শ্রেণীতাত্ত্বিক অবস্থান (Systematic position):
পর্ব: Chordata
শ্রেণী: Actinopterygii (Ray-finned fishes)
বর্গ: Cypriniformes (Carps)
অধি-পরিবার: Cobitoidea
পরিবার: Cobitidae (Loaches)
উপ-পরিবার: Cobitinae
গণ: Lepidocephalichthys
প্রজাতি: L. irrorata
শব্দতত্ত্ব (Etymology):
গ্রিক শব্দ lepas অর্থ আটকে থাকা (limpet) এবং গ্রিক শব্দ ichtys অর্থ মাছ (fish) থেকে Lepidocephalichthys শব্দটি এসেছে (Fishbase, 2014)।
সমনাম (Synonyms):
Lepidocephalus irrorata (Hora, 1921)
Lepidocephalus irroratal Menon, 1992
Lepidocephalus (L) irrorata Tilak and Husain,1981
সাধারণ নাম (Common name):
বাংলা: পুঁইয়া ( Puiya)
English: Loktak loach
ভৌগলিক বিস্তৃতি (Geographical Distribution):
বাংলাদেশ (Rahman, 1989 and 2005) এবং ভারতে (বিশেষত মনিপুর এবং মেঘালয়) এদের বিস্তৃতি দেখা যায় (Talwar and Jhingran, 1991)।
Devi and Boguskaya (2009) অনুসারে এর বিস্তৃতি ভারতের মনিপুর, মেঘালয় ও আসাম এবং বাংলাদেশ। মূলত ব্রহ্মপুত্র নদীর অববাহিকা এদের স্থানীয় আবাস।
ফেনীর মুহুরি নদী এবং সিলেটের বিভিন্ন ঝর্ণা থেকে এদের নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে (Rahman, 1989 and 2005)।
সংরক্ষণ অবস্থা (Conservation status):
আইইউসিএন বাংলাদেশ (২০০০) এর মতে এই মাছের সংরক্ষণ অবস্থা Data Deficient অর্থাৎ এই মাছের সংরক্ষণ সংশ্লিষ্ট তথ্য স্বল্পতা বা ঘাটতি রয়েছে।
Devi and Boguskaya (2009) অনুসারে এর সংরক্ষণ অবস্থা Least Concern অর্থাৎ প্রকৃতিতে এই মাছ বিস্তৃত পরিসরে পর্যাপ্ত পরিমাণে দেখতে পাওয়া যায়।
বাহ্যিক দৈহিক গঠন (External Morphology):
দেহ লম্বা। পৃষ্ঠদেশ ধনুকের ন্যায় বাঁকানো এবং অঙ্কীয়দেশ প্রায় সোজা। ছোট আকৃতির মুখ নিন্মমুখী। চোখজোড়া খুব ছোট। নাসারন্ধ্র পরস্পরের নিকটে অবস্থিত। চার জোড়া স্পর্শী (barbell) উপস্থিত যার মধ্যে দুই জোড়া চঞ্চুতে (rostral), একজোড়া উপরের চোয়ালে এবং এক জোড়া নিচের চোয়ালে অবস্থিত (Rahman, 1989 and 2005)। এদের মেরুদণ্ডে কশেরুকার সংখ্যা ৩০-৩১টি।
পৃষ্ঠপাখনা তুণ্ডের চেয়ে পুচ্ছপাখনার গোরার নিকটবর্তী স্থানে অবস্থিত। পুচ্ছ পাখনার শেষপ্রান্ত অগভীরভাবে সামান্য দ্বিধাভক্ত। মোট দৈর্ঘ্য দেহের গভীরতার ৬.৩-৭.৩ গুণ। মাথার উপরের অংশ আঁইশ দ্বারা আবৃত। পৃষ্ঠদেশ থেকে পায়ুপাখনার মাঝে ২১ সারি আঁইশ দেখতে পাওয়া যায় (Talwar and Jhingran, 1991)।
তরুণ মাছ হলুদ বর্ণের কিন্তু পরিণত মাছের বর্ণ ফ্যাকাসে জলপাই বর্ণের। চোখ থেকে তুণ্ড পর্যন্ত কালো বর্ণের লম্বা দাগ উপস্থিত। পৃষ্ঠদেশে অনিয়মিত কালো দাগ দেখতে পাওয়া যায় যা মূলত কালো বর্ণের ফোটার অধিক ঘনত্বে উপস্থিতির কারণে সৃষ্টি হয়ে থাকে। দেহের উভয় পাশে হালকাভাবে সূক্ষ্ম কালো ফোটা দেখতে পাওয়া যায়। পাখনা সাদাটে এবং দাগ বিশিষ্ট। পৃষ্ঠ ও পুচ্ছপাখনা কয়েক সারি কালো দাগ বিশিষ্ট।
পাখনা সূত্র (Fin formula):
D. 2/7; P1. 1/6; P2. 1/6; A. 2/5 (Rahman, 1989 and 2005)
D ii 6-7; A ii-iii 5; P i 6-7; V i 6 (Talwar and Jhingran, 1991)
সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য (Maximum length):
লম্বায় এটি ৩ সেমি (Rahman, 1989 and 2005) হয়ে থাকে। Talwar and Jhingran (1991) অনুসারে ৩৪ সেমি পর্যন্ত হতে পারে।
স্বভাব ও বাসস্থল (Habit and Habitat):
এরা জলজ উদ্ভিদে পরিপূর্ণ ধীরগতিতে প্রবহমান জলাশয়ের অগভীর এলাকার তলদেশে বসবাস করতে পছন্দ করে যেমন- হ্রদ, প্লাবনভূমি, ধানক্ষেত, হাওর, ঝর্ণা ইত্যাদি। এছাড়াও বালি ও নুড়ি পাথর বিশিষ্ট জলাশয়ের তলদেশও এদের বেশ পছন্দের।
