একুশ শতকে বাংলাদেশের মাছ উৎপাদন প্রবণতা
একুশ শতকে বাংলাদেশের মাছ উৎপাদন প্রবণতা

বাংলাদেশের মৎস্য অধিদপ্তর বিগত বছরগুলোর মত ২০১৪ সালেও ২০১২-২০১৩ অর্থ বছরের মৎস্য সম্পদের বছরভিত্তিক পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। সেই পরিসংখ্যানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ এখানে তুলনামূলক বিশ্লেষণসহ উপস্থাপন করা হল। বিগত বছরের পরিসংখ্যান: ২০১১-২০১২, ২০১০-২০১১, ২০০৯-২০১০, ২০০৮-২০০৯

 

অভ্যন্তরীণ ও সামুদ্রিক জলায়তন:
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ মৎস্যের জলায়তনের মধ্যে উন্মুক্ত জলাশয়ের জলায়তনের পরিমাণ গত বছরের মত এবছরও কমলেও (-০.২২%) সামান্য বেড়েছে বদ্ধ জলাশয়ের আয়তন (+১.১০%) আর বদ্ধ ও উন্মুক্ত জলাশয়ের মোট আয়তন বেড়েছে অতি সামান্যই (+ ০.০০১)। বদ্ধ জলাশয়ের মধ্যে পুকুর ও বাঁওড়ের (অক্সবো লেক) জলায়তনের পরিমাণ অপরিবর্তিত থাকলেও বেড়েছে চিংড়ি খামার (+০.০২%) ও মৌসুমী জলাশয়ের (+ ৬.৯৩) আয়তন। অন্যদিকে উন্মুক্ত জলাশয়ের মধ্যে নদী ও মোহনা, সুন্দরবন, বিল ও কাপ্তাই হ্রদের জলায়তন অপরিবর্তিত থাকলেও গত বছরের মত এবছরও সামান্য কমেছে প্লাবনভূমির জলায়তন (- ০.৩১)। বিস্তারিত রয়েছে টেবিল-এক এ।

টেবিল-একঃ অভ্যন্তরীণ জলায়তন

বিবরণ একক পরিমাণ (২০১১-২০১২) পরিমাণ (২০১২-২০১৩) বাৎসরিক বৃদ্ধি বা হ্রাস (%)
বদ্ধ জলাশয়
পুকুর হেক্টর ৩,৭১,৩০৯ ৩,৭১,৩০৯
অক্সবো লেক (বাঁওড়) হেক্টর ৫,৪৮৮ ৫,৪৮৮
চিংড়ি খামার হেক্টর ২,৭৫,২৩২ ২,৭৫,২৭৪ + ০.০২
মৌসুমী জলাশয় হেক্টর ১,২২,০২৬ ১,৩০,৪৮৮ + ৬.৯৩
মোট হেক্টর ৭,৭৪,০৫৫ ৭,৮২,৫৫৯ + ১.১০
উন্মুক্ত জলাশয়
নদী ও মোহনা হেক্টর ৮,৫৩,৮৬৩ ৮,৫৩,৮৬৩
সুন্দরবন হেক্টর ১,৭৭,৭০০ ১,৭৭,৭০০
বিল হেক্টর ১,১৪,১৬১ ১,১৪,১৬১
কাপ্তাই লেক হেক্টর ৬৮,৮০০ ৬৮,৮০০
প্লাবনভূমি হেক্টর ২৭,১০,৭৬৬ ২৭,০২,৩০৪ – ০.৩১
মোট হেক্টর ৩৯,২৫,২৯০ ৩৯,১৬,৮২৮ – ০.২২
সর্বোমোট হেক্টর ৪৬,৯৯,৩৪৫ ৪৬,৯৯,৩৮৭ + ০.০০১

 

সামুদ্রিক মৎস্যের জলায়তনের পরিমাণের মধ্যে সমুদ্রসীমা, একান্ত অর্থনৈতিক এলাকা, মহীসোপান এলাকা ও উপকূলীয় অঞ্চলের বিস্তৃতি এবছর অপরিবর্তিত রয়েছে। বিস্তারিত টেবিল-দুই এ দেখানো হল।

