বাংলাদেশ পানি আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ১৪ নং আইন) অনলাইনে প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ আইন মন্ত্রনালয়। উক্ত প্রকাশনাটি ফিশারীজের সাথে সংশ্লিষ্ট বিধায় প্রচারণা ও সচেতনা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এখানে হুবহু উপস্থাপন করা হল।

পানি সম্পদের সমন্বিত উন্নয়ন, ব্যবস্থাপনা, আহরণ, বিতরণ, ব্যবহার, সুরক্ষা ও সংরক্ষণের লক্ষ্যে
বিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে প্রণীত আইন
যেহেতু পানি সম্পদের সমন্বিত উন্নয়ন, ব্যবস্থাপনা, আহরণ, বিতরণ, ব্যবহার, সুরক্ষা ও সংরক্ষণ সম্পর্কিত বিষয়ে বিধান করা সমীচীন এবং প্রয়োজনীয়;
সেহেতু এতদ্‌দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-
প্রথম অধ্যায়
সাধারণ
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রবর্তন ও প্রয়োগ

১। (১) এই আইন বাংলাদেশ পানি আইন, ২০১৩ নামে অভিহিত হইবে।

(২) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে তারিখ নির্ধারণ করিবে সেই তারিখে এই আইন কার্যকর হইবে এবং এই আইনের বিভিন্ন ধারার জন্য ভিন্ন ভিন্ন তারিখ নির্ধারণ করা যাইবে।

(৩) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে এলাকা নির্ধারণ করিবে সেই এলাকায় এই আইন প্রযোজ্য হইবে এবং এই আইনের বিভিন্ন ধারার জন্য ভিন্ন ভিন্ন এলাকা নির্ধারণ করা যাইবে।

সংজ্ঞা

২। বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-

(১) ‘‘উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ’’ অর্থ পানি আহরণকারী, পানি বিতরণকারী, পানি সরবরাহকারী, পানি সেবা প্রদানকারী বা পানি সম্পদের সুরক্ষা ও সংরক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত কোন সংস্থা বা কর্তৃপক্ষ যাহা কোন আইন বা আইনের ক্ষমতাসম্পন্ন কোন দলিলের অধীন প্রতিষ্ঠিত বা গঠিত;

(২) ‘‘খাল’’ অর্থ পানির অন্তঃপ্রবাহ বা বহিঃপ্রবাহের কোন পথ;

(৩) ‘‘ছাড়পত্র’’ অর্থ ধারা ১৬ এর অধীন নির্বাহী কমিটি কর্তৃক ইস্যুকৃত কোন ছাড়পত্র;

(৪) ‘‘জলস্রোত’’ অর্থ জলাধার হইতে প্রবাহিত কোন পানি;

(৫) ‘‘জলাধার’’ অর্থ প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট বা কৃত্রিমভাবে খননকৃত কোন নদ-নদী, খাল, বিল, হাওর, বাওড়, দীঘি, পুকুর, হ্রদ, ঝর্ণা বা অনুরূপ কোন ধারক;

(৬) “জলাভূমি” অর্থ এমন কোন ভূমি যেখানে পানির উপরিতল ভূমিতলের সমান বা কাছাকাছি থাকে বা যাহা, সময়ে সময়ে, স্বল্প গভীরতায় নিমজ্জিত থাকে এবং যেখানে সাধারণত ভিজা মাটিতে জন্মায় এবং টিকিয়া থাকে এমন উদ্ভিদাদি জন্মায়;

(৭) ‘‘জাতীয় পানি নীতি’’ অর্থ সরকার কর্তৃক, সময় সময়, প্রণীত জাতীয় পানি নীতি;

(৮) ‘‘জাতীয় পানি সম্পদ পরিকল্পনা’’ অর্থ ধারা ১৫ এর অধীন পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত জাতীয় পানি সম্পদ পরিকল্পনা;

(৯) ‘‘নির্বাহী কমিটি’’ অর্থ ধারা ৯ এর অধীন গঠিত কমিটি;

(১০) ‘‘নিয়ন্ত্রণ’’ অর্থে নিষিদ্ধকরণ এবং শর্তারোপও অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(১১) ‘‘পরিদর্শক’’ অর্থ ধারা ১৪ এর অধীন পরিদর্শক হিসাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী;

(১২) “পরিষদ” অর্থ ধারা ৪ এর অধীন গঠিত জাতীয় পানি সম্পদ পরিষদ;

(১৩) “পানি” অর্থ ধারা ৩ এর উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোন পানি;

(১৪) ‘‘পানি সম্পদ’’ অর্থ ভূপরিস্থ পানি, ভূগর্ভস্থ পানি ও বৃষ্টির পানি তথা বায়ুমন্ডলের পানি; এবং মোহনা, পানিধারক স্তর, প্লাবন ভূমি, জলাভূমি, জলাধার, ফোরশোর, উপকূল ও অনুরূপ কোন আধার বা স্থানের পানিও উহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(১৫) ‘‘পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প’’ অর্থ পানি সম্পদ উন্নয়নের জন্য গৃহীত কোন কার্যক্রম, কর্মসূচি বা উদ্যোগ, যেমন সেচ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা ও পানি নিষ্কাশনের জন্য নির্মিত যেকোন ধরনের হাইড্রোলিক অবকাঠামো নির্মাণ, নদীর তীর সংরক্ষণ, ড্রেজিং বা অনুরূপ কোন কার্যক্রম, কর্মসূচি বা উদ্যোগ;

(১৬) ‘‘পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থা’’ অর্থ পানি সম্পদ পরিকল্পনা আইন, ১৯৯২ (১৯৯২ সনের ১২ নং আইন) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থা;

(১৭) ‘‘পানি সংকটাপন্ন এলাকা’’ অর্থ ধারা ১৭ এর অধীন ঘোষিত কোন এলাকা;

(১৮) ‘‘পানিধারক স্তর’’ (Aquifer) অর্থ ভূগর্ভস্থ শিলা বা মৃত্তিকা স্তরের এমন কোন স্তর যাহা পানি ধারণ এবং পরিবহণ করিতে পারে এবং যাহা হইতে পানি উত্তোলন করা যায়;

(১৯) ‘‘প্রতিপালন আদেশ’’ অর্থ ধারা ১২ এর অধীন ইস্যুকৃত কোন আদেশ;

(২০) ‘‘ফোরশোর’’ অর্থ বৎসরের যেকোন সময় ভরাকটাল (ordinary spring tide) এর সময় নদীর সর্বনিম্ন পানি স্তর (low water mark) হইতে সর্বোচ্চ পানি স্তর (high water mark) এর মধ্যবর্তী অংশ; এবং Ports Act, 1908 (Act. No. XV of 1908) অনুযায়ী ঘোষিত নদী বন্দর ও সমুদ্র বন্দর এলাকায় সর্বোচ্চ পানি স্তর হইতে নদীর তীর ৫০ (পঞ্চাশ) মিটার এবং অন্যান্য এলাকায় সর্বোচ্চ পানি স্তর হইতে ১০ (দশ) মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকা;

(২১) ‘‘ফৌজদারি কার্যবিধি’’ অর্থ Code of Criminal Procedure, 1898 (Act V of 1898);
(২২) ‘‘বাঁওড়’’ অর্থ খুরাকৃতির এমন কোন হ্রদ যাহার জলস্রোত সময়ের বিবর্তনে ধীরে ধীরে স্তিমিত হইয়া পড়িয়াছে;

(২৩) ‘‘বাঁধ’’ অর্থ মাটি বা অনুরূপ উপাদান দ্বারা নির্মিত কোন ড্যাম, ওয়াল (wall) , ডাইক, বেড়িবাঁধ বা অনুরূপ কোন বাঁধ;

(২৪) ‘‘বিল’’ অর্থ প্রাকৃতিক নীচু জায়গা বা বৃত্তাকার এলাকা যাহা বৃষ্টিপাত বা নদীর পানির দ্বারা প্লাবিত হয় এবং যাহা সমগ্র বৎসর পানিতে নিমজ্জিত থাকে বা বৎসরের আংশিক সময় আংশিক বা পূর্ণ শুষ্ক থাকে;

(২৫) ‘‘ব্যক্তি’’ অর্থ কোন ব্যক্তি এবং কোন প্রতিষ্ঠান, কোম্পানী, সমিতি, অংশীদারি কারবার, ফার্ম বা সংবিধিবদ্ধ বা অন্য কোন সংস্থাও উহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(২৬) ‘‘ভূগর্ভস্থ পানি’’ অর্থ ভূপৃষ্ঠের নীচের কোন পানি যাহা কোন জলাধারের মধ্য দিয়া প্রবাহিত হয় বা ভূপৃষ্ঠের উপর প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম উপায়ে উত্তোলন করা যায়;

