শ্রেণীতাত্ত্বিক অবস্থান(Systematic position):
পর্ব: Chordata
শ্রেণী: Actinopterygii (Ray-finned fishes)
বর্গ: Beloniformes (Needlefishes)
উপবর্গ: Belonoidei (= Exocoetoidei)
Superfamily: Exocoetoidea
পরিবার: Hemiramphidae (Halfbeaks)
উপপরিবার: Hemiramphinae
গণ: Hyporhamphus
প্রজাতি: H. limbatus
শব্দতত্ত্ব (Etymology):
Hyporhamphus শব্দটি এসেছে গ্রীক hypo অর্থাৎ নীচে ( under) এবং গ্রীক শব্দ rhamphos অর্থাৎ চঞ্চু বা ঠোট ( beak, bill) থেকে।
সমনাম(Synonyms):
Hemiramphus gorakhpurensis Srivastava, 1967
Hemiramphus limbatus Valenciennes, 1847
Hemiramphus tridentifer Cantor, 1849
Hemirhamphus sinensis Günther, 1866
Hyporhamphus sinensis (Günther, 1866)
সাধারণ নাম (Common name):
ইংরেজি(English): Congaturi halfbeak, Valenciennes Halfbeak
বাংলা (বাংলাদেশ): এক থুইট্টা, এক ঠুইটা, এক ঠোটা ইত্যাদি।
বিস্তৃতি (Distribution):
এটি বাংলাদেশ ((Rahman, 1989 and 2005)), পারশ্য (ইরান) উপসাগর, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ইত্যাদি দেশে ও মায়ানমার থেকে চীন পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলে পাওয়া যায় (Talwar and Jhingran, 1991)। নেপাল, আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ, হংকং, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, ব্রুনাই (Borneo), ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, ফিলিপাইন, উত্তর অস্ট্রেলিয়া, নিউ গিনিতে (New Guinea) এদের দেখা মেলে।
সংরক্ষণ অবস্থা(Conservation status):
আইইউসিএন (IUCN Bangladesh, 2000) এর মতে এটি হুমকিগ্রস্ত প্রজাতি নয়। তবে বাংলাদেশে বর্তমানে এই মাছ খুবই সীমিত পরিসরে দেখতে পাওয়া যায়। তাই জরুরীভাবে সংরক্ষণ ব্যবস্থা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।
বাহ্যিক দৈহিক গঠন (External Morphology):
দেহ লম্বা ও সিলিন্ডার আকৃতির। লেজের দিকটা পার্শ্বীয়ভাবে চাপা। নিচের ঠোঁট লম্বা। উপরের ঠোঁট অত্যন্ত খাটো ও ত্রিকোণাকার যা ভালভাবে লক্ষ না করলে ভাঙ্গা বলেই প্রতীয়মান হয়। দুই চোয়ালেই অনেকগুলো সারিবদ্ধ আঙ্গুলাকৃতির (valliform) ক্ষুদ্রাকার দাঁত বর্তমান। চোখ তুলনামূলকভাবে বড়, গোলাকার ও স্পষ্ট।
আদর্শ ও মোট দৈর্ঘ্য ঠোঁটসহ মাথার দৈর্ঘ্যের যথাক্রমে ২.৫-২.৮ ও ২.৯-৩.২ গুণ। অন্যদিকে আদর্শ ও মোট দৈর্ঘ্য দেহ উচ্চতার যথাক্রমে ১০-১১ ও ১১-১২ গুণ। নিচের চোয়াল উপরেরটির ৫.৬ গুণ লম্বা। আদর্শ ও মোট দৈর্ঘ্য চঞ্চু অর্থাৎ ঠোটের দৈর্ঘ্যে পর্যায়ক্রমে ১.৫-৫ ও ৫.২-৫.৯ গুণ। (Rahman, 1989 and 2005)।
