রুই জাতীয় মাছ চাষের বর্ষপঞ্জী: চারা পুকুর ব্যবস্থাপনা
রুই জাতীয় মাছ চাষের বর্ষপঞ্জী: চারা পুকুর ব্যবস্থাপনা

রুই জাতীয় মাছ চাষের কার্যক্রমের মধ্যে প্রধানত তিন ধরণের পুকুর (আঁতুড় পুকুর, চারা পুকুর ও মজুদ পুকুর) ও হ্যাচারি ব্যবস্থাপনা অন্তর্ভুক্ত। এ লেখায় চারা পুকুর ব্যবস্থাপনার বর্ষপঞ্জী উপস্থাপন করা হল। আগের লেখায় আঁতুড় পুকুর ব্যবস্থাপনার বর্ষপঞ্জী উপস্থাপন করা হয়েছে। আগামী লেখায় থাকবে মজুদ পুকুরহ্যাচারি ব্যবস্থাপনার বর্ষপঞ্জী।

 

বৈশাখ (এপ্রিল-মে)

  • নতুন চারা পুকুর প্রস্তুত করার এখনই সময়। নিয়ম অনুসরণ করে চারা পুকুর প্রস্তুত করে চারা পোনা মজুদ শুরু করুন। নিয়মানুযায়ী পরিমাণমত সার ও সম্পূরক খাবার প্রয়োগ করুন।
  • পুকুরটি পূর্বের বছর চাপের পোনা উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়ে থাকলে নিয়মানুসারে সীমিত হারে সার ও খাদ্য প্রয়োগ অব্যাহত রাখুন। রোগ প্রতিরোধে নিয়মানুসারে এখনো চুন ও লবণ প্রয়োগ না করে থাকলে এখনই করুন। উৎপাদিত চাপের পোনা বিক্রি শুরু করু করে দিন।
  • পুকুরটি মজুদ পুকুর হিসেবে ব্যবহার করে থাকলে দ্রুতই মাছ আহরণ করে অন্য পুকুরে স্থানান্তর করুন বা বাজারজাত করুন। পুকুরটি নতুন বছরের চারা পুকুর হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করার এখনই সময়।

 

জ্যৈষ্ঠ (মে-জুন)

  • এখনও চারা পুকুর প্রস্তুত না করে থাকলে নিয়মানুসারে প্রস্তুত করে নিন।
  • চারা পোনা মজুদের ব্যবস্থা নিন। মজুদের পর থেকে নিয়মানুযায়ী পরিমাণমত সার ও সম্পূরক খাবার প্রয়োগ করুন।
  • পুকুরটি পূর্বের বছর চাপের পোনা উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়ে থাকলে উৎপাদিত চাপের পোনা বিক্রি শেষ করে ফেলুন এবং নতুন বছরের জন্য চারা পুকুর প্রস্তুতের প্রস্তুতি নিন।
  • পুকুরটি মজুদ পুকুর হিসেবে ব্যবহার করে থাকলে দ্রুতই মাছ আহরণ করে অন্য পুকুরে স্থানান্তর করুন বা বাজারজাত করুন। নতুন বছরের চারা পুকুর হিসেবে ব্যবহারের জন্য পুকুরটি প্রস্তুত করে নিন।

 

আষাঢ় (জুন-জুলাই)