(২৭) ‘‘ভূপরিস্থ পানি’’ অর্থ ভূমির উপরিভাগের জলাধারের কোন পানি;

(২৮) ‘‘ভূমি’’ অর্থ State Acquisition and Tenancy Act, 1950 (E. B. Act No. XXVIII of 1950) এর section 2(16) এ সংজ্ঞায়িত কোন land;
(২৯) ‘‘মহাপরিচালক’’ অর্থ পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার মহাপরিচালক;

(৩০) ‘‘মোহনা’’ অর্থ এমন কোন জলস্রোত যাহা স্থায়ীভাবে অথবা পর্যায়ক্রমে সমুদ্রমুখী যেখানে সমুদ্রের জলরাশি, যাহার বিস্তৃতি পরিমাপযোগ্য, ভূমি হইতে প্রবাহিত পানির সহিত মিশ্রিত হয়;

(৩১) ‘‘সরকার’’ অর্থ এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়;

(৩২) ‘‘সংরক্ষণ’’ অর্থে পানি সম্পদের উপযোগিতা বৃদ্ধি, অপচয় ও ক্ষয় হ্রাসকরণ, পরিরক্ষণ ও সুরক্ষাও অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(৩৩) ‘‘সুরক্ষা’’ অর্থ পানি সম্পদ সংরক্ষণের জন্য বিধি-নিষেধ বা শর্তারোপ;

(৩৪) ‘‘সুরক্ষা আদেশ’’ অর্থ ধারা ২৭ এর অধীন ইস্যুকৃত কোন আদেশ; এবং

(৩৫) ‘‘হাওর’’ অর্থ দুইটি ভিন্ন নদীর মধ্যস্থলে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট কড়াই আকৃতির বৃহদাকার কোন নিম্নভূমি।

পানির অধিকার ও উহার ব্যবহার

৩। (১) আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, রাষ্ট্রের সীমানাভুক্ত নিম্নবর্ণিত পানির সকল অধিকার জনগণের পক্ষে রাষ্ট্রের উপর অর্পিত থাকিবে, যথা:-

(ক) ভূপরিস্থ পানি;

(খ) ভূগর্ভস্থ পানি;

(গ) সামুদ্রিক পানি;

(ঘ) বৃষ্টির পানি;এবং

(ঙ) বায়ুমণ্ডলের পানি।

(২) এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, সুপেয় পানি এবং পরিচ্ছন্নতা ও পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য ব্যবহার্য পানির অধিকার সর্বাধিকার হিসাবে বিবেচিত হইবে।

(৩) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমির ভূপরিস্থ পানির সকল অধিকার উক্ত ভূমির মালিকের থাকিবে এবং তিনি এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে উহা ব্যবহার করিতে পারিবেন:

তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত পানির অপচয় ও অপব্যবহার রোধকল্পে এবং উহার সুরক্ষা ও সংরক্ষণের প্রয়োজনে নির্বাহী কমিটি বৈষম্যহীনভাবে যেকোন ভূমির মালিকের প্রতি সুরক্ষা আদেশ ইস্যু করিতে পারিবে।

(৪) এই আইন কার্যকর হইবার অব্যবহিত পূর্বে বলবৎ কোন আইন, বিধি, প্রবিধি, আইনের ক্ষমতাসম্পন্ন কোন প্রথা বা রীতি, চুক্তি, লাইসেন্স বা পারমিটের অধীন পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এর কোন কিছুই কোন ব্যক্তিকে বারিত করিবে না এবং এই আইন দ্বারা সীমিত, বারিত, নিয়ন্ত্রিত বা বাতিল করা না হইলে পানির উক্তরূপ ব্যবহার চলমান ও অব্যাহত থাকিবে:

তবে শর্ত থাকে যে, পানির উক্তরূপ ব্যবহারের অধিকার উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত হস্তান্তরযোগ্য হইবে না ।

(৫) উপ-ধারা (৩) এর অধীন পানি ব্যবহারের সুবিধার্থে প্রত্যেক ব্যক্তির ব্যক্তিমালিকানাধীন বা রাষ্ট্রীয় ভূমিতে বর্তস্বত্ত্ব (easement) থাকিবে:

তবে শর্ত থাকে যে, জলাধারের তীরবর্তী কোন ভূমি মালিকের উহার তলদেশ এবং ফোরশোরের উপর কোন প্রকার অধিকার থাকিবে না।

দ্বিতীয় অধ্যায়
জাতীয় পানি সম্পদ পরিষদ এবং উহার কার্যাবলি ও ক্ষমতা
জাতীয় পানি সম্পদ পরিষদ

৪। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, জাতীয় পানি সম্পদ পরিষদ নামে একটি পরিষদ থাকিবে এবং এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, যথাশীঘ্র সম্ভব, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে উক্ত পরিষদ গঠন করিবে, যথা:-

(ক) প্রধানমন্ত্রী, যিনি উহার চেয়ারপারসনও হইবেন;

(খ) অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;

(গ) কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;

(ঘ) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;

(ঙ) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;

(চ) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;

(ছ) ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;

(জ) পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;

(ঝ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;

(ঞ) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;

(ট) নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;

(ঠ) পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;

(ড) পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রতিমন্ত্রী (যদি থাকে);

(ঢ) জাতীয় সংসদের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি;

(ণ) মন্ত্রিপরিষদ সচিব;

(ত) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব;

(থ) প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক মনোনীত প্রশাসনিক বিভাগসমূহ হইতে একজন করিয়া সংসদ সদস্য;

(দ) ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বা সচিব;

(ধ) অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সিনিয়র সচিব বা সচিব;

(ন) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বা সচিব;

(প) কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বা সচিব;

(ফ) পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বা সচিব;

(ব) স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব বা সচিব;

(ভ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বা সচিব;

(ম) লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব বা সচিব;

(য) পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য;

(র) বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক;

(ল) পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার মহাপরিচালক;

(শ) যৌথ নদী কমিশনের সদস্য;

(ষ) ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ এর প্রেসিডেন্ট;

(স) ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স , বাংলাদেশ এর প্রেসিডেন্ট;

(হ) প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক মনোনীত ৩ (তিন) জন পানি বিশেষজ্ঞ;

(ড়) প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক মনোনীত বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার (এনজিও) ১ (এক) জন প্রতিনিধি; এবং

(ঢ়) পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বা সচিব, যিনি উহার সদস্য-সচিবও হইবেন।

(২) পরিষদের মনোনীত সদস্যগণের মেয়াদ হইবে ২ (দুই) বৎসর, তবে মনোনীত কোন সদস্য, মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বে যেকোন সময়, প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন এবং তদ্‌কর্তৃক পদত্যাগপত্র গৃহীত হইবার তারিখ হইতে সংশ্লিষ্ট পদটি শূন্য হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

(৩) সরকার, প্রয়োজনে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, পরিষদের সদস্য সংখ্যা হ্রাস বা বৃদ্ধি করিতে পারিবে।

পরিষদের কার্যাবলি

৫। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে এবং উহার বিধানাবলি সাপেক্ষে, পরিষদ হইবে সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী কর্তৃপক্ষ এবং তদুদ্দেশ্যে পরিষদের কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথা:-

(ক) পানি সম্পদের সমন্বিত উন্নয়ন, সুষ্ঠু ব্যবহার, নিরাপদ আহরণ, সুষম বণ্টন, সুরক্ষা ও সংরক্ষণ বিষয়ে নীতি নির্ধারণ ও দিক-নির্দেশনা প্রদান;

(খ) পানি সম্পদের সমন্বিত উন্নয়ন নিশ্চিতকল্পে জাতীয় পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংক্রান্ত দিক-নির্দেশনা প্রদান;

(গ) জাতীয় পানি সম্পদ পরিকল্পনা অনুমোদন ও উহার বাস্তবায়ন নিশ্চিতকরণ; এবং

(ঘ) পরিষদ কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত অন্য যেকোন কার্যাবলি সম্পাদন করা।

পরিষদের সভা

৬। (১) উপ-ধারা (২) এর বিধান সাপেক্ষে, পরিষদ উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।

(২) পরিষদের সকল সভা চেয়ারপারসন কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত স্থান ও সময়ে পরিষদের সদস্য-সচিব কর্তৃক আহূত হইবে ।

(৩) পরিষদের সভায় সভাপতিত্ব করিবেন উহার চেয়ারপারসন, বা তাহার অনুপস্থিতিতে পরিষদের জ্যেষ্ঠ সদস্য।

(৪) পরিষদের কোন সদস্যপদ শূন্য থাকিবার অথবা পরিষদ গঠনে কোন ত্রুটি থাকিবার কারণে পরিষদের কোন কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না বা তৎসম্পর্কে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।

আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতা আদান-প্রদান

৭। (১) এই আইন ও আপাততঃ বলবৎ অন্যান্য আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, পরিষদ, উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত সহযোগিতা কার্যকর করিবার লক্ষ্যে, যেকোন বিদেশী রাষ্ট্র, সরকার বা আন্তর্জাতিক বা আঞ্চলিক সংস্থার সহিত প্রয়োজনীয় সমঝোতা স্মারক, চুক্তি, কনভেনশন, ট্রিটি বা অনুরূপ কোন ইন্সট্রুমেন্ট (instrument) সম্পাদন করিতে সরকারকে পরামর্শ প্রদান করিতে পারিবে।

(২) সরকার, পরিষদের পরামর্শক্রমে, নিম্নবর্ণিত বিষয়ে যেকোন বিদেশী রাষ্ট্র, সরকার বা আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থার সহযোগিতা আদান-প্রদান করিতে পারিবে, যথা:-

(ক) অভিন্ন পানি সম্পদ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিনিময় ও বিশ্লেষণ;

(খ) আন্তর্জাতিক নদীর উপর যৌথ জরিপ, সমীক্ষা ও গবেষণা এবং উহার রাসায়নিক এবং জৈব দূষণ প্রতিরোধে যৌথ কার্যক্রম;

(গ) আন্তর্জাতিক নদীসমূহের পানি সম্পদের উন্নয়ন, আহরণ ও বণ্টন কার্যক্রম; এবং

(ঘ) পানি সম্পদ সংশ্লিষ্ট শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম।

জাতীয় পানি নীতি প্রণয়নের ক্ষমতা

৮। (১) সরকার, উপ-ধারা (২) এর বিধানাবলি সাপেক্ষে, সময় সময়, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, পানি সম্পদ সংক্রান্ত জাতীয় পানি নীতি প্রণয়ন করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন জাতীয় পানি নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে সরকার পানি সম্পদের সহিত সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠী ও সংগঠনের মতামত গ্রহণের জন্য বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে গণশুনানির আয়োজন করিবে এবং শুনানিতে প্রাপ্ত মতামত বিবেচনায় আনিয়া জাতীয় পানি নীতি চূড়ান্ত করিতে হইবে।

(৩) সরকার জাতীয় পানি নীতিতে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পানির মূল্য নির্ধারণের নীতিমালা অন্তর্ভুক্ত করিতে পারিবে এবং উহা অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে সরকার নিম্নবর্ণিত বিষয়সহ প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করিবে, যথা:-

(ক) পানি ব্যবহারের উদ্দেশ্য বা ক্ষেত্র;

(খ) পানি সেবাভোগীর সামর্থ্য;

(গ) পানি আহরণ ও সরবরাহের প্রকৃত খরচ;

(ঘ) সেবাভোগী বা উহার শ্রেণী বিশেষের আর্থিক ক্ষমতা ও অনগ্রসরতা;

(ঙ) পানির চাহিদা ও সরবরাহ; এবং

(চ) সরকার কর্তৃক বিবেচিত অন্য কোন প্রাসঙ্গিক বিষয়।

(৪) উপ-ধারা (১) এর অধীন জাতীয় পানি নীতি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত এই আইন কার্যকর হইবার অব্যবহিত পূর্বে সরকার কর্তৃক প্রণীত জাতীয় পানি নীতি, এই আইনের বিধানাবলির সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, বলবৎ থাকিবে।

তৃতীয় অধ্যায়
নির্বাহী কমিটি এবং উহার দায়িত্ব, কর্তব্য ও ক্ষমতা
নির্বাহী কমিটি

৯। পরিষদের কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য উহার একটি নির্বাহী কমিটি থাকিবে এবং নির্বাহী কমিটি নিম্নবর্ণিত সদস্যগণের সমন্বয়ে গঠিত হইবে, যথা:-

(ক) পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী, যিনি উহার সভাপতিও হইবেন;

(খ) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;

(গ) কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;

(ঘ) পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;

(ঙ) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;

(চ) ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;

(ছ) পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রতিমন্ত্রী (যদি থাকে);

(জ) পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য;

(ঝ) কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বা সচিব;

(ঞ) স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব বা সচিব;

(ট) লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব বা সচিব;

(ঠ) পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বা সচিব;

(ড) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বা সচিব;

(ঢ) পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বা সচিব;

(ণ) ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বা সচিব;

(ত) পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক;

(থ) বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক;

(দ) স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী;

(ধ) জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী;

(ন) যৌথ নদী কমিশনের সদস্য;

(প) সরকার কর্তৃক মনোনীত ২ (দুই) জন পানি বিশেষজ্ঞ;

(ফ) সরকার কর্তৃক মনোনীত বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার (এনজিও) ১ (এক) জন প্রতিনিধি; এবং

(ব) পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার মহাপরিচালক, যিনি উহার সদস্য-সচিবও হইবেন।

নির্বাহী কমিটির দায়িত্ব ও কর্তব্য

১০। নির্বাহী কমিটির দায়িত্ব ও কর্তব্য হইবে নিম্নরূপ, যথা:-

(ক) পানি সম্পদ বিষয়ে পরিষদ কর্তৃক প্রদত্ত নির্দেশনা, সুপারিশ, ইত্যাদি প্রকাশ, প্রচার, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন;

(খ) জাতীয় পানি নীতি ও জাতীয় পানি সম্পদ পরিকল্পনা প্রচার, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন;

(গ) পানি সম্পদের সহিত সংশ্লিষ্ট পরিকল্পনা, ব্যবস্থাপনা ও আন্তঃখাত সমন্বয় সংক্রান্ত সকল বিষয়ে কার্যক্রম গ্রহণ;

(ঘ) পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিষয়ের উপর পর্যাবৃত্তে পরিষদকে অবহিতকরণ ও পরামর্শ প্রদান;

(ঙ) উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমন্বয় সাধন ও আন্তঃসংস্থা বিরোধ নিষ্পত্তি সংক্রান্ত নীতি নির্ধারণ ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান এবং প্রয়োজনে উহা নিষ্পত্তিকরণ; এবং

(চ) পরিষদ কর্তৃক অর্পিত অন্য যেকোন কার্যাবলি সম্পাদন।

নির্বাহী কমিটির সভা

১১। (১) এই ধারার বিধানাবলি সাপেক্ষে, নির্বাহী কমিটি উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।

(২) নির্বাহী কমিটির সকল সভা, সভাপতির সম্মতিক্রমে, উহার সদস্য-সচিব কর্তৃক আহূত হইবে এবং সভাপতি কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত স্থান ও সময়ে উক্ত সভা অনুষ্ঠিত হইবে।

(৩) নির্বাহী কমিটির সভায় উহার সভাপতি সভাপতিত্ব করিবেন।

(৪) নির্বাহী কমিটির কোন সদস্যপদ শূন্য থাকিবার অথবা নির্বাহী কমিটি গঠনে কোন ত্রুটি থাকিবার কারণে নির্বাহী কমিটির কোন কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না বা তৎসম্পর্কে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।

প্রতিপালন আদেশ (compliance order) ইস্যু করিবার ক্ষমতা

১২। (১) যথাযথ অনুসন্ধান, পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতে যদি নির্বাহী কমিটির নিকট প্রতীয়মান হয় যে, কোন ব্যক্তি বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ ধারা ১৮, ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৪ ও ২৬ এর কোন বিধান বা ছাড়পত্রের কোন শর্ত বা সুরক্ষা আদেশের কোন বিধি-নিষেধ বা শর্ত প্রতিপালন বা পরিপালন করিতেছে না বা লংঘন বা লংঘনের চেষ্টা করিতেছে তাহা হইলে আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, নির্বাহী কমিটি বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা, উক্ত ব্যক্তি বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে আদেশে উল্লিখিত নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এই আইন বা সুরক্ষা আদেশের কোন বিধি-নিষেধ বা শর্ত বা ছাড়পত্রের শর্ত প্রতিপালন করিবার জন্য প্রতিপালন আদেশ ইস্যু করিতে পারিবে।

(২) নির্বাহী কমিটি বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত প্রতিপালন আদেশ, ধারা ৪২ এর বিধান সাপেক্ষে, বিধি দ্ধারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে জারি করিবে।

