গাং মাগুর স্থানীয়ভাবে গাগর নামেই বহুল পরিচিত এবং সাধারণত চলন বিলের উত্তরাংশেই (সিংড়া, নলডাঙ্গা, কালীগঞ্জ, আত্রাই) পাওয়া যায়। লম্বাটে দেহের এ মাছটির মাথা উপরে-নীচে চাপা এবং দেহের পেছনের অংশ পার্শ্বীয়ভাবে চ্যাপ্টা। এদের দেহের দু’পাশে উল্লম্বভাবে সজ্জিত ছোট ছোট দাগ বিদ্যমান। মুখে ৪ জোড়া স্পর্শী থাকে যার মধ্যে একজোড়া দেহের অর্ধেকাংশের চেয়ে বড়। গাগর বা গাং মাগুর মাছের বৈজ্ঞানিক নাম Hemibagrus menoda।
গাগরের দেহের উপরের অংশের রং ধূসরাভাব-বাদামী এবং তলদেশ হলুদাভাব বা সাদাটে। এরা সাধারণত জলাশয়ে পানির কর্মমক্ত তলদেশে থাকতে পছন্দ করে। বর্ষার শেষে জলাশয়ের পানি কমে গেলে কাদার মধ্যের গর্ত হতে প্রধানত এদের আহরণ করা হয়ে থাকে।
গাগর বা গাং মাগুর মাছ সাধারণত বর্ষাকালে প্রজনন করে থাকে। লম্বায় এরা ৮০ সে.মি. পর্যন্ত হওয়ার উদহারণ থাকলেও বাজারে প্রাপ্ত বেশীরভাগ মাছের আকার ২৫-৪৫ সে.মি. হয়ে থাকে। চমৎকার স্বাদের জন্য গাগর মাছ স্থানীয় ক্রেতাদের মাঝে খুবই জনপ্রিয় এবং যার ফলে বাজারে এই মাছের যথেষ্ট চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। বাজারে অনেক সময় জীবন্ত অবস্থায় বিক্রি হয়ে থাকে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন নদী-নালা, হাওড়-বাওড়, খাল-বিলসহ অন্যান্য স্বাদুপানির জলাশয়ে গাগর মাছ পাওয়া গেলেও বর্তমানে কোন স্থানেই প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় না। চলন বিলসহ দেশের অন্যান্য স্থানের জলাশয়ে মাছের বসবাসের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে এসব মাছের প্রাচুর্যতা বৃদ্ধি করা সম্ভব। এ উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ জলাশয়গুলোতে সাময়িক বা স্থায়ীভাবে মৎস্য অভয়াশ্রম তৈরী করা যেতে পারে।
তথ্যসূত্রঃ
শফি, মো. এবং কুদ্দুস, মি. মু. আ.; ১৯৮২। বাংলাদেশের মাৎস্য সম্পদ। ১ম সংস্করণ। বাংলা একাডেমী, ঢাকা, বাংলাদেশ। মো. পৃ. xii+৪৪৪।
Rahman, A K M; 2005. Freshwater Fishes of Bangladesh, 2nd Edition. Zoological Society of Bangladesh, Department of Zoology, University of Dhaka, Dhaka, Bangladesh, XVIII+394 pp.
Talwar, P.K. and A.G. Jhingran; 1991. Inland Fishes of India and Adjacent Countries. Oxford and IBH Publishing Co. Pvt. Ltd., New Delhi, India. LIV + 1158 pp.
Visited 2,130 times, 1 visits today | Have any fisheries relevant question?