  • এখনও চারা পোনা মজুদের ব্যবস্থা না নিয়ে থাকলে এখনই ব্যবস্থা নিন।
  • মজুদ পরবর্তী সময়ে নিয়মানুযায়ী পরিমাণমত সার ও সম্পূরক খাবার প্রয়োগ করুন।
  • বৈশাখ মাসে মজুদকৃত চারা পোনা আঙ্গুলী পোনার হিসেবে আহরণ ও বিক্রয় শুরু করুন অথবা নিজের মজুদ পুকুরে ছাড়ার ব্যবস্থা নিন।
  • নতুন করে চারা পোনা মজুদ করতে চাইলে চারা পোনা সংগ্রহ ও ছাড়ার ব্যবস্থা নিন। চারা পোনা ছাড়ার তৃতীয় দিন থেকে সম্পূরক খাবার সরবরাহ করুন।
  • নতুন করে চারা পোনা মজুদ করতে না চাইলে চাপের পোনা উৎপাদনের ব্যবস্থা নিতে পারেন অথবা পুকুরটি মজুদ পুকুর হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। সেক্ষেত্রে নতুন করে পুকুর প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই। পুকুরের আয়তন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংখ্যক পোনা রেখে মজুদ পুকুর হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
  • বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। পানিতে পুকুরের পাড় ডুবে যাওয়া সম্ভাবনা থাকলে এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন যেমন- ক্ষতিগ্রস্ত পাড় বেঁধে নিন, নিচু পাড় উঁচু করে নিন, প্রয়োজনে জাল ও বানা সংগ্রহে রাখার ব্যবস্থা নিন।
  • আকাশ মেঘলা থাকলে বিশেষত পুকুরে অতিরিক্ত সবুজ বর্ণের উদ্ভিদকণা (ফাইটোপ্লাঙ্কটন) জন্মালে দ্রবীভূত অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তাই নিয়মিত পুকুর পর্যবেক্ষণ করুন এবং অক্সিজেনের অভাব দেখা দিলে তা দূরীকরণের ব্যবস্থা নিন।
  • অতিরিক্ত উদ্ভিদকণা (ফাইটোপ্লাঙ্কটন) জন্মালে সার ও খাবার সরবরাহ বন্ধ রাখুন।

 

  • শ্রাবণ (জুলাই-আগস্ট)
  • উৎপাদিত আঙ্গুলী পোনা আহরণ এবং বিক্রি করুন অথবা নিজের মজুদ পুকুরে ছাড়ার ব্যবস্থা নিন।
  • নতুন করে চারা পোনা মজুদ করতে চাইলে এখনই ব্যবস্থা নিন। আর ইতোমধ্যে মজুদ করে থাকলে নিয়মানুযায়ী পরিমাণমত সার ও সম্পূরক খাবার প্রয়োগ করুন।
  • নতুন করে চারা পোনা মজুদ করতে না চাইলে চাপের পোনা উৎপাদনের ব্যবস্থা নিতে পারেন অথবা পুকুরটি মজুদ পুকুর হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। সেক্ষেত্রে নতুন করে পুকুর প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই। পুকুরের আয়তন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংখ্যক পোনা রেখে মজুদ পুকুর হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
  • এখন ভর বর্ষা। পানিতে পুকুরে পাড় ডুবে যাওয়া সম্ভাবনা থাকলে এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন যেমন- ক্ষতিগ্রস্ত পাড় বেঁধে নিন, নিচু পাড় উঁচু করে নিন, প্রয়োজনে জাল ও বানা সংগ্রহে রাখুন।
  • আকাশ মেঘলা থাকলে বিশেষত পুকুরে অতিরিক্ত সবুজ বর্ণের উদ্ভিদকণা (ফাইটোপ্লাঙ্কটন) জন্মালে দ্রবীভূত অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তাই নিয়মিত পুকুর পর্যবেক্ষণ করুন এবং অক্সিজেনের অভাব দেখা দিলে তা দূরীকরণের ব্যবস্থা নিন।
  • অতিরিক্ত উদ্ভিদকণা (ফাইটোপ্লাঙ্কটন) জন্মালে সার ও খাবার সরবরাহ বন্ধ রাখুন।

 

ভাদ্র (আগস্ট-সেপ্টেম্বর)

