বাংলাদেশের ফিশারীজ সংশ্লিষ্ট কর্মক্ষেত্রে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে ইচ্ছুক এমন একজন শিক্ষার্থীর দেশের যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে বি.এস-সি. ফিশারীজ (অনার্স) কোর্স করার সুযোগ রয়েছে সেখানে ভর্তি হবার ন্যূনতম যোগ্যতা থাকলে তাকে ভর্তির প্রাথমিক আবেদনপত্র পূরণের পর একটি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়। পরীক্ষাটি যেহেতু প্রতিযোগিতামূলক তাই এতে সাফল্য পেতে হলে অবশ্যই যথাযথ পরিকল্পনাসহ পূর্ব প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন। তাই ভাল প্রস্তুতির জন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্রের ধরণ কেমন তা জানা থাকা আবশ্যক। এ লেখায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ধরণ নিয়ে আলোকপাতের সাথে সাথে মেধা স্কোর নির্ণয়ের পদ্ধতি নিয়েও আলোচনা করা হবে।

বাংলাদেশের যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে বি.এস-সি. ফিশারীজ (অনার্স) কোর্স করার সুযোগ রয়েছে সেখানে ২০১০-২০১১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের ধরণ বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশ্নপত্রের উল্লেখযোগ্য অংশ হচ্ছে জীববিজ্ঞান, রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞান, গণিত ও ইংরেজি। আবার অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ও সাধারণ জ্ঞান বিষয়েও প্রশ্ন থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে বিষয়ের ভিন্নতা থাকলেও সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার ধরণ বহু নির্বাচনী পদ্ধতি বা এমসিকিউ এবং ভুল উত্তরের জন্য সাধারণত নম্বর কাটা হয়ে থাকে। সকল বিষয়ের প্রশ্নপত্র প্রণয়নের সময় সাধারণত এইচ.এস.সি-র পাঠ্যসূচী অনুসরণ করা হয়ে থাকে।

তবে সকল বিশ্ববিদ্যালয়েই একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে জীববিজ্ঞান ও রসায়ন বিষয়ের প্রশ্ন। আর বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে জীববিজ্ঞান ও রসায়ন ছাড়াও পদার্থবিজ্ঞান, গণিত ও ইংরেজি বিষয়ের প্রাধান্য রয়েছে।

নিচের ছকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১০-২০১১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নে কোন বিষয়ের প্রশ্ন ছিল তা বিস্তৃতভাবে উপস্থাপনের পাশাপাশি মেধা স্কোর নির্ণয়ের পদ্ধতিও সংক্ষেপে বর্ণনা করার হল। প্রত্যাশা করি আগামী শিক্ষাবর্ষে ফিশারীজে ভর্তি ইচ্ছুকদের তা সামান্য হলেও কাজে আসবে।

 

বিশ্ববিদ্যালয় এবং অনুষদ/ইনস্টিটিউট/বিভাগ যে অনুষদ/ইউনিট/ গ্রুপের মাধ্যমে ভর্তি হতে হবে মেধা স্কোর ও লিখিত পরীক্ষার নম্বর বণ্টন, সময়কাল ও পদ্ধতি (২০১০-২০১১ শিক্ষাবর্ষে)
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়,
ফিশারীজ বিভাগ, কৃষি অনুষদ
জি ইউনিট মোট নম্বর ২০০। এস.এস.সি-র ফলাফল থেকে ৪০ নম্বর (জিপিএ-র ৮ গুন) এবং এইচ.এস.সি-র ফলাফল থেকে ৬০ নম্বর (জিপিএ-র ১২ গুন)।
লিখিত পরীক্ষার নম্বর ১০০ (জীববিজ্ঞানে ৭০, রসায়নে ২০ এবং ইংরেজিতে ১০ নম্বর)।
পরীক্ষার পদ্ধতি এমসিকিউ। সময়কাল ১ ঘণ্টা। পাশ নম্বর ২৬।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ,

মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ

মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ মোট নম্বর ৩০০। এস.এস.সি-র ফলাফল থেকে ৮০ নম্বর (জিপিএ-র ১৬ গুন) এবং এইচ.এস.সি-র ফলাফল থেকে ১২০ নম্বর (জিপিএ-র ২৪ গুন)।
লিখিত পরীক্ষার নম্বর ১০০ (পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, গণিত ও জীববিদ্যা বিষয়ের প্রতিটিতে ২৫ নম্বর)।
পরীক্ষার পদ্ধতি এমসিকিউ। সময়কাল ১ ঘণ্টা।
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর,

ফিসারিজ অনুষদ

এ ইউনিট মোট নম্বর ২০০। এস.এস.সি-র ফলাফল থেকে ৪০ নম্বর (জিপিএ-র ৮ গুন) এবং এইচ.এস.সি-র ফলাফল থেকে ৬০ নম্বর (জিপিএ-র ১২ গুন)।
লিখিত পরীক্ষার নম্বর ১০০ (পদার্থ, রসায়ন, জীব বিজ্ঞান ও ইংরেজি বিষয়ের প্রতিটিতে ২৫ নম্বর)।
পরীক্ষার পদ্ধতি এমসিকিউ।
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়,

মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ

মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ মোট নম্বর ২০০। এস.এস.সি-র ফলাফল থেকে ৪০ নম্বর (জিপিএ-র ৮ গুন) এবং এইচ.এস.সি-র ফলাফল থেকে ৬০ নম্বর (জিপিএ-র ১২ গুন)।
লিখিত পরীক্ষার নম্বর ১০০ (পদার্থ বিদ্যা, উদ্ভিদ বিদ্যা, প্রাণী বিদ্যা ও রসায়ন বিদ্যার প্রতিটি ২০ নম্বর এবং গণিত ও ইংরেজির প্রতিটিতে ১০ নম্বর)।
পরীক্ষার পদ্ধতি এমসিকিউ। সময়কাল ১ ঘণ্টা।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দুমকি, পটুয়াখালী,

মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ

এ ইউনিট মোট নম্বর ২০০। এস.এস.সি-র ফলাফল থেকে ৪০ নম্বর (জিপিএ-র ৮ গুন) এবং এইচ.এস.সি-র ফলাফল থেকে ৬০ নম্বর (জিপিএ-র ১২ গুন)।
লিখিত পরীক্ষার নম্বর ১০০ (পদার্থ বিদ্যা, রসায়ন ও জীববিদ্যার প্রতিটি ২০ নম্বর, গণিত ও ইংরেজির প্রতিটিতে ১৫ নম্বর এবং সাধারণ জ্ঞান ১০ সম্বর )।
পরীক্ষার পদ্ধতি এমসিকিউ। সময়কাল ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সালনা, গাজীপুর,

ফিশারিজ অনুষদ

লিখিত পরীক্ষার নম্বর ১০০ (সাধারণ জ্ঞান, ইংরেজি, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, গণিত ও জীববিদ্যা)।
পরীক্ষার পদ্ধতি এমসিকিউ। সময়কাল ১ ঘণ্টা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,
ফিসারিজ বিভাগ, জীববিজ্ঞান অনুষদ
ক ইউনিট লিখিত পরীক্ষার নম্বর ১২০ নম্বর। পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, গণিত ও জীববিজ্ঞান প্রতিটিতে ৩০ নম্বর। উল্লেখিত বিষয়গুলোর মধ্যে ৪র্থ বিষয় থাকলে তার পরিবর্তে বাংলা বা ইংরেজি বিষয়ে পরীক্ষা দেয়া যাবে অথবা কোন বিষয় না পড়ে থাকলে তার পরিবর্তে বাংলা বা/এবং ইংরেজি বিষয়ে পরীক্ষা দেয়া যাবে।
পরীক্ষার পদ্ধতি এমসিকিউ। সময়কাল ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট। পাশ নম্বর ৪৮।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়,
ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস এন্ড ফিশারিজ
জি ইউনিট লিখিত পরীক্ষার নম্বর ১০০ নম্বর। ইংরেজি, উদ্ভিদ বিজ্ঞান, প্রাণিবিদ্যা ও রসায়নের প্রতিটিতে ১৫ নম্বর এবং বাংলা, পদার্থবিদ্যা, গণিত ও সাধারণ জ্ঞানে প্রতিটিতে ১০ নম্বর।
পরীক্ষার পদ্ধতি এমসিকিউ। সময়কাল ১ ঘণ্টা। পাশ নম্বর ৩০। ইংরেজি, উদ্ভিদ বিজ্ঞান, প্রাণিবিদ্যা ও রসায়নে ন্যূনতম ৪ নম্বর এবং বাংলা, পদার্থবিদ্যা, গণিত ও সাধারণ জ্ঞানে ন্যূনতম ৩ নম্বর পেতে হবে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, ফিসারিজ এন্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি ডিসিপ্লিন, লাইভ সায়েন্স স্কুল লাইভ সায়েন্স স্কুল
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,
ফিশারিজ এন্ড মেরিন সায়েন্স বিভাগ
এ গ্রুপ মোট নম্বর ২০০। ৪র্থ বিষয়সহ এস.এস.সি-র ফলাফল থেকে ৪০ নম্বর (জিপিএ-র ৮ গুন) এবং এইচ.এস.সি-র ফলাফল থেকে ৬০ নম্বর (জিপিএ-র ১২ গুন)।
লিখিত পরীক্ষার নম্বর ১০০ নম্বর। পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, গণিত ও জীববিজ্ঞান প্রতিটিতে ২৫ নম্বর।
পরীক্ষার পদ্ধতি এমসিকিউ। সময়কাল ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। পাশ নম্বর ৪০।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,
এ্যাকুয়াকালচার এন্ড ফিশারিজ, জীববিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদ

 
পুনশ্চ: আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টার পরও কিছু তথ্য অসম্পূর্ণ থেকে গেল। ভবিষ্যতে তা আপডেট করার ইচ্ছা রইল। আরও তথ্য আপনাদের জানা থাকলে অনুগ্রহকরে মন্তব্যে জানানোর জন্য অনুরোধ করছি।


Visited 905 times, 1 visits today | Have any fisheries relevant question?
বি.এস-সি. ফিশারীজ (অনার্স)-এ ভর্তি প্রস্তুতি: ভর্তি পরীক্ষা ও মেধা স্কোর (শিক্ষাবর্ষ ২০১০-২০১১)

Visitors' Opinion

মো. তারিক আজিজ

শিক্ষার্থী, ফিশারীজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। বিস্তারিত

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.