শ্রেণীতাত্ত্বিক অবস্থান (Systematic position)
পর্ব: Chordata
শ্রেণী: Actinopterygii (Ray-finned fishes)
বর্গ: Cypriniformes (Carps)
পরিবার: Cyprinidae (Minnows or carps)
উপপরিবার: Rasborinae (=Danioninae)
গণ: Laubuca
প্রজাতি: L. laubuca
সমনাম (Synonyms)
Chela laubuca (Hamilton, 1822)
Chela huae (Tirant, 1883)
Clupea huae Tirant, 1883
Cyprinus laubuca (Hamilton, 1822)
Danio menoni Barman, 1986
Laubuca guttatus (McClelland, 1839)
Laubuca siamensis Fowler, 1939
Leuciscus laubuca (Hamilton, 1822)
Perilampus fulvescens Blyth, 1860
Perilampus guttatus McClelland, 1839
Perilampus laubuca (Hamilton, 1822)
সাধারণনাম (Common name)
বাংলা: চাপ চেলা, লাউবুকা, লাউবুছা, কাশ খয়রা
India: Laupatia, Laupati and Herbaggi (Assam); Layubuka, Dankena and Bekichela (West Bengal); Dendula and Dennahrah (Bihar and Uttar Pradesh); Bankoe (Orissa) and Mathiparab (Kerala)
English: Indian glass barb, Indian hatchet fish, Winged Danio, Blue laubuca
ভৌগলিক বিস্তৃতি (Geographical Distribution)
বাংলাদেশ ও ভারতের স্থানীয় মাছ Vishwanath (2010) । তবে বাংলাদেশ ও ভারত ছাড়াও এদেরকে মায়ানমার, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মালয় উপদ্বীপ এবং সুমাত্রায় এ মাছের বিস্তৃতি লক্ষ্য করা যায় (Talwar and Jhingran, 1991)।
বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, ইন্দো-চীন থেকে মেকং অববাহিকা পর্যন্ত বিস্তৃত পরিসরে এদের পাওয়া যায় (Fishbase, 2015)।
বাংলাদেশের সবস্থানেই পরিমিত পরিমাণে পাওয়া যায় (Rahman, 1989 and 2005)।
সংরক্ষণ অবস্থা (Conservation status)
(IUCN Bangladesh, 2000) এর তথ্যমতে যত্রতত্র আহরণ ও জলাশয়ের পরিবেশ ধ্বংসের কারণে এর প্রাচুর্যতা কমে গেছে এবং এটি বাংলাদেশে Endangered (EN) তথা বিপন্ন প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত।
বৈশ্বিক সংরক্ষণ অবস্থা Criteria ver 3.1 অনুসারে Least Concern (LC) অর্থাৎ প্রকৃতিতে বিস্তৃত পরিসরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়। জনতার ধারা (Population Trend) অজানা Vishwanath (2010)।
বাহ্যিক দৈহিক গঠন (External Morphology)
লম্বা দেহ পার্শ্বীয়ভাবে বেশ চাপা এবং দেহ গভীরতাও অনেক বেশী। উদরীয় প্রান্ত খাঁজকাটা (carinate)। মুখ তীর্যকভাবে উন্মুক্ত। উপরের চোয়াল অক্ষিকোটরের সম্মুখ কিনারা পর্যন্ত বিস্তৃত। নিচের চোয়ালের সংযোগস্থলে পিণ্ডের ন্যায় কোন গঠন থাকে না (Rahman and Chowdhury, 2009)।
পৃষ্ঠপাখনা পায়ুপাখনার বিপরীত পাশে পৃষ্ঠদেশ বরাবর সামান্য পেছনে অবস্থান করে। বক্ষপাখনা শ্রোণীপাখনার ভিত্তির মাঝ বরাবর বা প্রায় শেষপ্রান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত। শ্রোণীপাখনা পায়ুপাখনার তুলনায় বক্ষপাখনার ভিত্তির নিকটে অবস্থিত। বক্ষপাখনা বড় ও ডানা মত বিস্তৃত। এই বৈশিষ্ট্যের জন্য এই মাছ ডানাবিশিষ্ট ড্যানিও (Winged Danio) নামেও পরিচিত (Rahman and Chowdhury, 2009)। পুচ্ছপাখনা দ্বিখণ্ডিত এবং উভয় খণ্ড সমান।
