত এলাকার পরিবেশ ও প্রতিবেশগত বৈশিষ্ট্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে বা ফেলিতে পারে।

(৪) উপ-ধারা (৩) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার বিধি দ্বারা বিরূপ প্রভাব সৃষ্টিকারী কার্যের তালিকা নির্ধারণ করিবে।

ব্যাখ্যা।- এই ধারায় –

(ক) ‘‘প্রতিবেশগত বৈশিষ্ট্য’’ অর্থ রামসার কনভেনশনে উল্লিখিত ecological character; এবং

(খ) ‘‘রামসার কনভেনশন’’ অর্থ ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে ইরানের রামসারে গৃহীত Convention on Wetlands of International Importance, especially as Waterfowl Habitat ।

জীববৈচিত্র্য সম্পর্কিত সম্পদ সংরক্ষণে দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব প্রদান

৩৪। (১) সরকার, জাতীয় কমিটির সহিত পরামর্শক্রমে, বিভিন্ন শ্রেণির জীববৈচিত্র্য সম্পদ সংরক্ষণকল্পে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উহাতে নির্ধারিত শর্ত সাপেক্ষে, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব প্রদান করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানসমূহ জীববৈচিত্র্য সম্পদ সংগ্রহ এবং নমুনা প্রজাতির নিরাপদ হেফাজতে সংরক্ষণ করিবে।

(৩) কোনো জীবসম্পদের নূতন কোনো প্রজাতি আবিষ্কৃত হইলে সংশ্লিষ্ট আবিষ্কারক উপ-ধারা (১) এর অধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানকে এবং সংশ্লিষ্ট কমিটিকে উহা অবহিত করিবেন এবং আবিষ্কৃত প্রজাতির একটি নমুনা সংরক্ষণের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ করিবেন।

সুনির্দিষ্ট জীবসম্পদকে এই আইনের আওতা হইতে অব্যাহতি প্রদান
৩৫। এই আইনের অন্যান্য ধারায় ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার, জাতীয় কমিটির সহিত পরামর্শক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, স্বাভাবিকভাবে নিত্য-প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য হিসাবে বিপণন করা হইয়া থাকে এইরূপ কোনো জীবসম্পদকে এই আইনের আওতা হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে।
সপ্তম অধ্যায়
তহবিল গঠন, হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষা এবং বার্ষিক প্রতিবেদন
জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ তহবিল গঠন, ইত্যাদি

৩৬। (১) সরকার জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং ইহার টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে ‘‘জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ তহবিল’’ নামে একটি তহবিল গঠন করিবে।

(২) জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ তহবিলে নিম্নবর্ণিত উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ জমা হইবে, যথা:-

(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;

(খ) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে অন্য কোনো বৈধ উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ ।

(৩) তহবিলের অর্থ জাতীয় কমিটির নামে কোনো রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকে জমা রাখিতে হইবে এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উহা পরিচালিত হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত, সরকার কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ বা নির্দেশনা অনুযায়ী তহবিল পরিচালনা করা যাইবে।

(৪) তহবিলের অর্থ নিম্নবর্ণিত উদ্দেশ্যে ব্যয় করা যাইবে, যথা: –

(ক) জীববৈচিত্র্য সম্পদে সমৃদ্ধ ঐতিহ্যগত স্থানের ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ;

(খ) জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ ঐতিহ্যগত স্থান ঘোষণার কারণে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে ক্ষতিপূরণ প্রদান বা পুনর্বাসন;

(গ) সরকারের অনুমোদনক্রমে, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় অন্যান্য ব্যয় নির্বাহ।

(৫) জাতীয় কমিটি, জীববৈচিত্র্য বিষয়ক কমিটিসমূহের চাহিদার আলোকে, সংশ্লিষ্ট কমিটিকে তহবিল হইতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করিতে পারিবে।

(৬) জাতীয় কমিটি, ক্ষেত্রমত, সিটি কর্পোরেশন কমিটি বা পৌরসভা কমিটি বা ইউনিয়ন কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, ধারা ২৮ এর অধীন গঠিত, দল বা সমিতিকে তহবিল হইতে ক্ষুদ্র মুলধন অনুদান হিসাবে প্রদান করিতে পারিবে।

হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষা

৩৭। (১) জাতীয় কমিটি যথাযথভাবে তহবিলের হিসাব রক্ষণ এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে।

(২) বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর ‘‘মহা হিসাব-নিরীক্ষক’’ নামে অভিহিত, প্রতি বৎসর তহবিলের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা রিপোর্টের একটি করিয়া অনুলিপি সরকার ও কমিটির নিকট পেশ করিবেন।