টেবিল-দুইঃ সামুদ্রিক জলায়তন

বিবরণ একক পরিমাণ (২০১১-২০১২) পরিমাণ (২০১২-২০১৩) বাৎসরিক বৃদ্ধি বা হ্রাস (%)
সমুদ্রসীমা বর্গ কিলোমিটার ৯,০৬০ ৯,০৬০
একান্ত অর্থনৈতিক এলাকা বর্গ কিলোমিটার ১,৪০,৮৬০ ১,৪০,৮৬০
মহীসোপান এলাকা বর্গ নটিক্যাল মাইল ২৪,৮০০ ২৪,৮০০
উপকূলীয় অঞ্চলের বিস্তৃতি কিলোমিটার ৭১০ ৭১০

 

জেলে ও মৎস্যচাষির সংখ্যা:
অভ্যন্তরীণ ও সামুদ্রিক উভয় জলাশয়ের জেলের সংখ্যা গত বছর বাড়লেও এবছর রয়েছে অপরিবর্তিত। [টেবিল-তিন]।

টেবিল-তিনঃ জেলের সংখ্যা

বিবরণ একক পরিমাণ (২০১১-২০১২) পরিমাণ (২০১২-২০১৩) বাৎসরিক বৃদ্ধি বা হ্রাস (%)
অভ্যন্তরীণ জলাশয়ের জেলে লক্ষ জন ৮.০০ ৮.০০
সামুদ্রিক জেলে লক্ষ জন ৫.১৬ ৫.১৬
মোট লক্ষ জন ১৩.১৬ ১৩.১৬

 

গতবছর মৎস্য চাষির সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি (+৩৫০.১৩%) পেলেও এবছর রয়েছে অপরিবর্তিত। অন্যদিকে গতবছর চিংড়ি চাষির সংখ্যা হ্রাস (- ২৭.৫৭) পেলেও এবছর রয়েছে অপরিবর্তিত। [টেবিল- চার]।

 

টেবিল-চারঃ মৎস্য চাষির সংখ্যা

বিবরণ একক পরিমাণ (২০১১-২০১২) পরিমাণ (২০১২-২০১৩) বাৎসরিক বৃদ্ধি বা হ্রাস (%)
মৎস্য চাষি লক্ষ জন ১৩৮.৬৪ ১৩৮.৬৪
চিংড়ি চাষি লক্ষ জন ৮.৩৩ ৮.৩৩
মোট লক্ষ জন ১৪৬.৯৭ ১৪৬.৯৭

 

মোট মৎস্য উৎপাদন:
টেবিল পাঁচ, ছয় ও সাত অনুসারে গতবছর দেশে মোট মৎস্য উৎপাদিত হয়েছে ৩৪,১০,২৫৪ মে. টন যা গত বছরের চেয়ে ৪.৫৫ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ জলাশয় ও সামুদ্রিক উৎস হতে মৎস্য উৎপাদন বেড়েছে যথাক্রমে ৫.১৫ ও ১.৭৯ শতাংশ। বদ্ধ জলাশয় (চাষকৃত) ও উন্মুক্ত জলাশয় (আহরিত) এর মৎস্য উৎপাদন বেড়েছে যথাক্রমে ৭.৭৫ ও ০.৪৬ শতাংশ। ইঞ্জিন চালিত নৌকা দ্বারা আহরিত মৎস্য উৎপাদন ২.১২ শতাংশ বাড়লে সামান্য কমেছে (- ০.৪৯) ট্রলার দ্বারা আহরিত মৎস্য উৎপাদন।

টেবিল-পাঁচঃ মোট মৎস্য উৎপাদনঃ অভ্যন্তরীণ জলাশয় হতে-

বিবরণ একক পরিমাণ (২০১১-২০১২) পরিমাণ (২০১২-২০১৩) বাৎসরিক বৃদ্ধি বা হ্রাস (%)
বদ্ধ জলাশয় (চাষকৃত) মে. টন ১৭,২৬,০৬৭ ১৮,৫৯,৮০৮ + ৭.৭৫
উন্মুক্ত জলাশয় (আহরিত) মে. টন ৯,৫৭,০৯৫ ৯,৬১,৪৫৮ + ০.৪৬
মোট মে. টন ২৬,৮৩,১৬২ ২৮,২১,২৬৬ + ৫.১৫