  • উৎপাদিত আঙ্গুলী পোনা বিক্রি বা নিজের মজুদ পুকুরে ছাড়ার সময় শেষ হয়ে আসছে।
  • নতুন করে চারা পোনা মজুদ করতে চাইলে এখনই ব্যবস্থা নিন। ইতোমধ্যে মজুদ করে থাকলে নিয়মানুযায়ী পরিমাণমত সার ও সম্পূরক খাবার প্রয়োগ করুন।
  • নতুন করে চারা পোনা মজুদ করতে না চাইলে চাপের পোনা উৎপাদনের ব্যবস্থা নিতে পারেন অথবা পুকুরটি মজুদ পুকুর হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। সেক্ষেত্রে নতুন করে পুকুর প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই। পুকুরের আয়তন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংখ্যক পোনা রেখে মজুদ পুকুর হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
  • এখন ভর বর্ষা। পানিতে পুকুরে পাড় ডুবে যাওয়া সম্ভাবনা থাকলে এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন যেমন- ক্ষতিগ্রস্ত পাড় বেঁধে নিন, নিচু পাড় উঁচু করে নিন, প্রয়োজনে জাল ও বানা সংগ্রহে রাখুন।
  • দুর্ঘটনাবশত পুকুরের পাড় ডুবে গেলে বা ভেঙ্গে গেলে পোনা অবমুক্ত হয়ে পড়তে পারে। সেক্ষেত্রে ভেসে যাওয়া পুকুরগুলোতে ১৫ থেকে ২০ মিটার দূরত্বে একটি চটের ব্যাগে ৫ থেকে ৭ কেজি ধানের কুড়া বা গমের ভুসি ৫০ থেকে ৬০ সেন্টিমিটার পানির নিচে একটি খুঁটির সাথে বেধে দিতে হবে। তবে ব্যাগটিতে অবশ্যই ছোট ছোট ছিদ্র করে দিতে হবে। এতে খাবার পেয়ে মাছ পুকুরেই অবস্থান করবে। তবে বেশিরভাগ মাছ অবমুক্ত হয়ে পড়লে নতুন করে শুরু করাই ভাল। সেক্ষেত্রে প্রথমেই ক্ষতিগ্রস্ত পাড় মেরামত করার পর আমাছা ও রাক্ষুসে মাছ অপসারণ করে নিন এবং নতুন করে পোনা ছাড়ার ব্যবস্থা করুন।
  • আকাশ মেঘলা থাকলে বিশেষত পুকুরে অতিরিক্ত সবুজ বর্ণের উদ্ভিদকণা (ফাইটোপ্লাঙ্কটন) জন্মালে দ্রবীভূত অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তাই নিয়মিত পুকুর পর্যবেক্ষণ করুন এবং অক্সিজেনের অভাব দেখা দিলে তা দূরীকরণের ব্যবস্থা নিন।
  • অতিরিক্ত উদ্ভিদকণা (ফাইটোপ্লাঙ্কটন) জন্মালে সার ও খাবার সরবরাহ বন্ধ রাখুন।

 

আশ্বিন (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর)

  • উৎপাদিত আঙ্গুলী পোনা বিক্রি বা নিজের মজুদ পুকুরে ছাড়ার এখনই শেষ সময়।
  • নতুন করে চারা পোনা মজুদ না করে চাপের পোনা তৈরির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন। সেক্ষেত্রে নিয়মানুসারে সার ও খাদ্য প্রয়োগ অব্যাহত রাখুন। রোগ প্রতিরোধে নিয়মানুসারে চুন ও লবণ প্রয়োগ করুন।
  • অথবা পুকুরটি মজুদ পুকুর হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। সেক্ষেত্রে নতুন করে পুকুর প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই। পুকুরের আয়তন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংখ্যক পোনা রেখে মজুদ পুকুর হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
  • বর্ষা শেষ হওয়ার পথে। পুকুরে জন্মানো জলজ আগাছা অপসারণ করুন।
  • পুকুরে অতিরিক্ত সবুজ বর্ণের উদ্ভিদকণা (ফাইটোপ্লাঙ্কটন) জন্মালে দ্রবীভূত অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তাই নিয়মিত পুকুর পর্যবেক্ষণ করুন এবং অক্সিজেনের অভাব দেখা দিলে তা দূরীকরণের ব্যবস্থা নিন।
  • অতিরিক্ত উদ্ভিদকণা (ফাইটোপ্লাঙ্কটন) জন্মালে সার ও খাবার সরবরাহ বন্ধ রাখুন।

 

কার্তিক (অক্টোবর-নভেম্বর)

  • পুকুরটি চাপের পোনা উৎপাদনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকলে নিয়মানুসারে সার ও খাদ্য প্রয়োগ অব্যাহত রাখুন। নিয়মিত মাছের বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করুন। রোগ প্রতিরোধে নিয়মানুসারে চুন ও লবণ প্রয়োগ না করে থাকলে এখনই করুন।
  • আর পুকুরটি মজুদ পুকুর হিসেবে ব্যবহার করে থাকলে নিয়মানুসারে মজুদ পরবর্তী ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করুন যেমন নিয়মমত সার ও খাদ্য প্রয়োগ করুন, নিয়মিত মাছের বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করুন ইত্যাদি।