(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত নিরীক্ষা ছাড়াও Bangladesh Chartered Accountants Order, 1973 (P.O. No. 2 of 1973) এর Article 2(1)(b)-তে সংজ্ঞায়িত ‘‘চার্টার্ড একাউন্টেন্ট’’ দ্বারা তহবিলের হিসাব নিরীক্ষা করা যাইবে এবং এতদুদ্দেশ্যে কমিটি এক বা একাধিক চার্টার্ড একাউন্টেন্ট নিয়োগ করিতে পারিবে।

(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন নিয়োগকৃত চার্টার্ড একাউন্টেন্ট সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পারিতোষিক প্রাপ্য হইবেন।

(৫) উপ-ধারা (২) বা (৩) এর বিধান অনুসারে হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহা হিসাব-নিরীক্ষক কিংবা তদ্‌কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি অথবা, ক্ষেত্রমত, চার্টার্ড একাউন্টেন্ট, কমিটির সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ, নগদ বা ব্যাংকে রক্ষিত অর্থ, জামানত, ভান্ডার এবং অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং কমিটির যে কোনো সদস্য বা এতদ্‌সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন।

বার্ষিক প্রতিবেদন
৩৮। জাতীয় কমিটি, প্রতি বৎসর ডিসেম্বর মাসের মধ্যে, পূর্ববর্তী অর্থ-বৎসরে উক্ত কমিটি কর্তৃক সম্পাদিত কার্যক্রমের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ সম্বলিত বার্ষিক প্রতিবেদন প্রস্তুত করিবে এবং উহার একটি কপি সরকারের নিকট দাখিল করিবে।
অষ্টম অধ্যায়
অপরাধ, তদন্ত, বিচার ও দণ্ড
পূর্বানুমোদন ব্যতীত জীববৈচিত্র্য সম্পর্কিত কার্যক্রম গ্রহণ ও গবেষণালব্ধ ফলাফল হস্তান্তরের দণ্ড
৩৯। যদি ধারা ৪ এ উল্লিখিত কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা, জাতীয় কমিটির পূর্বানুমোদন ব্যতীত, বাংলাদেশে পাওয়া যায় এমন কোনো জীববৈচিত্র্য বা জীবসম্পদ বা তদ্‌বিষয়ক দেশিয় জ্ঞান সংগ্রহ করেন বা অধিকারে নেন অথবা উহাদের বাণিজ্যিক ব্যবহার, জীব-সমীক্ষা বা জীব-পরীক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন, উহাদের আহরণ কার্যক্রমের সহিত যুক্ত হন অথবা বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য বা জীবসম্পদ হইতে গবেষণালব্ধ ফলাফল হস্তান্তর বা প্রদান করেন, তাহা হইলে এই আইনের অধীন উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন; তবে, জীববৈচিত্র্যের উপর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১০ (দশ) লক্ষ টাকার অধিক হইলে অর্থদণ্ডের পরিমাণ সে মোতাবেক বর্ধিত হইবে।
অনুমোদন ব্যতীত জীববৈচিত্র্য বিষয়ক মেধাস্বত্বের অধিকারের জন্য আবেদনের দণ্ড
৪০। যদি কোনো ব্যক্তি, জাতীয় কমিটির পূর্বানুমোদন ব্যতীত, বাংলাদেশের জীবসম্পদ ব্যবহারের মাধ্যমে উদ্ভাবিত কোনো কিছুর মেধাস্বত্ব (Intelectual Property) অধিকারের জন্য বাংলাদেশ বা বাংলাদেশের বাহিরে আবেদন করেন, তাহা হইলে এই আইনের অধীন তাহার উক্তরূপ কর্ম হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
বিপন্ন প্রাণী বা জীবসম্পদের উপর বিরূপ প্রভাব সৃষ্টিকারী কার্যক্রম গ্রহণের দণ্ড

৪১। যদি কোনো ব্যক্তি এইরূপ কোন কার্যক্রম গ্রহণ করেন, যাহা-

(ক) বিপন্ন প্রজাতির উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে বা ফেলিতে পারে;

(খ) সঙ্কটাপন্ন বা বিপন্ন বাস্তুসংস্থানিক সম্প্রদায়ের (ecological community) প্রতিবেশগত বৈশিষ্ট্যসমূহের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে বা ফেলিতে পারে; অথবা

(গ) রামসার কনভেনশন অনুযায়ী জলাভূমি ঘোষিত এলাকার পরিবেশ ও প্রতিবেশগত বৈশিষ্ট্যসমূহের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে বা ফেলিতে পারে,

তাহা হইলে এই আইনের অধীন তাহার উক্তরূপ কর্ম হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