 

টেবিল-ছয়ঃ মোট মৎস্য উৎপাদনঃ সামুদ্রিক জলাশয় হতে-

বিবরণ একক পরিমাণ (২০১১-২০১২) পরিমাণ (২০১২-২০১৩) বাৎসরিক বৃদ্ধি বা হ্রাস (%)
ট্রলার দ্বারা আহরিত মে. টন ৭৩,৩৮৬ ৭৩,০৩০ – ০.৪৯
আর্টিস্যানাল (ইঞ্জিন চালিত নৌকা দ্বারা আহরিত) মে. টন ৫,০৫,২৩৪ ৫,১৫,৯৫৮ + ২.১২
মোট মে. টন ৫,৭৮,৬২০ ৫,৮৮,৯৮৮ + ১.৭৯

 

টেবিল-সাতঃ মোট মৎস্য উৎপাদন

বিবরণ একক পরিমাণ (২০১১-২০১২) পরিমাণ (২০১২-২০১৩) বাৎসরিক বৃদ্ধি বা হ্রাস (%)
অভ্যন্তরীণ জলাশয় মে. টন ২৬,৮৩,১৬২ ২৮,২১,২৬৬ + ৫.১৫
সামুদ্রিক জলাশয় মে. টন ৫,৭৮,৬২০ ৫,৮৮,৯৮৮ + ১.৭৯
মোট মে. টন ৩২,৬১,৭৮২ ৩৪,১০,২৫৪ + ৪.৫৫

 

গড় মৎস্য উৎপাদন:
বদ্ধ জলাশয়ের মধ্যে পুকুরের গড় মৎস্য উৎপাদন এবছর ছিল ৩,৮৯৬ কেজি/হেক্টর যা দেশের যে কোন ধরণের জলাশয়ের গড় উৎপাদনের মধ্যে সবচেয়ে বেশী। পুকুরে চাষকৃত মাছের গড় উৎপাদন এবছর মাত্র ৭.৭৭ শতাংশ বাড়লেও গতবছর তা অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছিল ৫১.৫৭ শতাংশ। পুকুরসহ অন্যান্য উন্মুক্ত ও বদ্ধ জলাশয়ের মৎস্য উৎপাদন বাড়লেও ২৬.২৩ শতাংশ কমেছে সুন্দরবনের গড় মৎস্য উৎপাদন।

টেবিল-আটঃ গড় মৎস্য উৎপাদন (অভ্যন্তরীণ জলাশয় হতে)

বিবরণ একক পরিমাণ (২০১১-২০১২) পরিমাণ (২০১২-২০১৩) বাৎসরিক বৃদ্ধি বা হ্রাস (%)
বদ্ধ জলাশয় (চাষকৃত)
পুকুর কেজি/হেক্টর ৩,৬১৫ ৩,৮৯৬ + ৭.৭৭
মৌসুমী চাষ জলাশয় কেজি/হেক্টর ১,৪৯৪ ১,৫৩৯ + ৩.০১
বাঁওড় কেজি/হেক্টর ৯৪৫ ১,১২০ + ১৮.৫২
চিংড়ি খামার কেজি/হেক্টর ৭১৩ ৭৪৯ + ৫.০৫
উন্মুক্ত জলাশয় (আহরিত)
নদী ও মোহনা কেজি/হেক্টর ১৭১ ১৭২ + ০.৫৮
সুন্দরবন কেজি/হেক্টর ১২২ ৯০ – ২৬.২৩
বিল কেজি/হেক্টর ৭৪৬ ৭৭০ + ৩.২২
কাপ্তাই লেক কেজি/হেক্টর ১২৪ ১৩১ + ৫.৬৫
প্লাবনভূমি কেজি/হেক্টর ২৫৭ ২৬০ + ১.১৭

 