প্রকৃতিতে সম্ভবত এরা ক্ষুদ্রাকার শিকারি প্রাণী যেমন পতঙ্গের শূককীট, ক্ষুদ্রাকার ক্রাশটেশিয়ানস (crustaceans) ইত্যাদি খেয়ে থাকে (Seriouslyfish, 2014)।
প্রজনন (Reproduction)
প্রজনন ঋতুতে এদের বক্ষপাখনার সপ্তম পাখনারশ্মি শক্ত ও দৃঢ় হয়ে যায়। এরা সাধারণত মে থেকে জুলাই মাসে প্রজনন করে থাকে।
এ্যাকুয়ারিয়াম ব্যবস্থাপনা (Aquarium management)
এদের অনুকূল তাপমাত্রা ২০-২৫ °C, পিএইচ ৫.৫-৭.৫ এবং হার্ডনেস ৩৬-২৬৮ পিপিএম। এ্যাকুয়ারিয়ামে এরা ডুবন্ত প্যাকেটজাত (শুকনো) খাবার খেয়ে থাকে। তবে এর পাশাপাশি হিমায়িত ও জীবন্ত ডাফনিয়া (Daphnia), আর্টেমিয়া (Artemia), ব্লাডওয়ার্ম (bloodworm) ইত্যাদি দেয়া যেতে পারে (Seriouslyfish, 2014)
বাস্তুতাত্ত্বিক গুরুত্ব (Ecological Importance)
এরা যেহেতু জলাশয়ের পচা গলিত খাবার খেয়ে থাকে তাই পানি দূষণ রোধে এদের ভূমিকা রয়েছে (Rokonuzzaman, 2009)।
মৎস্য গুরুত্ব (Fishery information):
মৎস্য খাতে এই মাছের তেমন কোন অবদান নাই (Talwar and Jhingran, 1991)। একক প্রজাতি হিসেবে এই মাছের উৎপাদন তথ্যই পাওয়া যায় না।
এ্যাকুয়ারিয়ামের বাহারি মাছ হিসেবে এর চাহিদা রয়েছে। কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে এই মাছ উৎপাদন করা সম্ভব হলে বাহারি মাছ হিসেবে দেশের পাশাপাশি বিদেশেও এই মাছ রপ্তানি করা সম্ভব।
তথ্য সূত্র (References):
- Devi, R. & Boguskaya, N. 2009. Lepidocephalichthys irrorata. The IUCN Red List of Threatened Species. Version 2014.2. <www.iucnredlist.org>. Downloaded on 05 November 2014 and from http://www.iucnredlist.org/details/166423/0.
- Fishbase (2014) Species summary: Lepidocephalichthys irrorata Hora, 1921; Loktak loach. Retrieve on 4 November 2014 and from http://www.fishbase.org/summary/24683
- Hora SL (1921) Fish and fisheries of Manipur with some observations on those of the Naga Hills. Records of the Indian Museum (Calcutta) 22(3/19): 165-214.
- IUCN Bangladesh (2000) Red book of threatened fishes of Bangladesh, IUCN- The world conservation union. xii+116 pp.
- Rahman AKA (1989) Freshwater Fishes of Bangladesh, 1st edition, Zoological Society of Bangladesh, Department of Zoology, University of Dhaka, Dhaka-1000, pp. 158-159.
- Rahman AKA (2005) Freshwater Fishes of Bangladesh, 2nd edition, Zoological Society of Bangladesh, Department of Zoology, University of Dhaka, Dhaka-1000, pp. 178-179.
- Rokonuzzaman M (2009) Lepidocephalichthys irrorata. In: Ahmed ZU, Ahmed ATA, Kabir SMH, Ahmed M, Begum ZNT, Hasan MA and Khondker M (eds.), Encyclopedia of flora and fauna of Bangladesh, Vol. 23, Freshwater fishes (in Bengali), Asiatic society of Bangladesh, Dhaka. pp. 129-130.
- Seriouslyfish (2014) Species pofile: Lepidocephalichthys cf. irrorata HORA, 1921; Loktak Loach. Retrieve on 4 November 2014 and from http://www.seriouslyfish.com/species/lepidocephalichthys-irrorata/
- Talwar PK and Jhingran AG (1991) Inland Fishes of India and Adjacent Countries, Vol. 1, Oxford & IBH Publishing Co. Pvt. Ltd. New Delhi-Calcutta, pp. 526-527.
English Feature:
পুনশ্চ:
- এই মাছটির ছবি আমাদের সংগ্রহে নেই। মাছটির ছবি গুগলে খুঁজতে এখানে ক্লিক করুন।
- আপনার সংগ্রহে মাছটির ছবি থাকলে আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ছবি শেয়ার করতে submit@bdfish.org এই ঠিকানায় ইমেইল করুন অথবা মন্তব্যে জানান।
Visited 350 times, 1 visits today | Have any fisheries relevant question?