সরকার বা কোনো কমিটি কর্তৃক প্রদত্ত কোনো নির্দেশনা বা আদেশ লঙ্ঘন বা অমান্য করিবার দণ্ড
৪২। যদি কোনো ব্যক্তি সরকার বা কোনো কমিটি কর্তৃক প্রদত্ত কোনো নির্দেশনা বা আদেশ লঙ্ঘন বা অমান্য করেন যাহার জন্য এই আইনে পৃথকভাবে শাস্তির বিধান করা হয় নাই, তাহা হইলে উক্তরূপ নির্দেশনা বা আদেশ লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং দ্বিতীয়বার বা পরবর্তীতে একই অপরাধ সংঘটনের জন্য তিনি অনধিক ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন ।
অপরাধের আমলযোগ্যতা, জামিনযোগ্যতা ও আপোষ যোগ্যতা
৪৩। ধারা ৪২ এর অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ অআমলযোগ্য, জামিনযোগ্য ও ক্ষতিপূরণ সাপেক্ষে আপোষযোগ্য হইবে এবং উক্ত ধারা ব্যতীত অন্যান্য ধারার অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ আমলযোগ্য, অজামিনযোগ্য ও অআপোষযোগ্য হইবে।
মিথ্যা বা হয়রানিমূলক মামলা দায়েরের দণ্ড
৪৪। এই আইনের অধীন দায়েরকৃত কোন মামলায় আদালত শুনানী ও বিচারান্তে যদি কোন অভিযুক্ত ব্যক্তিকে খালাস প্রদান করে এবং আদালত তাহার রায়ে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন যে, উক্ত অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও হয়রানিমূলক, তাহা হইলে মামলা দায়েরকারী ব্যক্তি অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য তিনি সর্বোচ্চ ১ (এক) বৎসর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ১ (এক) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ, ইত্যাদি

৪৫। কোনো আদালত এই আইনের অধীন কৃত কোনো অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ করিবে না, যদি না-

(ক) সরকার বা সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা মামলা দায়ের করেন; বা

(খ) কোনো প্রত্যক্ষ সুফল প্রত্যাশি ব্যক্তি (benefit claimer) মামলা দায়ের করেন:

তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত ব্যক্তিকে অপরাধ সংঘটনের ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট অপরাধের বিষয়ে মামলা করিবার অভিপ্রায়ে সরকার বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর নোটিশ প্রদান করিতে হইবে।

ফৌজদারি কার্যবিধি (Act No. V of 1898) এর প্রয়োগ
৪৬। এই আইনের অন্যান্য বিধানাবলী সাপেক্ষে, এই আইনে বর্ণিত যে কোনো অপরাধের তদন্ত, বিচার, আপিল ও আনুষঙ্গিক সকল বিষয়ে Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898) প্রযোজ্য হইবে।
সংস্থা কর্তৃক অপরাধ সংঘটন

৪৭। কোনো সংস্থা কর্তৃক এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধির অধীন কোনো অপরাধ সংঘটিত হইলে বা কোনো বিধান লঙ্ঘিত হইলে উক্ত অপরাধ বা লঙ্ঘনের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে উক্ত সংস্থার এমন প্রত্যেক পরিচালক, নির্বাহী, ব্যবস্থাপক, সচিব বা অন্য কোনো কর্মকর্তা, কর্মচারী বা প্রতিনিধি, যে নামেই অভিহিত হউক, উক্ত অপরাধ বা লঙ্ঘন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত অপরাধ বা লঙ্ঘন তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে অথবা উক্ত অপরাধ বা লঙ্ঘন রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়া অকৃতকার্য হইয়াছেন।

ব্যাখ্যা।- এই ধারায় ‘‘পরিচালক’’ অর্থে অংশীদারসহ পরিচালনা বোর্ডের সদস্যও অন্তর্ভুক্ত হইবে।

নবম অধ্যায়
বিবিধ
পুনর্বিবেচনা

৪৮। (১) এই আইনের অধীন জাতীয় কমিটি কর্তৃক প্রদত্ত কোনো সিদ্ধান্ত দ্বারা কোনো ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হইলে তিনি, উক্ত সিদ্ধান্ত অবহিত হইবার তারিখ হইতে অনধিক ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য উক্ত কমিটির নিকট আবেদন করিতে পারিবেন।

(২) এই ধারার অধীন দাখিলকৃত আবেদন উহা দাখিলের তারিখ হইতে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, নিষ্পত্তি করিতে হইবে।

(৩) এই ধারার অধীন পুনর্বিবেচনার আবেদনের উপর জাতীয় কমিটি কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।

বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
৪৯। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
অসুবিধা দূরীকরণ
৫০। এই আইনের কোনো বিধান কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোনো অস্পষ্টতা বা অসুবিধা দেখা দিলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের বিধানাবলীর সহিত সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, উক্তরূপ অস্পষ্টতা বা অসুবিধা দূর করিতে পারিবে।
ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ

৫১। (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের মূল বাংলা পাঠের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে।

(২) ইংরেজি ও বাংলা পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।

তথ্যসূত্র:


Visited 1,039 times, 1 visits today | Have any fisheries relevant question?
বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য আইন, ২০১৭

Visitors' Opinion

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.