প্রজাতি ভিত্তিক মৎস্য উৎপাদন:
ইলিশের একক উৎপাদনের পরিমাণ গত বছর কমেছিল ০.০৪ শতাংশ আর এবছর কমেছে ১৩.৮৩ শতাংশ যদিও ইলিশের সামুদ্রিক উৎপাদন বেড়েছে ৮.৮৫ শতাংশ। অন্যদিকে চাষকৃত চিংড়ির উৎপাদন ২.২৫ শতাংশ বাড়লে আহরিত চিংড়ির উৎপাদন কমেছে ২০.৬ শতাংশ যা চিংড়ির মোট উৎপাদনকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করেছে। যাইহোক মোট উৎপাদিত চিংড়ির ৬০.৫০ ভাগই চাষকৃত যা গত বছরের চেয়ে ১১.৩৮ ভাগ বেশি।

টেবিল-নয়ঃ প্রজাতি ভিত্তিক মৎস্য উৎপাদন

বিবরণ একক পরিমাণ (২০১১-২০১২) পরিমাণ (২০১২-২০১৩) বাৎসরিক বৃদ্ধি বা হ্রাস (%)
ইলিশ
অভ্যন্তরীণ মে. টন ১,১৪,৪৭৫ ৯৮,৬৪৮ – ১৩.৮৩
সামুদ্রিক মে. টন ২,৩২,০৩৭ ২,৫২,৫৭৫ + ৮.৮৫
মোট মে. টন ৩,৪৬,৫১২ ৩,৫১,২২৩ + ১.৩৬
চিংড়ি
চাষকৃত মে. টন ১,৩৭,১৭৫ ১,৪০,২৬১ + ২.২৫
আহরিত (অভ্যন্তরীণ + সামুদ্রিক) মে. টন ১,১৫,৩৪৮ ৯১,৫৮১ – ২০.৬০
মোট মে. টন ২,৫২,৫২৩ ২,৩১,৮৪২ – ৮.১৯
চাষকৃত চিংড়ির শতকরা হার মে. টন ৫৪.৩২ ৬০.৫০ + ১১.৩৮

 

মৎস্য ও মৎস্যজাত দ্রব্য রপ্তানি:
মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ প্লান্টের সংখ্যা এবছর অপরিবর্তিত থাকলেও কমেছে রপ্তানির পরিমাণ ও মূল্য এমনকি জাতীয় মোট রপ্তানিতে বৈদেশিক মুদ্রার অবদানও এবছর কমেছে। বিস্তারিত টেবিল-দশ এ।

টেবিল-দশঃ মৎস্য ও মৎস্যজাত দ্রব্য রপ্তানি

বিবরণ একক পরিমাণ (২০১১-২০১২) পরিমাণ (২০১২-২০১৩) বাৎসরিক বৃদ্ধি বা হ্রাস (%)
পরিমাণ মে. টন ৯২,৪৭৯.৭০ ৮৪,৯০৫ – ৮.১৯
মূল্য কোটি টাকা ৪,৭০৩.৯৫ ৪,৩১২.৬১ – ৮.৩২
মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ প্লান্ট (ই ইউ অনুমোদিত) টি (টি) ১০০ (৭৫) ১০০ (৭৫) ০ (০)
জাতীয় মোট রপ্তানিতে বৈদেশিক মুদ্রার অবদান শতাংশ ২.৪৬ ২.০১ – ১৮.২৯

 

জাতীয় অর্থনীতিতে মৎস্য খাতের অবদান:
জিডিপিতে অবদান গত বছর ০.৯০ শতাংশ কমলেও এবছর কমেছে ০.৪৬ শতাংশ। অন্যদিকে কৃষিখাতে অবদান গত বছর বেড়েছিল ২.৪৮ শতাংশ আর এবছর বেড়েছে ২.৬৮ শতাংশ। উল্লেখ্য যে জিএনপি-তে মাছের মূল্যের তথ্য এবছর পাওয়া যায়নি। বিস্তারিত টেবিল-এগার তে।