(৩) প্রতিপালন আদেশের মর্মানুযায়ী যদি কোন উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ (ব্যক্তি ব্যতীত) এই আইন বা সুরক্ষা আদেশের কোন বিধি-নিষেধ বা শর্ত বা ছাড়পত্রের শর্ত প্রতিপালন না করে, তাহা হইলে নির্বাহী কমিটি, উক্ত কর্তৃপক্ষকে ধারা ২৯ এর অধীন বিচার বিভাগীয় কার্যধারা গ্রহণ বা জরিমানা আরোপ না করিয়া উহার প্রধানকে উক্তরূপ বিধি-বিধান বা শর্ত প্রতিপালন না করিবার কারণ ব্যাখ্যা করিবার জন্য, এই আইনের অন্যান্য বিধানে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কমিটির সভায় তলব করিতে পারিবে এবং উক্ত কারণ সন্তোষজনক না হইলে দায়ী ব্যক্তিকে চিহ্নিত করিয়া তাহার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পরিষদের নিকট সুপারিশ প্রদান করিতে পারিবে।

(৪) প্রতিপালন আদেশে অন্যান্য বিষয়ের সহিত নিম্নবর্ণিত বিষয়াদির উল্লেখ থাকিবে, যথা:-

(ক) বিধি-বিধান বা শর্ত লংঘনকারীর নাম ও ঠিকানাসহ পূর্ণাঙ্গ বিবরণ;

(খ) লংঘিত বিধি-বিধান বা শর্তাবলির বিবরণ;

(গ) প্রতিপালনের সময়সীমা; এবং

(ঘ) নির্বাহী কমিটি কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত অন্য কোন প্রয়োজনীয় বিষয়।

(৫) প্রতিপালন আদেশে আরও উল্লেখ থাকিবে যে, উপযুক্ত কারণ ব্যতীত উক্ত আদেশ প্রতিপালন করা বাধ্যতামূলক এবং উহা প্রতিপালন না করা জরিমানাযোগ্য এবং দণ্ডনীয় একটি অপরাধ।

(৬) প্রতিপালন আদেশ ইস্যুর পূর্বে নির্বাহী কমিটি বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষকে শুনানির যুক্তিসঙ্গত সুযোগ প্রদান করিবে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তৎকর্তৃক উপস্থাপিত বক্তব্য বিবেচনা করিবে।

(৭) প্রতিপালন আদেশ জারির বিষয়টি, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে গণবিজ্ঞপ্তি দ্ধারা বহুল প্রকাশ ও সাধারণ্যে প্রচারের ব্যবস্থা করা যাইবে।

অপসারণ আদেশ (removal order) ইস্যু করিবার ক্ষমতা

১৩। (১) এই আইন বা সুরক্ষা আদেশের কোন বিধি-নিষেধ বা ছাড়পত্রের কোন শর্ত লংঘন করিয়া যদি কোন ব্যক্তি বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ পানি সম্পদের উপর এমন কোন স্থাপনা নির্মাণ বা ভরাট কার্যক্রম গ্রহণ করেন যাহা জলস্রোতের স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা সৃষ্টি বা উহার গতিপথ পরিবর্তন করে, তাহা হইলে আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, নির্বাহী কমিটি বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা উক্ত জলস্রোতের স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিতকল্পে আদেশে উল্লিখিত নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উক্ত স্থাপনা অপসারণ বা ভরাট কার্যক্রমে ব্যবহৃত উপকরণ বা উপাদান অপসারণ করিবার জন্য উক্ত ব্যক্তি বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের উপর অপসারণ আদেশ ইস্যু করিতে পারিবে।

(২) নির্বাহী কমিটি বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত অপসারণ আদেশ, ধারা ৪২ এর বিধান সাপেক্ষে, বিধি দ্ধারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে জারি করিবে।

(৩) অপসারণ আদেশ ইস্যুর পূর্বে নির্বাহী কমিটি বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষকে শুনানির যুক্তিসঙ্গত সুযোগ প্রদান করিবে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তৎকর্তৃক উপস্থাপিত বক্তব্য বিবেচনা করিবে।

(৪) অপসারণ আদেশে উল্লিখিত নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোন উপযুক্ত কারণ ব্যতীত স্থাপনা অপসারণ বা ভরাট কার্যক্রম বন্ধ করা না হইলে আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, নির্বাহী কমিটি, জলস্রোতের স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিতকল্পে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে নোটিশ প্রদান করিয়া উক্তরূপ স্থাপনা বা ভরাট কার্যক্রমে ব্যবহৃত উপকরণ জলাধার হইতে অপসারণ করিতে পারিবে এবং উক্তরূপ স্থাপনা অপসারণ বা ভরাট কার্যক্রমের প্রকৃত খরচ উক্ত ব্যক্তির নিকট হইতে ধারা ৪৩ এর বিধান সাপেক্ষে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে আদায় করিতে পারিবে।

(৫) অপসারণ আদেশে অন্যান্য বিষয়ের সহিত নিম্নবর্ণিত বিষয়াদির উল্লেখ থাকিবে, যথা:-

(ক) স্থাপনা নির্মাণকারী বা ভরাট কার্যক্রম গ্রহণকারীর নাম ও ঠিকানাসহ পূর্ণাঙ্গ বিবরণ;

(খ) অবৈধ স্থাপনা বা ভরাট কার্যক্রমের বিবরণ;

(গ) অপসারণের সময়সীমা; এবং

(ঘ) নির্বাহী কমিটি কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত অন্য কোন বিষয়।

(৬) স্থাপনা অপসারণ বা ভরাট কার্যক্রমে ব্যবহৃত উপকরণ বা উপাদান অপসারণের প্রকৃত খরচ অপসারণ কার্যক্রম গ্রহণের পূর্বে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য বিবেচনা করিয়া নির্ধারণ করিতে হইবে।

(৭) অপসারণ আদেশ জারির বিষয়টি, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে গণবিজ্ঞপ্তি দ্বারা বহুল প্রকাশ ও সাধারণ্যে প্রচারের ব্যবস্থা করা যাইবে।

মহাপরিচালক কর্তৃক সাচিবিক সহায়তা প্রদান ও পরিদর্শকের ক্ষমতা অর্পণ

১৪। (১) মহাপরিচালক নির্বাহী কমিটির কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে উহাকে সকল প্রকার প্রশাসনিক ও সাচিবিক সহায়তা প্রদান করিবে।

(২) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, মহাপরিচালকের দায়িত্ব হইবে নিম্নরূপ, যথা:-

(ক) পরিষদ ও নির্বাহী কমিটি কর্তৃক গৃহীত নীতি ও কর্মপন্থা বাস্তবায়ন ও প্রয়োগ করা;

(খ) পরিষদ ও নির্বাহী কমিটির নির্দেশনার আলোকে উহার সভায় উপস্থাপনের নিমিত্ত সকল প্রকার প্রস্তাব প্রস্তুত করা;

(গ) যে কোন স্থান বা প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করা;

(ঘ) এই আইন সম্পর্কিত বিষয়ে জনসচেতনতা সৃস্টির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা;

(ঙ) পরিষদ ও নির্বাহী কমিটি কর্তৃক, সময় সময়, অর্পিত অন্যান্য দায়িত্ব পালন করা।

(৩) মহাপরিচালক, পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থা বা অন্য কোন সংস্থার কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে তাহার উপর উপ-ধারা (২) এর দফা (গ) এ বর্ণিত দায়িত্ব অর্পণ করিতে পারিবেন এবং উক্তরূপ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারী এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে পরিদর্শক নামে অভিহিত হইবেন।

(৪) পরিদর্শক উপ-ধারা (৩) এর অধীন পরিদর্শনকালে পরিলক্ষিত যে কোন অনিয়ম বা ত্রুটি বা আদেশ লংঘন সম্পর্কে মহাপরিচালক বা তৎকর্তৃক নির্ধারিত কোন কর্মকর্তার নিকট প্রতিবেদন পেশ করিবেন।

চতুর্থ অধ্যায়
পানি সম্পদের উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণ
জাতীয় পানি সম্পদ পরিকল্পনা অনুমোদন

১৫। (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থা, যথাশীঘ্র সম্ভব, পানি সম্পদ পরিকল্পনা আইন, ১৯৯২ (১৯৯২ সনের ১২ নং আইন) এর অধীন তদকর্তৃক প্রণীতব্য জাতীয় পানি সম্পদ পরিকল্পনা অনুমোদনের জন্য নির্বাহী কমিটির মাধ্যমে পরিষদের নিকট উপস্থাপনা করিবে।

(২) পানি সম্পদ পরিকল্পনা আইন, ১৯৯২ (১৯৯২ সনের ১২ নং আইন) এ উল্লিখিত বিষয়াদিসহ উক্ত পরিকল্পনায় নিম্নবর্ণিত বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত থাকিবে, যথা:-

(ক) পানি সম্পদের বর্তমান ভৌগোলিক অবস্থান ও মৌজা ম্যাপসহ উহার বিবরণ;

