শ্রেণীতাত্ত্বিক অবস্থান (Systematic position)
Phylum: Chordata
Class: Actinopterygii (Ray-finned fishes)
Order: Cypriniformes (Carps)
Family: Cyprinidae (Minnows and carps)
Genus: Puntius
Species: P. chola
নামের শব্দতত্ত্ব (Etymology)
বাংলা শব্দ পুঁটি (Pungti) থেকে Puntius শব্দটি নেয়া হয়েছে। বাংলা শব্দটি ছোট আকারের সিপ্রিনিডস (Cyprinids) মাছের স্থানীয় নাম। অন্যদিকে এই পুঁটির স্থানীয় নাম চোলা (Chola) থেকে Chola শব্দটি গ্রহণ করা হয়েছে (Seriouslyfish, 2015) ।
সমনাম (Synonyms)
Barbus chola (Hamilton, 1822)
Barbus tetrarupagus (McClelland, 1839)
Barbus thermalis (Valenciennes, 1844)
Barbus titius (Hamilton, 1822)
Barbus unimaculatus (Blyth, 1860)
Capoeta chola (Hamilton, 1822)
Cyprinus chola Hamilton, 1822
Cyprinus titius Hamilton, 1822
Leuciscus thermalis Valenciennes, 1844
Puntius tetrarupagus (McClelland, 1839)
Puntius titius (Hamilton, 1822)
Systomus tetrarupagus McClelland, 1839
Systomus unimaculatus Blyth, 1860
সাধারণনাম (Common name)
বাংলাদেশ: চোলা পুঁটি, চেলা পুঁটি, কিরুন্দি পুঁটি এবং পুঁটি।
ভারত: Chal punti, Kerrundi, Katcha-karawa, Siddhari, Chindu, Thicker, Pittha-kerrundi, Chaddu-paddaka, Pakki, Karoon, Putti-kendai, Poovalli and Dhodakarsa (Talwar and Jhingran, 1991).
English: Swamp barb and Chola barb
ভৌগলিক বিস্তৃতি (Geographical Distribution)
বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সবচেয়ে বেশী দেখতে পাওয়া যায় (Seriouslyfish, 2015) । কেরালা এবং তামিল নাড়ু উপকূলীয় অঞ্চলে এদের পাওয়া যায় (Talwar and Jhingran, 1991)। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও মায়ানমারে এদের পাওয়া যায় (Talwar and Jhingran, 1991)। বর্তমানে মাছটি পাকিস্তান, ভারত, নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, মায়ানমার ও পশ্চিম থাইল্যান্ড পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করেছে (Seriouslyfish, 2015) ।
সংরক্ষণ অবস্থা (Conservation status)
বাংলাদেশে এরা বিপদগ্রস্ত নয় (Not Threatened) (IUCN Bangladesh, 2000)। এই মাছের বৈশ্বিক সংরক্ষণ অবস্থা (Global Conservation Status) মানদণ্ড ৩.১ অনুসারে Least Concern (LC) অর্থাৎ প্রকৃতিতে এই মাছ বিস্তৃত পরিসরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়। তবে এদের জনতার ধারা (Population Trend) অজানা (Dahanukar, 2015)।
বাহ্যিক দৈহিক গঠন (External Morphology)
দেহ চাপা ও গভীর। দেহের অঙ্কীয় প্রান্তের চেয়ে পৃষ্ঠীয় প্রান্ত অধিক উত্তল । ছোট ও প্রান্তীয় মুখের উপরের চোয়ালে একজোড়া স্পর্শী উপস্থিত। তুণ্ডশীর্ষ এবং পুচ্ছ-ভিত্তির মধ্যবর্তী স্থানে যেখানে পৃষ্ঠীয় প্রান্ত সবচেয়ে বেশী উঁচু সেখান থেকে পৃষ্ঠ পাখনা শুরু হয়েছে। পৃষ্ঠ পাখনার শেষ অশাখান্বিত রশ্মিটি অস্থিনির্মিত, কিছুটা শক্ত এবং মসৃণ। বক্ষ পাখনা তুণ্ড ব্যতীত মাথার দৈর্ঘ্যের সমান।
পার্শ্বরেখা সম্পূর্ণ। পার্শ্বরেখায় Talwar and Jhingran(1991) অনুসারে ২৬-২৮ টি এবং Rahman (1989 and 2005) অনুসারে ২৪-২৬ টি আঁইশ উপস্থিত।