টেবিল-এগারঃ জাতীয় অর্থনীতিতে মৎস্য খাতের অবদান

বিবরণ একক পরিমাণ (২০১১-২০১২) পরিমাণ (২০১২-২০১৩) বাৎসরিক বৃদ্ধি বা হ্রাস (%)
জিএনপি-তে মাছের মূল্য মিলিয়ন টাকা ২,৬৯,৯২৮.০০ x x
জিডিপি-তে অবদান শতাংশ ৪.৩৯ ৪.৩৭ – ০.৪৬
কৃষিখাতে অবদান শতাংশ ২২.৭৬ ২৩.৩৭ + ২.৬৮

 

মাছ গ্রহণ, চাহিদা ও ঘাটতি:
জনপ্রতি মাছের বাৎসরিক চাহিদা ও জনপ্রতি বাৎসরিক মাছ গ্রহণের পরিমাণ বেড়েছে যথাক্রমে ৭.১৪ ও ১.৯০ শতাংশ। অন্যদিকে জনপ্রতি বাৎসরিক মাছের ঘাটতিও বেড়েছে ৭৩.৩৩ শতাংশ। বাৎসরিক মাছের চাহিদা বেড়েছে ১১.৮৬ শতাংশ। প্রাণিজ আমিষ সরবরাহে মাছের অবদান অপরিবর্তিত রয়েছে। বিস্তারিত রইল টেবিল-বার তে।

টেবিল-বারঃ মাছ গ্রহণ, চাহিদা ও ঘাটতি

বিবরণ একক পরিমাণ (২০১১-২০১২) পরিমাণ (২০১২-২০১৩) বাৎসরিক বৃদ্ধি বা হ্রাস (%)
জনপ্রতি মাছের বাৎসরিক চাহিদা কেজি ২০.৪৪ ২১.৯০ + ৭.১৪
জনপ্রতি বাৎসরিক মাছ গ্রহণ কেজি ১৮.৯৪ ১৯.৩০ + ১.৯০
জনপ্রতি বাৎসরিক মাছের ঘাটতি কেজি ১.৫০ ২.৬০ + ৭৩.৩৩
বাৎসরিক মাছের চাহিদা লক্ষ মে. টন ৩৩.৯০ ৩৭.৯২ +১১.৮৬
প্রাণিজ আমিষ সরবরাহে মাছের অবদান শতাংশ (প্রায়) ৬০ ৬০

 

মৎস্য হ্যাচারি ও নার্সারির সংখ্যা এবং রেণু উৎপাদন ও সংগ্রহ:
দেশে মৎস্য হ্যাচারির সংখ্যা এবছর কমেছে ৪.৭৮% আর হ্যাচারিতে রেণু উৎপাদন কমেছে ২৪.৬৫ শতাংশ। সেই সাথে কমেছে প্রাকৃতিক উৎস থেকে রেণু সংগ্রহের পরিমাণও। মৎস্য নার্সারির সংখ্যা ও নার্সারিতে পোনা উৎপাদনের পরিমাণ জানা যায়নি। বিস্তারিত টেবিল-তের তে।

টেবিল-তেরঃ মৎস্য হ্যাচারি ও নার্সারির সংখ্যা এবং রেণু উৎপাদন ও সংগ্রহ

বিবরণ একক পরিমাণ (২০১১-২০১২) পরিমাণ (২০১২-২০১৩) বাৎসরিক বৃদ্ধি বা হ্রাস (%)
মৎস্য হ্যাচারির সংখ্যা টি ৯৮৩ ৯৩৬ – ৪.৭৮
হ্যাচারিতে রেণু উৎপাদন কেজি ৬,৪৬,৯৩৬.২৬ ৪,৮৭,৪৯৮ – ২৪.৬৫
মৎস্য নার্সারির সংখ্যা টি ৯,৪৫২ x x
নার্সারিতে পোনা মাছ উৎপাদন লক্ষ ৯৬,০০১ x x
প্রাকৃতিক উৎস হতে রেণু সংগ্রহ কেজি ৪,০৯৩ ৩৩২৬ – ১৮.৭৪

 