(খ) পানি সম্পদের অর্থনৈতিক, প্রাকৃতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, পরিবেশ ও পরিবেশগত এবং প্রাতিষ্ঠানিক উপাদান, বৈশিষ্ট্য ও প্রভাব বিশ্লেষণ;

(গ) পানি সম্পদের সকল তথ্য ও উপাত্তের বিজ্ঞানভিত্তিক বিশ্লেষণ;

(ঘ) পানি সম্পদের আহরণ, বিতরণ, ব্যবহার, সুরক্ষা ও সংরক্ষণ সংক্রান্ত সার্বিক পরিকল্পনা, কাঠামো প্রণয়ন ও এতদসংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ/মেয়াদি দিক নির্দেশনা;

(ঙ) পানি সম্পদের ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাসমূহের মধ্যে সমন্বয়;

(চ) পানি সম্পদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ব্যবহার;

(ছ) বৃষ্টির পানির সর্বাত্মক ব্যবহারসহ ভূপরিস্থ এবং ভূগর্ভস্থ পানির সমন্বিত ব্যবহার;

(জ) পানির লভ্যতা নিরূপণ;

(ঝ) পানির গুণগত মান নির্ধারণ;

(ঞ) অববাহিকাভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা; এবং

(ট) পানি ব্যবহারের অগ্রাধিকার নিরূপণ।

(৩) জাতীয় পানি সম্পদ পরিকল্পনা, উপ-ধারা (১) এর অধীন, পরিষদের নিকট অনুমোদনের জন্য উপস্থাপনের পূর্বে নির্বাহী কমিটি আন্তঃমন্ত্রণালয় আলোচনা বা মতবিনিময়ের মাধ্যমে নিশ্চিত করিবে যে, উহা এই আইন ও জাতীয় পানি নীতির সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং যথার্থ।

(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পর নির্বাহী কমিটি উক্ত পরিকল্পনার একটি খসড়া সর্বসাধারণের অভিমত গ্রহণের জন্য সরকারি গেজেটে প্রাক-প্রকাশ করিবে এবং ডিজিটাল, ইলেকট্রনিক বা প্রিন্ট মিডিয়ায় উহার বহুল প্রচারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।

(৫) জাতীয় পানি সম্পদ পরিকল্পনার কোন বিষয়ে কোন ব্যক্তির কোন মন্তব্য বা সুপারিশ থাকিলে উপ-ধারা (৪) এর অধীন গেজেট প্রকাশের তারিখ হইতে ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে নির্বাহী কমিটি বা তৎকর্তৃক নির্দিষ্টকৃত কর্মকর্তা বা কার্যালয়ের নিকট উক্ত মন্তব্য বা সুপারিশ ডিজিটাল, লিখিতভাবে বা অন্য কোন উপায়ে দাখিল বা প্রেরণ করিতে পারিবে।

(৬) উপ-ধারা (৫) এর অধীন প্রাপ্ত মন্তব্য বা সুপারিশ, যদি থাকে, বিশ্লেষণপূর্বক উহা বিবেচনায় লইয়া নির্বাহী কমিটি জাতীয় পানি সম্পদ পরিকল্পনাটি পুনঃপ্রস্তুত করিবে এবং উহা পরিষদের অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করিবে।

(৭) পরিষদ উহার সভায় জাতীয় পানি সম্পদ পরিকল্পনার উপর যথাযথ আলোচনা করিয়া উহার যথার্থতার বিষয়ে নিশ্চিত হইয়া উহা অনুমোদন করিতে পারিবে বা উহাতে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনয়ন করিতে পারিবে বা প্রয়োজনীয় সংশোধন করিবার জন্য নির্বাহী কমিটিকে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিব।

(৮) পরিষদ কর্তৃক অনুমোদনের পর নির্বাহী কমিটি জাতীয় পানি সম্পদ পরিকল্পনাটি সরকারি গেজেটে প্রকাশ করিবে এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে প্রচার করিবে।

(৯) উপ-ধারা (৭) এর অধীন জাতীয় পানি সম্পদ পরিকল্পনা চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত, এই আইন কার্যকর হইবার অব্যবহিত পূর্বে পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থা কর্তৃক প্রণীত National Water Management Plan এই আইন ও জাতীয় পানি নীতির বিধানাবলির সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, প্রয়োজনীয় অভিযোজনসহ, বলবৎ থাকিবে।

(১০) নির্বাহী কমিটি চূড়ান্তকৃত জাতীয় পানি সম্পদ পরিকল্পনার একটি কপি পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণকারী বা প্রণয়নকারী বা বাস্তবায়নকারী সকল সংস্থা বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নিকট প্রেরণ করিবে এবং এই আইন ও জাতীয় পানি নীতির বিধানাবলি অনুসরণ এবং জাতীয় পানি সম্পদ পরিকল্পনার পরিসীমার মধ্যে থাকিয়া পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ করিবে।

(১১) উপ-ধারা (১০) এর অধীন প্রদত্ত অনুরোধ পত্রে অন্যান্য বিষয়ের সহিত আরও উল্লেখ থাকিবে যে, এই আইন বা ছাড়পত্রের কোন শর্ত বা সুরক্ষা আদেশের কোন বিধি-নিষেধ বা শর্ত প্রতিপালন করা বাধ্যতামূলক এবং উপযুক্ত কারণ ব্যতীত উহা প্রতিপালন না করা জরিমানাযোগ্য এবং একটি দণ্ডনীয় অপরাধ।

(১২) এই আইনের অধীন জাতীয় পানি সম্পদ পরিকল্পনা চূড়ান্ত হইবার পর পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণকারী বা প্রণয়নকারী বা বাস্তবায়নকারী প্রত্যেক সংস্থা বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান জাতীয় পানি সম্পদ পরিকল্পনার সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া উক্ত প্রকল্প গ্রহণ বা প্রণয়ন বা বাস্তবায়ন করিতে বাধ্য থাকিবে।

ব্যাখ্যা: এই ধারায়, ‘‘অববাহিকা’’ অর্থ বৃষ্টি, বরফ, তুষারপাত, ইত্যাদি হইতে সৃষ্ট প্রবাহ যে অঞ্চল বা অঞ্চলসমূহের উপর দিয়া প্রবাহিত হইয়া জলাধারে পতিত হয়।

পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের ছাড়পত্র ইস্যুকরণ

১৬। (১) আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প জাতীয় পানি সম্পদ পরিকল্পনার সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা উহা নিশ্চিত করিবার জন্য পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণকারী, প্রণয়নকারী বা বাস্তবায়নকারী সংস্থা, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু করিবার পূর্বেই, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও শর্তে, নির্বাহী কমিটির নিকট আবেদন করিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর নির্বাহী কমিটি উক্ত আবেদন এবং সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের কাগজাদি পর্যালোচনান্তে জাতীয় পানি সম্পদ পরিকল্পনার সহিত আবেদনকৃত প্রকল্পটি সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা উহা নিশ্চিত করিবে এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও শর্তে উক্ত আবেদন মঞ্জুর করিয়া ছাড়পত্র ইস্যু করিবে অথবা নামঞ্জুর করিয়া কারণ অবহিত করিবে।

(৩) যদি কোন পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণকারী, প্রণয়নকারী বা বাস্তবায়নকারী কোন সংস্থা, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান ছাড়পত্রের কোন শর্ত লংঘন করে বা এই আইনের কোন বিধানাবলি লংঘন করে, তাহা হইলে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, প্রয়োজনীয় অনুসন্ধান করিয়া নির্বাহী কমিটি নিশ্চিত হইয়া উক্ত সংস্থা, কর্তৃপক্ষ বা প্রতিষ্ঠানকে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে শুনানির যুক্তিসঙ্গত সুযোগ প্রদান করিয়া উক্ত প্রকল্পের অনুকূলে প্রদত্ত ছাড়পত্র প্রত্যাহার করিতে পারিবে এবং উক্তরূপ প্রত্যাহারের বিষয়টি প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে বহুল প্রকাশ ও প্রচার করিতে পারিবে।

পঞ্চম অধ্যায়
পানির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ
এবং
পানি সম্পদের সুরক্ষা ও সংরক্ষণ
পানি সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা ও উহার ব্যবস্থাপনা

১৭। (১) সরকার নির্বাহী কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে জলাধার বা পানিধারক স্তরের সুরক্ষার জন্য, যথাযথ অনুসন্ধান, পরীক্ষা নিরীক্ষা বা জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যেকোন এলাকা বা উহার অংশবিশেষ বা পানি সম্পদ সংশ্লিষ্ট যেকোন ভূমিকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পানি সংকটাপন্ন এলাকা হিসাবে ঘোষণা করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে মৌজা ম্যাপ ও দাগ নম্বর উল্লেখ করিয়া পানি সংকটাপন্ন এলাকার সীমানা নির্দিষ্ট করিতে হইবে।