পায়ুপাখনা ও পৃষ্ঠপাখনা পুচ্ছপাখনার নিকটে অবস্থিত। অঙ্কীয় দেশে অবস্থিত পায়ুপাখনার ঠিক বিপরীতে পৃষ্ঠদেশ বরাবর পৃষ্ঠপাখনা উপস্থিত এবং উভয় পাখনার ভিত্তি-দৈর্ঘ্য প্রায় সমান। চোখ ও পুচ্ছ পাখনার মধ্যবর্তী স্থানে শ্রোণীপাখনা অবস্থিত। পুচ্ছপাখনা সামান্য দ্বিধাবিভক্ত।
পার্শ্বরেখা দেহের অঙ্কীয় অঞ্চলে বিস্তৃত এবং পার্শ্বরেখা বরাবর ৫০-৫২ টি আঁইশ রয়েছে। জলপাই বা সবুজাভাব বর্ণের দেহের অক্ষ বরাবর বক্ষ পাখনা থেকে পুচ্ছ পাখনা পর্যন্ত লম্বালম্বিভাবে বিস্তৃত একটি উজ্জ্বল রূপালী বা হলুদাভাব বা সাদাটে বা হালকা লালচে (রক্তবর্ণ) ডোরা দাগ বর্তমান। দেহের পৃষ্ঠদেশে অবস্থিত আঁইশে সূক্ষ্ম কালো ফোটা রয়েছে। পুচ্ছ, পৃষ্ঠ এবং পায়ু পাখনার প্রান্ত কালো বর্ণের (Rahman, 1989 and 2005)।
পাখনা সূত্র (Fin formula):
D. 13-14; P. 10; V. 6; A. 13-15; C. 14 (Bhuiyan, 1964; Shafi and Quddus, 2001)
D. 13-14; P1. 10; P2. 6; A. 13-14 (Rahman, 1989 and 2005)
D 12-16; A 13-16; P i 10-11; V i 5 (Talwar and Jhingran, 1991)
সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য (Maximum length):
এরা সর্বোচ্চ ১৯ সেমি (Bhuiyan, 1964), ১৫.৩ সেমি (Rahman, 1989 and 2005), ১৮.৫ সেমি (Shafi and Quddus, 2001) এবং ২২ সেমি (Huda et al., 2003) পর্যন্ত হতে পারে।
আবাসস্থল(Habitat):
জলজ আগাছা সমৃদ্ধ কর্দমাক্ত আবাসস্থল এদের পছন্দনীয় আবাসস্থল। প্রবহমান পানির উপরের স্তরে এদের বেশি পাওয়া যায়। সুন্দরবন ও এর নিকটবর্তী জোয়ার-ভাটার জলাভূমিতেও এদের প্রাচুর্যতা রয়েছে (Huda et al., 2003)। কাপ্তাই অঞ্চলের কর্ণফুলী নদীতে এদের দেখা মেলে।
এরা সমুদ্র, উপকূলীয় অঞ্চল, মোহনাঞ্চল ও স্বাদুপানিতে (হাওর, বিল, নদী ইত্যাদি) বসবাস করে। প্রধানত বড় নদীতে থাকে (Shafi and Quddus, 2001)। বাংলাদেশের সকল বড় নদীতে পাওয়া গেলেও এরা সুন্দরবনের পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে বেশি পাওয়া যায় Rahman, 1989; IUCN Bangladesh, 2000)। এছাড়া ভারতের উড়িষ্যার চিলকা হ্রদে সচরাচর দেখতে পাওয়া যায় (Talwar and Jhingran, 1991)।
খাদ্য ও খাদ্যাভ্যাস (Food and feeding habit):
এরা মূলত শিকারী। তবে জুপ্লাঙ্কটনও খেয়ে থাকে। সাধারণত জলাশয়ের তলদেশের প্রাণী (zoobenthos), পতঙ্গ ইত্যাদি খেয়ে থাকে।
প্রজনন (Breeding):
সাধারণত এদের স্ত্রী ও পুরুষরা যথাক্রমে ৯.৩ ও ১০.৩ সেমি লম্বা হলে প্রজননে উপযুক্ত হয়ে থাকে। পরিণতরা বছরে কমপক্ষে দুই বার প্রজননে অংশ নেয় (Talwar and Jhingran, 1991)। ডিমের আকৃতি গোলাকার, ব্যাস ১৩ মিমি এবং নোঙ্গরের ন্যায় ১-৩ টি সূত্রাকার গঠন দেখতে পাওয়া যায় যা জলজ উদ্ভিদের সাথে লেগে থাকতে সহায়তা করে। সাধারণত ডিম দেওয়ার অষ্টম দিনে ডিম ফুটে ডিমপোনা বের হয়ে আসে (Bhuiyan, 1964)।
মৎস্য তথ্য (Fishery info):