চিংড়ি হ্যাচারির সংখ্যা এবং রেণু উৎপাদন ও সংগ্রহ:
বাগদা হ্যাচারির সংখ্যা এবছর কমেছে ১.৬৪%। অন্যদিকে গলদা হ্যাচারির সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে কমেছে ৬৭.১৪ শতাংশ। চিংড়ির রেণু (পিএল) উৎপাদন এবছর সামান্য কমেছে। বেড়েছে (+১.৬৭%)। বাগদা ও গলদার রেণু উৎপাদনের তথ্য এবছর আলাদাভাবে পাওয়া যায়নি। প্রাকৃতিক উৎস থেকে চিংড়ির রেণু (পিএল) সংগ্রহের তথ্যও জানা যায়নি। বিস্তারিত রইল টেবিল-চৌদ্দ তে।

টেবিল-চৌদ্দঃ চিংড়ি হ্যাচারির সংখ্যা এবং রেণু উৎপাদন ও সংগ্রহ

বিবরণ একক পরিমাণ (২০১১-২০১২) পরিমাণ (২০১২-২০১৩) বাৎসরিক বৃদ্ধি বা হ্রাস (%)
বাগদা হ্যাচারির সংখ্যা (চলমান) টি ৬১ ৬০ – ১.৬৪
বাগদার রেণু (পিএল) উৎপাদন কোটি ৮২০ x x
গলদা হ্যাচারি সংখ্যা (চলমান) টি ৭০ ২৩ – ৬৭.১৪
গলদার রেণু (পিএল) উৎপাদন কোটি ১২৫.০৩ x x
চিংড়ি রেণু (পিএল) উৎপাদন কোটি ৯৪৫.০৩ ৯২৭.২৩ – ১.৮৮
প্রাকৃতিক উৎস থেকে চিংড়ির রেণু (পিএল) সংগ্রহ লক্ষ* ৯,০০০ x x

* মূল ডকুমেন্টে “হাজার লক্ষ” উল্লেখ করা হলেও এটি “লক্ষ” হওয়ার সম্ভাবনা অধিক বিধায় “লক্ষ” রাখা হল।

 

সরকারী অবকাঠামো:
মৎস্য/চিংড়ি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, মৎস্য প্রশিক্ষণ একাডেমি, চিংড়ি প্রদর্শনী খামার, চিংড়ি আহরণ ও সেবা কেন্দ্র, মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র (বিএফডিসি) ও মৎস্য গবেষণা কেন্দ্র (উপকেন্দ্র) গতবছরের মত এবছরও রয়েছে আগের মতই অপরিবর্তিত [টেবিল-পনের]।

টেবিল-পনেরঃ সরকারী অবকাঠামো (সংখ্যায়)

বিবরণ একক পরিমাণ (২০১১-২০১২) পরিমাণ (২০১২-২০১৩) বাৎসরিক বৃদ্ধি বা হ্রাস (%)
মৎস্য/চিংড়ি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র টি ০৬ ০৬
মৎস্য প্রশিক্ষণ একাডেমি টি ০১ ০১
চিংড়ি প্রদর্শনী খামার টি ০২ ০২
চিংড়ি আহরণ ও সেবা কেন্দ্র টি ২০ ২০
মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র (বিএফডিসি) টি ০৯ ০৯
মৎস্য গবেষণা কেন্দ্র (উপকেন্দ্র) টি ১০ ১০

 

সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ ইউনিট:
সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ ইউনিটের মধ্যে জাল ও বড়শীর পরিমাণ গতবছর ২১০.১৫% বাড়লেও এবছর কমেছে ২৪.২০ শতাংশ। অন্যদিকে বেড়েছে ট্রলার এবং ইঞ্জিন চালিত ও ইঞ্জিন বিহীন উভয় প্রকারের নৌকার সংখ্যা। বিস্তারিত টেবিল-ষোল তে দেওয়া হল।

টেবিল-ষোলঃ সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ ইউনিট (সংখ্যায়)

বিবরণ একক পরিমাণ (২০১১-২০১২) পরিমাণ (২০১২-২০১৩) বাৎসরিক বৃদ্ধি বা হ্রাস (%)
ট্রলার টি ১৬২ ১৮৪ + ১৩.৫৮
ইঞ্জিন চালিত নৌকা টি ২১,৭২৬ ৩০,১৬৮ + ৩৮.৮৬
ইঞ্জিন বিহীন নৌকা টি ২৩,৯৬৩ ২৭,৬৯৯ + ১৫.৫৯
জাল ও বড়শী টি ২,৪২,৪৫০ ১,৮৩,৭৭৭ – ২৪.২০