(৩) নির্বাহী কমিটি পানি সংকটাপন্ন এলাকার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে, এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, সুরক্ষা আদেশ দ্বারা যেকোন বিধি-নিষেধ আরোপ করিতে পারিবে।

পানি সংকটাপন্ন এলাকায় পানি সম্পদের অগ্রাধিকার ভিত্তিক ব্যবহার ও অব্যাহতি

১৮। (১) আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, জাতীয় ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর স্বার্থে, পানি সংকটাপন্ন এলাকার পানির প্রাপ্যতা সাপেক্ষে, নিম্ন ক্রমানুযায়ী পানির আহরণ বা ব্যবহার করিতে হইবে, যথা:-

(ক) খাবার পানি;

(খ) গৃহস্থালী কাজ;

(গ) কৃষি কাজ;

(ঘ) মৎস্য চাষ;

(ঙ) পরিবেশের ভারসাম্য;

(চ) বন্য প্রাণী;

(ছ) নদীতে পানি প্রবাহ অক্ষুণ্ণ রাখা;

(জ) শিল্প খাত;

(ঝ) লবণাক্ততা নিয়ন্ত্রণ;

(ঞ) বিদ্যুৎ উৎপাদন;

(ট) বিনোদন; এবং

(ঠ) অন্যান্য।

(২) নির্বাহী কমিটি, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, সংশ্লিষ্ট এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও জনগণের মতামতের ভিত্তিতে উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত ক্রম পরিবর্তন করিতে পারিবে।

(৩) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কোন পানি সংকটাপন্ন এলাকার পানির প্রাপ্যতার বিষয়ে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, ডিজিটাল, ইলেক্ট্রনিক বা প্রিন্ট মিডিয়ায় গণবিজ্ঞপ্তি দ্বারা বহুল প্রকাশ ও সাধারণ্যে প্রচার করিতে হইবে।

ভূগর্ভস্থ পানিধারক স্তরের সর্বনিম্ন সীমা নির্ধারণ ও ভূগর্ভস্থ পানি আহরণে বিধি-নিষেধ

১৯। (১) আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, নির্বাহী কমিটি, যথাযথ অনুসন্ধান, পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যেকোন এলাকার ভূগর্ভস্থ পানিধারক স্তরের সর্বনিম্ন নিরাপদ আহরণ সীমা (safe yield) নির্ধারণ করিতে পারিবে।

(২) ভূগর্ভস্থ পানিধারক স্তরের সর্বনিম্ন নিরাপদ আহরণ সীমা যে এলাকার জন্য প্রযোজ্য হইবে সেই এলাকার মৌজা ম্যাপ ও দাগ নম্বর উল্লেখ করিয়া উহার সীমানা উপ-ধারা (১) এর অধীন জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে নির্দিষ্ট করিতে হইবে।

(৩) কোন ব্যক্তি বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ, ভূগর্ভস্থ পানিধারক স্তরের সর্বনিম্ন নিরাপদ আহরণ সীমা ও বিদ্যমান অন্যান্য আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, ভূগর্ভস্থ পানি আহরণের জন্য বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, গভীর বা অগভীর নলকূপ স্থাপন করিতে পারিবে।

(৪) ভূগর্ভস্থ পানিধারক স্তর হইতে পানির নিরাপদ আহরণ নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে নির্বাহী কমিটি, এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, সুরক্ষা আদেশ দ্বারা যেকোন বিধি-নিষেধ আরোপ করিতে পারিবে।

ব্যাখ্যা: এই ধারায় “নিরাপদ আহরণ সীমা” অর্থ পানিধারক স্তর হইতে পানির এমন কোন পরিমাণ উত্তোলন যাহার ফলে পানিধারক স্তর নিরাপদ ও সুরক্ষিত থাকে।

জলস্রোতের স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিতকরণ

২০। (১) উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত কোন ব্যক্তি বা সংস্থা, কোন জলাধারে, তীরবর্তী হউক বা না হউক, স্থাপনা নির্মাণ করিয়া বা জলাধার ভরাট করিয়া বা জলাধার হইতে মাটি বা বালু উত্তোলন করিয়া জলস্রোতের স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ বা উহার প্রবাহে বাধা সৃষ্টি বা উহার গতিপথ পরিবর্তন বা পরিবর্তনের চেষ্টা করিতে পারিবে না:

তবে শর্ত থাকে যে, জলাধারের উন্নয়নের স্বার্থে বা উহার তীরের ভাঙ্গন রোধকল্পে যথাযথ সমীক্ষার ভিত্তিতে এবং উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে, জলাধারে যেকোন স্থাপনা নির্মাণ বা জলাধার সম্পূর্ণ বা উহার অংশবিশেষ ভরাট করা যাইবে:

আরও শর্ত থাকে যে, প্রাকৃতিক বন্যার কবল হইতে জনসাধারণ ও তাহাদের সম্পদ রক্ষার্থে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে, ধারা ২১ এর সামগ্রিকতাকে ক্ষুণ্ন না করিয়া জলাধারে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা যাইবে।

(২) জলস্রোতের স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে নির্বাহী কমিটি, এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, সুরক্ষা আদেশ দ্বারা যেকোন বিধি-নিষেধ আরোপ করিতে পারিবে।

বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের সুরক্ষা

২১। (১) বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের স্থায়িত্ব রক্ষার স্বার্থে উহার উপর বা উহার পার্শ্বঢালে কোন ব্যক্তি, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতীত, কোন প্রকার ঘরবাড়ি, স্থাপনা বা অবকাঠামো নির্মাণ করিতে পারিবেন না।

(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বাঁধ মজবুতকরণ এবং সরকারের বনায়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য, প্রচলিত নীতিমালা অনুসরণপূর্বক, বাঁধের পার্শ্বে সুসংগঠিত ও পরিকল্পিত উপায়ে উপযুক্ত বৃক্ষ রোপণ করা যাইবে।

(৩) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বাঁধের সুরক্ষার জন্য ব্যবহৃত ভূমির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে, সড়ক বা রাস্তা হিসাবে ব্যবহার করা যাইবে।

(৪) যদি কোন ব্যক্তি, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত, উপ-ধারা (১) এর বিধান লংঘন করিয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের উপর কোন প্রকার ঘর-বাড়ি, স্থাপনা বা অবকাঠামো নির্মাণ করেন, তাহা হইলে নির্বাহী কমিটি বিদ্যমান অন্যান্য আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, অপসারণ আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।

(৫) বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করিবার জন্য নির্বাহী কমিটি, এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, সুরক্ষা আদেশ দ্বারা যেকোন বিধি-নিষেধ আরোপ করিতে পারিবে।

জলাধার সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা

২২। (১) আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যথাযথ অনুসন্ধান, পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতে, নির্বাহী কমিটির নিকট যদি এই মর্মে প্রতীয়মান হয় যে,-

(ক) কোন প্রাকৃতিক বা অন্য কোন কারণে সুপেয় পানির তীব্র সংকট থাকায় সুপেয় পানির উৎস হিসাবে কোন দীঘি, পুকুর বা অনুরূপ কোন জলাধার সংরক্ষণ করা আশু প্রয়োজন; বা

(খ) অতিথি পাখির নিরাপদ অবস্থান, অবাধ বিচরণ এবং অভয়াশ্রম নিশ্চিত করিবার জন্য কোন হাওর, বাঁওর বা অনুরূপ কোন জলাধার সংরক্ষণ করা আশু প্রয়োজন,-

তাহা হইলে নির্বাহী কমিটি, সীমানা নির্ধারণ করিয়া, সুপেয় পানির উৎস হিসাবে সংশ্লিষ্ট জলাধার সংরক্ষণের জন্য উহার মালিক বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে সুরক্ষা আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত আদেশ জলাধারের মৌজা ম্যাপ ও দাগ নম্বর উল্লেখ করিয়া উহার সীমানা নির্দিষ্ট করিতে হইবে।

(৩) জলাধারের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে নির্বাহী কমিটি, এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, সুরক্ষা আদেশ দ্বারা যেকোন বিধি-নিষেধ আরোপ করিতে পারিবে।

পানি অঞ্চলে বিভক্তিকরণ ও উহার ব্যবস্থাপনা

২৩। পানির কার্যকর এবং সুষ্ঠু ব্যবহারের উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা সংস্থার সহিত আলোচনা ও সমন্বয়পূর্বক নির্বাহী কমিটি, যথাযথ অনুসন্ধানের ভিত্তিতে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যেকোন এলাকাকে নিম্নরূপ অঞ্চলে বিভক্ত করিতে পারিবে, যথা:-

(ক) শিল্প পানি অঞ্চল;