 

অগ্রাহণ (নভেম্বর-ডিসেম্বর)

  • পুকুরটি চাপের পোনা উৎপাদনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকলে নিয়মানুসারে সার ও খাদ্য প্রয়োগ অব্যাহত রাখুন তবে প্রয়োগের হার ধীরে ধীরে কমিয়ে দিন। নিয়মিত মাছের বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করুন। রোগ প্রতিরোধে নিয়মানুসারে চুন ও লবণ প্রয়োগ না করে থাকলে এখনই করুন।
  • আর পুকুরটি মজুদ পুকুর হিসেবে ব্যবহার করে থাকলে নিয়মানুসারে মজুদ পরবর্তী ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করুন যেমন নিয়মমত সার ও খাদ্য প্রয়োগ করুন তবে প্রয়োগের হার ধীরে ধীরে কমিয়ে দিন, নিয়মিত মাছের বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করুন ইত্যাদি।
  • এসময় জৈব সার ব্যবহার না করাই ভাল।

 

পৌষ (ডিসেম্বর-জানুয়ারি)

  • পুকুরটি চাপের পোনা উৎপাদনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকলে নিয়মানুসারে সার ও খাদ্য প্রয়োগ অব্যাহত রাখুন তবে প্রয়োগের হার সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখুন। নিয়মিত মাছের বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করুন। রোগ প্রতিরোধে নিয়মানুসারে চুন ও লবণ প্রয়োগ করুন।
  • আর পুকুরটি মজুদ পুকুর হিসেবে ব্যবহার করে থাকলে নিয়মানুসারে মজুদ পরবর্তী ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করুন যেমন নিয়মমত সার ও খাদ্য প্রয়োগ করুন তবে প্রয়োগের হার সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখুন, নিয়মিত মাছের বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করুন ইত্যাদি।
  • এসময় জৈব সার ব্যবহার না করাই ভাল।

 

মাঘ (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি)

  • পুকুরটি চাপের পোনা উৎপাদনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকলে নিয়মানুসারে সার ও খাদ্য প্রয়োগ অব্যাহত রাখুন তবে প্রয়োগের হার সীমিত পর্যায়ে রাখুন। নিয়মিত মাছের বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করুন। রোগ প্রতিরোধে নিয়মানুসারে চুন ও লবণ প্রয়োগ না করে থাকলে এখনই করুন।
  • আর পুকুরটি মজুদ পুকুর হিসেবে ব্যবহার করে থাকলে নিয়মানুসারে মজুদ পরবর্তী ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করুন যেমন নিয়মমত সার ও খাদ্য প্রয়োগ করুন তবে প্রয়োগের হার সীমিত পর্যায়ে রাখুন, নিয়মিত মাছের বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করুন ইত্যাদি।
  • এসময় জৈব সার ব্যবহার না করাই ভাল।
  • পুকুরটি নিজস্ব না হলে আগামী মওসুমের জন্য পুকুরের লিজ নবায়নের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন।
  • আগামী মওসুমের জন্য নতুন পুকুর লিজ নিতে চাইলে এখন থেকেই ভাল পুকুরের খোঁজ খবর নিন।
  • যারা ঋণ নিয়ে মাছ চাষ করতে আগ্রহী তারা সংশ্লিষ্ট অফিসে যোগাযোগ করুন।

 

ফাল্গুন (ফেব্রুয়ারি-মার্চ)