রূপালী দেহে সোনালী বর্ণের কানকো দেখতে পাওয়া যায়। পুচ্ছপাখনার গোঁড়ায় একটি কালো বর্ণের গোলাকার দাগ দেখতে পাওয়া যায়। পৃষ্ঠপাখনার গোঁড়ায় ২য় থেকে ৫ম রশ্মির মধ্যবর্তী স্থানে একটি গোলাকার কালো দাগ উপস্থিত। পৃষ্ঠপাখনার মাঝ বরাবর এক থেকে দুই সারি কালো দাগ উপস্থিত। প্রজননের ঋতুতে এদের পুরুষদের কানকোর শেষপ্রান্ত থেকে পুচ্ছপাখনার দ্বিখণ্ডকের শেষপ্রান্ত পর্যন্ত দেহের মাঝ বরাবর একটি লাল রঙের দাগ দেখতে পাওয়া যায় ।
এদের আদর্শ দৈর্ঘ্য ও মোট দৈর্ঘ্য মাথার দৈর্ঘ্যের যথাক্রমে ৩.২-৩.৬ ও ৪.০-৪.৭ গুণ এবং দেহ উচ্চতার যথাক্রমে ২.৬-৩.০ ও ৩.৩-৩.৯ গুণ । মাথার দৈর্ঘ্য চোখের ব্যাসের ৩.৬-৪.২ গুণ ,তুণ্ডের ১.০ গুণ এবং আন্তঃ অক্ষিকোটরের দৈর্ঘ্যের ১.৫-১.৬ গুণ (Rahman, 1989 )।
পাখনা সূত্র (Fin formula)
D. 10-11 (2-3/8); P1. 15; P2. 9; A. 7-8 (2-3/5) (Rahman, 1989 and 2005)
D iii 8; A ii 5; P i 14; V i 8 (Talwar and Jhingran, 1991).
D. 11(3/8); P. 15; V. 9; A. 7(2/5); C. 19 (Shafi and Quddus, 2001)
সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য (Maximum length)
Rahman (1989 and 2005) অনুসারে ১৩.৮সেমি, Talwar and Jhingran (1991) অনুসারে ১২সেমি এবং Shafi and Quddus (2001) অনুসারে ১২.৫ সেমি।
আবাসস্থল (Habitat)
এরা বাংলাদেশের নদী, খাল, হাওর, পুকুর এবং প্লাবিত ক্ষেত্রে বসবাস করে (Rahman, 2005)। এদের প্রচুর পরিমাণে বিল, অশ্বখুরাকৃতি হ্রদ, নদী এবং খালে পাওয়া যায় (Shafi and Quddus, 2001)।
পাথুরে তলদেশের বালি, নুড়ি, শিলা-পাথর সমৃদ্ধ স্থান যার গভীরতা প্রায় ১.৫ মিটার এমন স্থান এদের পছন্দ। প্রকৃতিতে এদের পছন্দনীয় তাপমাত্রা ৬৯.৮ °F বা ২১ °C, পিএইচ ৭ এবং হার্ডনেস ২.৫° বা এর কম (Seriouslyfish, 2015) ।
খাদ্য এবং খাদ্যাভ্যাস (Food and feeding habit)
প্রকৃতিতে এরা সর্বভূত অর্থাৎ উদ্ভিদ ও প্রাণী উভয় প্রকারের খাবারই খেয়ে থাকে। কীট, পতঙ্গ এবং অন্যান্য ক্ষুদ্র অমেরুদণ্ডী, উদ্ভিদের অংশ ও পচা-গলা উদ্ভিদ বা প্রাণীর অংশবিশেষ এদের অন্যতম খাদ্য (Seriouslyfish, 2015) ।
বাস্তুতাত্ত্বিক ভূমিকা (Ecological Role)
শান্তিপ্রিয় এই মাছে জলাশয়ের মধ্যস্তরে সাঁতার কাটতে পছন্দ করে এবং জলাশয়ের ভাসমান প্রাণী ও উদ্ভিদ খেয়ে আবাসস্থল পরিস্কার রাখতে সহায়তা করে (Kibria MM, 2009)।
প্রজনন (Breeding)
প্রজননের সময়কালে পুরুষদের পায়ু ও শ্রোণী পাখনা কমলা-সাদা রঙের। অন্যদিকে নারীদের সকল পাখনাই প্রায় স্বচ্ছ (Talwar and Jhingran, 1991) । পুরুষেরা স্ত্রীদের তুলনায় উজ্জ্বল বর্ণের হয়ে থাকে অন্যদিকে স্ত্রীরা পুরুষদের তুলনামূলক বর্ণে অনুজ্জ্বল তবে আকারে বৃহৎ হয়ে থাকে। এছাড়াও প্রজনন ঋতুতে পুরুষদের কমলা বর্ণের শ্রোণীপাখনা ও পায়ুপাখনা দেখতে পাওয়া যায় যেমনটি স্ত্রীদের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায়না (Seriouslyfish, 2015) ।
এরা স্বাদুপানির জলাশয়ের মধ্য ও উপরিভাগে বাস করে এবং স্বাদুপানির অভ্যন্তরেই অভিপ্রয়াণ করে। জুন থেকে জুলাই এদের প্রজনন কাল। বর্ষাকালে ভারী বর্ষণের সময় এরা প্রজননের উদ্দেশ্যে অগভীর জলাশয় ও প্লাবনভূমিতে অভিপ্রয়াণ করে এবং জলজ উদ্ভিদের পাতার উপরে ডিম পাড়ে (Kibria MM, 2009)।