(খ) কৃষি পানি অঞ্চল;

(গ) ঈষৎ লোনা পানিতে মৎস্য চাষ (ব্রাকিশ একুয়াকালচার) পানি অঞ্চল;

(ঘ) হ্যাচারি পানি অঞ্চল।

(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত পানি অঞ্চলের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে নির্বাহী কমিটি, এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, সুরক্ষা আদেশ দ্বারা যেকোন বিধি-নিষেধ আরোপ করিতে পারিবে।

পানি মজুদকরণে বিধি-নিষেধ

২৪। (১) উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমতি এবং এই আইন অনুসরণ ব্যতিরেকে কোন ব্যক্তি কোন জলস্রোতের পানি প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম ধারকে মজুদ করিতে পারিবেন না।

(২) পানি মজুতকরণ কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণ করিবার জন্য নির্বাহী কমিটি, এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, সুরক্ষা আদেশ দ্বারা যেকোন বিধি-নিষেধ আরোপ করিতে পারিবে।

বন্যা নিয়ন্ত্রণ অঞ্চল ঘোষণা ও উহার ব্যবস্থাপনা

২৫। (১) বন্যার জলস্রোতের প্রবাহ নির্বিঘ্ন করিবার লক্ষ্যে যথাযথ অনুসন্ধান ও জরীপের ফলাফলের ভিত্তিতে নির্বাহী কমিটি, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যেকোন জলাভূমিকে, জাতীয় ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর স্বার্থে, বন্যা নিয়ন্ত্রণ অঞ্চল হিসাবে ঘোষণা করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে বন্যা নিয়ন্ত্রণ অঞ্চলের মৌজা ম্যাপ ও দাগ নম্বর উল্লেখ করিয়া উহার সীমানা নির্দিষ্ট করিতে হইবে।

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন ঘোষিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ অঞ্চলের সুরক্ষার জন্য নির্বাহী কমিটি, সাধারণ ক্ষেত্রে বিধি দ্বারা এবং বিশেষ ক্ষেত্রে আদেশ দ্বারা, উক্ত অঞ্চলের মধ্য দিয়া বন্যার পানির প্রবাহে বাঁধা বা জলাধারের পানির প্রবাহ পরিবর্তনকারী যেকোন কর্মকান্ড নিষিদ্ধকরণ বা উহার উপর শর্তারোপ করিতে পারিবে।

জলাধারের সমগ্র পানি আহরণে বিধি-নিষেধ

২৬। আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন জলাধারের সমগ্র পানি আহরণ করিয়া সম্পূর্ণ নিঃশেষ করা যাইবে নাঃ

তবে শর্ত থাকে যে, এই আইনের বিধানবলি সাপেক্ষে, ব্যক্তিমালিকানাধীন জলাধারের পানি আহরণের ক্ষেত্রে এই ধারার বিধানবলি প্রযোজ্য হইবে না।

সুরক্ষা আদেশ ইস্যু ও উহার দ্ধারা বিধি-নিষেধ বা শর্তারোপের ক্ষমতা

২৭। (১) আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, নির্বাহী কমিটি, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, ধারা ৪২ এর বিধান সাপেক্ষে, সুরক্ষা আদেশ ইস্যু করিতে পারিবে ও জারি করিবে।

(২) সুরক্ষা আদেশ প্রদানের পূর্বে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণকে শুনানির সুযোগ প্রদান করিয়া তাহাদের বক্তব্য বিবেচনা করিতে হইবে।

(৩) সুরক্ষা আদেশে অন্যান্য বিষয়ের সহিত আরও উল্লেখ থাকিবে যে, উপযুক্ত কারণ ব্যতীত উক্ত আদেশ প্রতিপালন করা বাধ্যতামূলক এবং উহা প্রতিপালন না করা জরিমানাযোগ্য এবং একটি দণ্ডনীয় অপরাধ।

(৪) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সুরক্ষা আদেশ জারির বিষয়টি, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, ডিজিটাল, ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় গণবিজ্ঞপ্তি দ্বারা বহুল প্রকাশ ও সাধারণ্যে প্রচার করিতে হইবে।

পানির দূষণ নিয়ন্ত্রণ

২৮। পানির দূষণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (১৯৯৫ সনের ১নং আইন) এর বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে।

ব্যাখ্যা: ‘‘পানি দূষণ’’ অর্থ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পানির ভৌত, রাসায়নিক বা জৈব গুণাবলির ক্ষতিকর কোন পরিবর্তন।

ষষ্ঠ অধ্যায়
অপরাধ, দণ্ড ও বিচার
প্রতিপালন বা সুরক্ষা আদেশ লংঘন করিবার দণ্ড, অর্থদণ্ড ও জরিমানা

২৯। (১) যদি কোন ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে এই আইনের অধীন জারিকৃত কোন প্রতিপালন বা সুরক্ষা আদেশ লংঘন করেন বা অবজ্ঞা করেন, তাহা হইলে তিনি, উপ-ধারা (২) এর বিধান সাপেক্ষে, অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড অথবা অনধিক ১০ (দশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

(২) যদি কোন ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে কোন প্রতিপালন বা সুরক্ষা আদেশ প্রথমবার লংঘন করেন বা অবজ্ঞা করেন, তাহা হইলে উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, নির্বাহী কমিটি বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা বিধি দ্বারা নির্ধারিত ক্ষেত্র, পদ্ধতি ও সীমা অনুযায়ী জরিমানা আরোপ করিয়া প্রথমবার অপরাধের দায় অবলোপন করিতে পারিবে এবং দ্বিতীয়বার বা তৎপরবর্তীতে উক্ত আদেশ ভংগ বা অবজ্ঞার ক্ষেত্রে উহা উপ-ধারা (১) এর অধীন অপরাধ হিসাবে গণ্য হইবে।

(৩) নির্বাহী কমিটি বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা উপ-ধারা (২) এর অধীন জরিমানা আরোপের পূর্বে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নোটিশের মাধ্যমে শুনানির যুক্তিসঙ্গত সুযোগ প্রদান করিবেন।

ব্যাখ্যা: এই ধারায়, “জরিমানা” অর্থে আদালত কর্তৃক প্রদত্ত অর্থদণ্ড অন্তর্ভুক্ত হইবে না।

বাধা প্রদানের দন্ড

৩০। (১) যদি কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন দায়িত্ব পালনরত কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে তাহার দায়িত্ব বা কর্তব্য পালনে ইচ্ছাকৃতভাবে বাধা প্রদান করেন অথবা উক্তরূপ কোন ব্যক্তিকে কোন প্রতিষ্ঠান, ভূমি বা প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করিবার জন্য যুক্তিসঙ্গত সুযোগ প্রদান করিতে ইচ্ছাকৃতভাবে অস্বীকার করেন বা অবহেলা করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড অথবা অনধিক ১০ (দশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

(২) কোন ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত দায়িত্ব পালনরত কোন কর্মকর্তার তলব অনুযায়ী তাহার সম্মুখে কোন রেজিস্টার, নথি বা দলিল-দস্তাবেজ উপস্থাপন করিতে ইচ্ছাকৃতভাবে অস্বীকার করিলে বা ব্যর্থ হইলে অথবা উক্তরূপ দায়িত্ব পালনরত কোন কর্মকর্তার সম্মুখে কোন ব্যক্তিকে হাজির হইতে বা তাহার জবানবন্দী গ্রহণ করিতে ইচ্ছাকৃতভাবে বাধা প্রদান করিলে বা বাধা প্রদানের চেষ্টা করিলে, তিনি অনধিক ৩ (তিন) মাস কারাদণ্ড অথবা অনধিক ২ (দুই) হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

ব্যাখ্যা: এই ধারায়, “বাধা” অর্থে হুমকিও অন্তর্ভুক্ত হইবে।

মিথ্যা তথ্য প্রদানের দণ্ড
৩১। যদি কোন ব্যক্তি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বা জ্ঞাতসারে কোন মিথ্যা বা বিকৃত তথ্য প্রদান বা তথ্য গোপন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ১ (এক) বৎসর কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৩ (তিন) হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
অপরাধের বিচার, আমলযোগ্যতা, ইত্যাদি

৩২। (১) আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ প্রথম শ্রেণীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচার্য হইবে।

(২) এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ জামিনযোগ্য (bailable) ও অ-আমলযোগ্য (non-cognizable) হইবে।

(৩) এই আইনের অধীন সংঘটিত কোন অপরাধের বিচার সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হইবে।

ফৌজদারি কার্যবিধির প্রয়োগ
৩৩। এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, এই আইনে বর্ণিত যেকোন অপরাধের তদন্ত, বিচার, আপীল এবং আনুষঙ্গিক সকল বিষয়ে ফৌজদারি কার্যবিধি প্রযোজ্য হইবে।
কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অপরাধ সংঘটন