 

মৎস্য প্রজাতি:
স্বাদু পানির মাছ, বিদেশী মৎস্য প্রজাতি, স্বাদু পানির চিংড়ি প্রজাতি, সামুদ্রিক মৎস্য প্রজাতি, সামুদ্রিক চিংড়ি প্রজাতির সংখ্যা গত বছরের মত এবছরও রয়েছে অপরিবর্তিত [টেবিল-সতের]।

টেবিল-সতেরঃ মৎস্য প্রজাতি (সংখ্যায়)-

বিবরণ একক পরিমাণ (২০১১-২০১২) পরিমাণ (২০১২-২০১৩) বাৎসরিক বৃদ্ধি বা হ্রাস (%)
স্বাদু পানির মাছ টি ২৬০ ২৬০
বিদেশী মৎস্য প্রজাতি টি ১২ ১২
স্বাদু পানির চিংড়ি প্রজাতি টি ২৪ ২৪
সামুদ্রিক মৎস্য প্রজাতি টি ৪৭৫ ৪৭৫
সামুদ্রিক চিংড়ি প্রজাতি টি ৩৬ ৩৬

 

মৎস্য সেক্টরের জনবল:
বিএফআরআই ও বিএফডিসি এর জনবল তিন বছর যাবত অপরিবর্তিত থাকলেও মৎস্য অধিদপ্তরে জনবল এবছর বেড়েছে অনেকটাই বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য প্রথম শ্রেণীর জনবল যা বেড়েছে ৬২.৬৫ শতাংশ [টেবিল আঠার]।

টেবিল-আঠারঃ মৎস্য সেক্টরের জনবল

বিবরণ একক পরিমাণ (২০১১-২০১২) পরিমাণ (২০১২-২০১৩) বাৎসরিক বৃদ্ধি বা হ্রাস (%)
মৎস্য অধিদপ্তর
প্রথম শ্রেণী জন ৬৬৪ ১,০৮০ + ৬২.৬৫
অন্যান্য জন ৩,৩৮৭ ৩,৯১৯ + ২৩.৪০
মোট জন ৪,০৫১ ৪,৯৯৯ + ২৩.৪০
বিএফআরআই
প্রথম শ্রেণী জন ৭৭ ৭৭
অন্যান্য জন ১৬৯ ১৬৯
মোট জন ২৪৬ ২৪৬
বিএফডিসি
প্রথম শ্রেণী জন ৯৪ ৯৪
অন্যান্য জন ৬৯৭ ৬৯৭
মোট জন ৭৯১ ৭৯১

 

পুনশ্চঃ

  • “বাৎসরিক বৃদ্ধি বা হ্রাস (%)” বলতে বছরে কতটা হ্রাস বা বৃদ্ধি পেয়েছে তার শতকরা হার বোঝানো হয়েছে। কোন খাত ১০০% বৃদ্ধি বা হ্রাস বলতে তা আগের বছরের চেয়ে দ্বিগুণ বৃদ্ধি বা হ্রাস পেয়েছে বলে বুঝতে হবে।
  • বৃদ্ধি বা হ্রাস (%) শিরোনামের কলামে প্রদত্ত উপাত্তের সামনে + দিয়ে বাৎসরিক বৃদ্ধির হার, – দিয়ে বাৎসরিক হ্রাসের হার এবং ০ বলতে অপরিবর্তনশীল বোঝানো হয়েছে। অন্যদিকে x দিয়ে তথ্য অপ্রতুল বোঝানো হয়েছে।

 

তথ্যসূত্রঃ

 

আরও পড়তে পারেন:

 


Visited 1,938 times, 1 visits today | Have any fisheries relevant question?
বাংলাদেশের মৎস্য সম্পদ পরিসংখ্যান (২০১২-২০১৩): একটি তুলনামূলক পর্যালোচনা

Visitors' Opinion

এ বি এম মহসিন

প্রফেসর, ফিশারীজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী-৬২০৫, বাংলাদেশ। বিস্তারিত ...

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.