মৎস্য খাতে এর কোন অবদান পরিলক্ষিত হয় না (Talwar and Jhingran, 1991)। বাংলাদেশে ভেসাল জাল, ঠেলা জাল, ধর্ম জাল, খেপলা জাল ইত্যাদি দিয়ে ধরা হয়।
তথ্য সূত্র (Reference):
- Bhuiyan AL (1964) Fishes of Dacca, Asiat. Soc. Pakistan, Pub. 1, No. 13, Dacca, pp. 87-88.
- Cantor TE (1849) Catalogue of Malayan fishes. Journal and Proceedings of the Asiatic Society of Bengal 18(2): i-xii + 983-1443, Pls. 1-14.
- Cuvier G and Valenciennes A (1847) Histoire naturelle des poissons. Tome dix-neuvième. Suite du livre dix-neuvième. Brochets ou Lucioïdes. Livre vingtième. De quelques familles de Malacoptérygiens, intermédiaires entre les Brochets et les Clupes. Histoire naturelle des poissons. 19: i-xix + 1-544 + 6 pp., Pls. 554-590.
- Günther A (1866) Catalogue of fishes in the British Museum. Catalogue of the Physostomi, containing the families Salmonidae, Percopsidae, Galaxidae, Mormyridae, Gymnarchidae, Esocidae, Umbridae, Scombresocidae, Cyprinodontidae, in the collection of the British Museum. Catalogue of the fishes in the British Museum. 6: i-xv + 1-368.
- Huda MS, Haque ME, Babul AS and Shil NC (ed.) (2003) Field guide to finfishes of Sundarban, Aquatic resources division, Sundarban, Boyra, Khulna, Bangladesh, p. 96.
- IUCN Bangladesh (2000) Red book of threatened fishes of Bangladesh, IUCN- The world conservation union. xii+116 pp.
- Rahman AKA (1989) Freshwater Fishes of Bangladesh, 1st edition, Zoological Society of Bangladesh, Department of Zoology, University of Dhaka, Dhaka-1000, pp. 58-59.
- Rahman AKA (2005) Freshwater Fishes of Bangladesh, 2nd edition, Zoological Society of Bangladesh, Department of Zoology, University of Dhaka, Dhaka-1000, pp. 73-74.
- Shafi M and Quddus MMA (2001) Bangladesher Matsho Shampad (Fisheries of Bangladesh) (in Bengali), Kabir publication. Dhaka, Bangladesh. pp. 242-243.
- Srivastava GJ (1967) A new species of freshwater fish of the genus Hemiramphus Cuv. from Gorakhpur, Uttar Pradesh, India. Journal of the Bombay Natural History Society 64 (1): 93-94.
- Talwar PK and Jhingran AG (1991) Inland Fishes of India and Adjacent Countries, Vol. 2, Oxford & IBH Publishing Co. Pvt. Ltd. New Delhi-Calcutta, p. 734.
পুনশ্চ:
English Feature: Congaturi halfbeak, Hyporhamphus limbatus (Valenciennes, 1847)
Visited 1,518 times, 1 visits today | Have any fisheries relevant question?