  • পুকুরটি চাপের পোনা উৎপাদনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকলে নিয়মানুসারে সার ও খাদ্য প্রয়োগ অব্যাহত রাখুন তবে প্রয়োগের হার ধীরে ধীরে বাড়াতে থাকুন। নিয়মিত মাছের বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করুন। রোগ প্রতিরোধে নিয়মানুসারে চুন ও লবণ প্রয়োগ না করে থাকলে এখনই করুন।
  • আর পুকুরটি মজুদ পুকুর হিসেবে ব্যবহার করে থাকলে নিয়মানুসারে মজুদ পরবর্তী ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করুন যেমন নিয়মমত সার ও খাদ্য প্রয়োগ করুন তবে প্রয়োগের হার ধীরে ধীরে বাড়াতে থাকুন, নিয়মিত মাছের বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করুন ইত্যাদি।
  • এসময় জৈব সার ব্যবহার না করাই ভাল।
  • শীত যাই যাই করছে। পুকুরের পানিও নিচের দিকে রয়েছে। প্রয়োজনে পুকুরের একটি নির্দিষ্ট স্থানে গর্ত করে পানির গভীরতা বাড়িয়ে দিন এবং এই স্থানে জলজ আগাছা যেমন কচুরিপানা ইত্যাদি দিয়ে ছায়ার ব্যবস্থা করুন। প্রয়োজনে সেঁচের মাধ্যমে পানি যোগ করুন।
  • পুকুরটি নিজস্ব না হলে আগামী মওসুমের জন্য পুকুরের লিজ নবায়নের জন্য যোগাযোগ রক্ষা করুন।
  • আগামী মওসুমের জন্য নতুন পুকুর লিজ নিতে চাইলে ভাল পুকুরের খোঁজ খবর নিয়ে অগ্রিম লিজ গ্রহণ করুন।
  • যারা ঋণ নিয়ে মাছ চাষ করতে আগ্রহী তারা সংশ্লিষ্ট অফিসে যোগাযোগ না করে থাকলে এখনই করুন।

 

চৈত্র (মার্চ-এপ্রিল)

  • পুকুরটি চাপের পোনা তৈরির লক্ষ্যে ব্যবহৃত হয়ে থাকলে নিয়মানুসারে সীমিত হারে সার ও খাদ্য প্রয়োগ অব্যাহত রাখুন। রোগ প্রতিরোধে নিয়মানুসারে এখনো চুন ও লবণ প্রয়োগ না করে থাকলে এখনই করুন। চাপের পোনা বিক্রির জন্য পোনা বিক্রেতাদের সাথে যোগাযোগ রাখুন।
  • পুকুরটি মজুদ পুকুর হিসেবে ব্যবহার করে থাকলে মাছ ধরে অন্য পুকুরে স্থানান্তর করুন বা বাজারজাত করতে থাকুন। নতুন বছরের জন্য পুকুরটি চারা পুকুর হিসেবে ব্যবহারের প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। নিজের আঁতুড় পুকুর না থাকলে চারা পোনা বিক্রেতার সাথে যোগাযোগ শুরু করুন।
  • পুকুরটি নিজস্ব না হলে আগামী মওসুমের জন্য পুকুরের লিজ নবায়ন করে ফেলুন।
  • আগামী মওসুমের জন্য নতুন পুকুর লিজ এখনও গ্রহণ না করে থাকলে এখনই করুন।
  • ঋণ নিয়ে মাছ চাষ করতে আগ্রহীরা সংশ্লিষ্ট অফিসে এখনও যোগাযোগ না করে থাকলে এখনই করুন এবং প্রয়োজনমত ঋণ গ্রহণ করুন।

 

পুনশ্চ

  • লিজের মাধ্যমে সংগৃহীত পুকুরের লিজের মূল্য যথাসময়ে পরিশোধ করুন।
  • কিস্তিভিত্তিক পরিশোধের শর্তে গৃহীত ঋণ নিয়ে থাকলে নিয়মিত ঋণের কিস্তি পরিশোধ করুন।
  • মাছ চাষের ব্যবস্থাপনামূলক তথ্যাদি ও অর্থনৈতিক হিসাব (আয়-ব্যয়) যথাযথভাবে লিপিবদ্ধ করুন।
  • প্রতি সপ্তাহেই পরবর্তী সপ্তাহের করণীয় বিষয়াদি ধারাবাহিকভাবে লিপিবদ্ধ করুন এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিন।
  • পুকুর ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত যে কোন সমস্যায় সঠিক পরামর্শের জন্য অফিস চলাকালীন সময়ে স্থানীয় মৎস্য অফিসের সাথে যোগাযোগ করুন।

 


Visited 1,954 times, 1 visits today | Have any fisheries relevant question?
রুই জাতীয় মাছ চাষের বর্ষপঞ্জী: চারা পুকুর ব্যবস্থাপনা

Visitors' Opinion

এ বি এম মহসিন

প্রফেসর, ফিশারীজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী-৬২০৫, বাংলাদেশ। বিস্তারিত ...

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.