৩৪। কোন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটিত হইলে বা কোন বিধান লঙ্ঘিত হইলে উক্ত অপরাধ বা লঙ্ঘনের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে উক্ত কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের এইরূপ প্রত্যেক পরিচালক, নির্বাহী, ম্যানেজার, সচিব বা অন্য কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী বা প্রতিনিধি উক্ত অপরাধ বা লংঘন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত অপরাধ বা লংঘন তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে অথবা উক্ত অপরাধ বা লংঘন রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়া অকৃতকার্য হইয়াছেন।

ব্যাখ্যা: এই ধারায়-

(ক) “কোম্পানী বা প্রতিষ্ঠান” অর্থে নির্গমিত বা নিবন্ধিত হউক বা না হউক, যেকোন কোম্পানী, সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, অংশীদারী কারবার, সমিতি বা একাধিক ব্যক্তি সমন্বয়ে গঠিত সংগঠন বা সংস্থা অন্তর্ভুক্ত হইবে; এবং

(খ) “পরিচালক” অর্থে অংশীদার বা পরিচালনা বোর্ডের সদস্য অন্তর্ভুক্ত হইবে।

অপরাধের সহায়তাকারী
৩৫। যদি কোন ব্যক্তি কোন অপরাধ সংঘটনে সহায়তা বা সহযোগিতা করেন বা প্ররোচিত বা প্রলুব্ধ করেন, তাহা হইলে তিনি অপরাধ সংঘটনকারীর ন্যায় একই অপরাধে অপরাধী বলিয়া গণ্য হইবেন এবং উক্ত অপরাধীর ন্যায় একইভাবে দায়ী হইবেন।
অপরাধ বিচারার্থে গ্রহণ
৩৬। মহাপরিচালক বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তার লিখিত অভিযোগ ব্যতীত কোন আদালত এই আইনের অধীন কোন মামলা বিচারার্থে আমলে গ্রহণ করিবে না।
সপ্তম অধ্যায়
বিবিধ
পানির মূল্য অব্যাহতির ক্ষমতা
৩৭। আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের সহিত পরামর্শক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, জাতীয় বা স্থানীয় স্বার্থে পানি সেবাভোগী যে কোন ব্যক্তি শ্রেণীকে কোন নির্দিষ্ট সময় বা এলাকার ক্ষেত্রে গৃহস্থালী ও সাধারণ কৃষি কাজে ব্যবহৃত পানির মূল্য প্রদানের দায় হইতে বৈষম্য ব্যতিরেকে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে।
তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার
৩৮। এই আইনের অধীন কোন কার্য সম্পাদন, ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে, এই আইনে বিধৃত পদ্ধতির অতিরিক্ত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ৩৯ নং আইন) এর বিধান সাপেক্ষে এবং উক্ত আইনে সংজ্ঞায়িত অর্থে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাইবে।
ক্ষমতা অর্পণ
৩৯। পরিষদ, সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা, এই আইনের অধীন উহার যেকোন ক্ষমতা বা কার্যাবলি প্রয়োজনবোধে এবং তৎনির্দিষ্টকৃত শর্ত সাপেক্ষে, নির্বাহী কমিটি, নির্বাহী কমিটির সভাপতি, মহাপরিচালক, পরিদর্শক বা অন্য কোন কর্মকর্তাকে অর্পণ করিতে পারিবে।
প্রবেশ, রেকর্ডপত্র যাচনা, জিজ্ঞাসাবাদ, ইত্যাদির ক্ষমতা

৪০। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, পরিষদ বা নির্বাহী কমিটি বা এতদুদ্দেশ্যে সাধারণ বা বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রত্যেক কর্মকর্তা বা পরিদর্শক নিম্ন বর্ণিত ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবে, যথা:-

(ক) যেকোন সরকারি বা বেসরকারি ভূমিতে বা প্রকল্প এলাকায় প্রবেশ এবং যেকোন ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ বা রেকর্ডপত্র বা তথ্য-উপাত্ত যাচনা ও পর্যালোচনা করা;

(খ) উক্ত ভূমি বা এলাকা বা উহাতে অবস্থিত যেকোন কিছু পরিদর্শন করা; এবং

(গ) উক্ত ভূমি বা এলাকায় যে কোন অনুসন্ধান বা নমুনা সংগ্রহ বা জরিপ পরিচালনা করা।

পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থাকে সহায়তার ক্ষেত্রে বাধ্যবাধকতা
৪১। এই আইনের অধীন ক্ষমতা প্রয়োগ বা কার্যসম্পাদনের উদ্দেশ্যে পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থা বা উহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি যেকোন সরকারি-বেসরকারি বা সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষকে, বা উহাদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে, প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য অনুরোধ করিতে পারিবে এবং এইরূপে অনুরোধ করা হইলে, উক্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারী, কর্তৃপক্ষ বা সংস্থা উক্তরূপ সহায়তা প্রদান করিবে।
আদেশ জারি

৪২। এই আইনের অধীন ইস্যুকৃত কোন নোটিশ বা আদেশ, কোন ব্যক্তির উপর জারি করা প্রয়োজন হইলে, উহা উক্ত ব্যক্তির উপরে যথাথভাবে জারি করা হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে, যদি উহা-

(ক) উক্ত ব্যক্তি বা তাহার প্রতিনিধি কর্তৃক ব্যক্তিগতভাবে গ্রহণ করা হয়;

(খ) উক্ত ব্যক্তির সর্বশেষ জ্ঞাত বাংলাদেশের বাসস্থানে বা ব্যবসায়ের স্থানে রেজিস্ট্রিকৃত ডাকযোগে প্রেরণ করা হয়;

(গ) ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে প্রেরণ বা প্রচার করা হয়; বা

(ঘ) বহুল প্রকাশিত জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশ ও প্রচার করা হয়।

অর্থ আদায়ের পদ্ধতি

৪৩। (১) এই আইনের অধীন কোন ব্যক্তির নিকট জরিমানার টাকা বা কোন পাওনা অনাদায়ী থাকিলে নির্বাহী কমিটি উপ-ধারা (২) এর বিধান সাপেক্ষে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, উহা আদায় করিতে পারিবে।

(২) কোন ব্যক্তির নিকট হইতে এই আইনের অধীন কোন পাওনা আদায়ের উদ্দেশ্যে, নির্বাহী কমিটি, আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উক্ত ব্যক্তির ব্যাংক এ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করিবার জন্য যেকোন ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করিতে পারিবে।

তথ্য প্রাপ্তির অধিকার
৪৪। প্রত্যেক ব্যক্তি তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ২০ নং আইন) এ সংজ্ঞায়িত অর্থে এবং উক্ত আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, পরিষদ বা নির্বাহী কমিটি বা এই আইনের অধীন ক্ষমতাপ্রাপ্ত যেকোন কর্মকর্তা কর্তৃক সম্পাদিত কার্য, প্রয়োগকৃত ক্ষমতা, পালনকৃত দায়িত্ব, গৃহীত ব্যবস্থা বা প্রদত্ত আদেশ সম্পর্কে তথ্য প্রাপ্তির অধিকারী হইবেন।
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
৪৫। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে এবং উহার বিধানাবলি সাপেক্ষে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ

৪৬। (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের বাংলা পাঠের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিতে পারিবে।

(২) বাংলা পাঠ ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।

রহিতকরণ ও হেফাজত

৪৭। (১) ধারা ৪ এবং ধারা ৯ এর অধীন যথাক্রমে জাতীয় পানি সম্পদ পরিষদ এবং নির্বাহী কমিটি গঠিত হইবার সংগে সংগে জাতীয় পানি সম্পদ পরিষদ এবং নির্বাহী কমিটি গঠিত সংক্রান্ত ইতোপূর্বে জারীকৃত সকল প্রজ্ঞাপন রহিত হইবে এবং উক্ত প্রজ্ঞাপনসমূহের দ্বারা গঠিত জাতীয় পানি সম্পদ পরিষদ ও নির্বাহী কমিটি বিলুপ্ত হইবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন বিলুপ্ত হওয়া সত্ত্বেও, বিলুপ্ত জাতীয় পানি সম্পদ পরিষদ, ক্ষেত্রমত, নির্বাহী কমিটি কর্তৃক কৃত কার্যক্রম বা গৃহীত ব্যবস্থা এই আইনের অধীন কৃত বা গৃহীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে এবং এই আইনের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে অব্যাহত থাকিবে।

 

তথ্যসূত্র:


Visited 276 times, 1 visits today | Have any fisheries relevant question?
বাংলাদেশ পানি আইন, ২০১৩

Visitors' Opinion

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.