এ্যাকুয়ারিয়াম ব্যবস্থাপনা:
এদের লালন-পালনের জন্য আদর্শ এ্যাকুয়ারিয়ামের আকার ১২০ x ৪৫ সেমি। তাপমাত্রা ১৮-২৬ °C, পিএইচ ৫.৫ – ৮, হার্ডনেস ৩৬-২৬৮ পিপিএম (Seriouslyfish, 2015) । এ্যাকুয়ারিয়ামে এরা জীবন্ত হিমায়িত ব্লাডওয়ার্ম (bloodworm), ডাফনিয়া (Daphnia), আর্টিমিয়া (Artemia) ইত্যাদি খেয়ে থাকে। এছাড়াও শুষ্ক ফ্লেকস (flakes) ও দানাদার খাবার, উদ্ভিদ বা শৈবালের অংশ বিশেষ ইত্যাদি খেয়ে থাকে (Seriouslyfish, 2015) ।
অর্থনৈতিক গুরুত্ব (Economic importance)
বাংলাদেশের স্বাদুপানির উন্মুক্ত জলাশয় হতে আহরণকৃত মাছের মধ্যে পুঁটিই সর্বাধিক পরিমাণে পাওয়া যায় যার অন্যতম অংশই চোলা পুঁটি। চ্যাঁপা শুঁটকি তৈরিতে মূলত চোলা পুঁটিই ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আহরণ ঋতুতে তুলনামূলকভাবে এই পুঁটির মূল্য কম থাকায় দরিদ্র মানুষ প্রচুর পরিমাণে এই মাছ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করতে পারে (Kibria MM, 2009)। এ্যাকুয়ারিয়ামের বাহারি মাছ হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এর চাহিদা রয়েছে।
তথ্য সূত্র (References)
- Blyth E (1860) Report on some fishes received chiefly from the Sitang River and its tributary streams, Tenasserim Provinces. Journal and Proceedings of the Asiatic Society of Bengal. 29 (2): 138-174.
- Dahanukar N (2010) Puntius chola. The IUCN Red List of Threatened Species 2010: e.T166443A6210314. http://dx.doi.org/10.2305/IUCN.UK.2010-4.RLTS.T166443A6210314.en. Downloaded on 02 December 2015.
- IUCN Bangladesh. 2000. Red book of threatened fishes of Bangladesh, IUCN- The world conservation union. xii+116 pp.
- Kibria MM (2009) Puntius cholo. In: Ahmed ZU, Ahmed ATA, Kabir SMH, Ahmed M, Begum ZNT, Hasan MA and Khondker M (eds.) Encyclopedia of Flora and Fauna of Bangladesh, Vol. 23. Freshwater Fishes (In Bengali). Asiatic Society of Bangladesh, Dhaka. p. 94-95.
- Rahman AKA. 1989. Freshwater Fishes of Bangladesh, 1st edition, Zoological Society of Bangladesh, Department of Zoology, University of Dhaka, Dhaka-1000, pp. 128-129.
- Rahman AKA. 2005. Freshwater Fishes of Bangladesh, 2nd edition, Zoological Society of Bangladesh, Department of Zoology, University of Dhaka, Dhaka-1000, pp. 146-147.
- Shafi M and Quddus MMA. 2001. Bangladesher Matsho Shampad (Fisheries of Bangladesh) (in Bengali), Kabir publication. Dhaka, Bangladesh. pp. 123-124.
- Seriouslyfish (2015) Species Profile: Puntius chola (Hamilton, 1822), Swamp Barb. Downloaded from http://www.seriouslyfish.com/species/puntius-chola/ and on 12 December 2015.
- Talwar PK and Jhingran AG. 1991. Inland Fishes of India and Adjacent Countries, Vol. 1, Oxford & IBH Publishing Co. Pvt. Ltd. New Delhi-Calcutta, pp. 263-264.
English Feature:
Visited 1,380 times, 1 visits today | Have any fisheries relevant question?