আদর্শ দৈর্ঘ্য দেহ গভীরতার ২.৫-৪.১ গুণ (Talwar and Jhingran, 1991)। পার্শ্বরেখা সম্পূর্ণ। পার্শ্বরেখায় ৩৪-৩৬টি (Rahman, 1989 and 2005), ৩১-৩৭টি (Talwar and Jhingran, 1991), ৩৪-৩৭টি (Shafi and Quddus, 2001) আঁইশ বর্তমান।
অর্ধস্বচ্ছ দেহের বর্ণ রুপার মত চকচকে থেকে সবুজাভ-ধূসর। পুচ্ছদণ্ডে বেগুনী দীপ্তি দেখতে পাওয়া যায় (Talwar and Jhingran, 1991)। পুচ্ছপাখনার ভিত্তির নিকটে সোনালী প্রান্ত বিশিষ্ট গাঢ় কালো বর্ণের দাগ দেখতে পাওয়া যায়। পাখনাসমূহ হলুদাভাব থেকে উজ্জ্বল কমলা বর্ণের।
পাখনা সূত্র (Fin formula)
D. 10 (2/8); P1. 13; P2. 7; A. 21-22 (3/18-19) (Rahman, 1989 and 2005; IUCN Bangladesh, 2000)
D ii 8-10; A ii 17-22; P i 8-11; V i 6 (Talwar and Jhingran, 1991)
D. 10 (2/8); P. 10; V. 7; A. 21-22 (3/18-19); C. 19 (Shafi and Quddus, 2001)
সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য (Maximum length)
নথিভুক্ত সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য ৬.৭ সেমি (Rahman, 1989 and 2005; IUCN Bangladesh, 2000), ৫.৫ সেমি (Talwar and Jhingran, 1991), ৮.৭৫ সেমি (Shafi and Quddus, 2001), ৭ সেমি (Fishbase, 2015)।
আবাস্থল (Habitat)
এ মাছ সাধারণত খাল, বিল, বাঁওড় ও নদীতে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এছাড়াও বর্ষাকালে ধান ও পাট ক্ষেতে জমে থাকা পানিতে এদের প্রাচুর্যতা লক্ষ্য করা যায় (Shafi and Quddus, 2001)। এরা বালুময় কাদাযুক্ত স্থানে থাকতে পছন্দ করে। এরা ঝাঁক বেঁধে চলে Vishwanath (2010)।
প্রকৃতিতে স্বাদুপানির এই মাছের অনুকূল পিএইচ ৬.৫-৭.০, হার্ডনেস ৫-১০ dH, গভীরতা ০-২ মিটার, তাপমাত্রা ২৪-২৬°C (Fishbase, 2015)।
এরা ঝর্ণা ধারা, পুকুর ও ডোবার মধ্যম গভীর এলাকায় বিচরণ করে। স্থির ও দ্রুত চলমান উভয় প্রকৃতির জলাশয়েই এদের দেখতে পাওয়া যায়। সাধারণত ১৫-৩০টি মাছ ঝাঁক বেঁধে চলে (Fishbase, 2015)।
খাদ্য এবং খাদ্যাভ্যাস (Food and feeding habit)
(IUCN Bangladesh, 2000) এর বর্ণনানুসারে এটি মূলত: পানির উপরি স্তরে বিচরণকারী মাছ।এরা জলজ পোকামাকড় খেয়ে জীবন ধারণ করে। এছাড়া জলজ উদ্ভিদের পাতা ও উদ্ভিদ কাণ্ডের পাতলা নরম টিস্যুও খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে থাকে।
এরা প্রধানত পতঙ্গ (insects) খেয়ে থাকে তবে জলজ উদ্ভিদও খেতে দেখা যায় (Fishbase, 2014)।
বাস্তুতাত্ত্বিক ভূমিকা (Ecological Role)
এরা পানির তলদেশের পোকামাকড় ও শৈবাল ব্লুম নিয়ন্ত্রণ করে (Rahman and Chowdhury, 2009)।
প্রজনন (Breeding)
একই বয়সের স্ত্রীরা পুরুষের চেয়ে আকারে বড় হয়ে থাকে। দেহ উচ্চতাও স্ত্রীদের বেশি হয়ে থাকে। এদের ডিম গুচ্ছাকারে না থেকে বিচ্ছিন্নভাবে থাকে। এরা প্রত্যক্ষ মাতৃপিতৃযত্ন প্রদর্শন করে না (Seriouslyfish, 2015)।
পুকুর, ট্যাংক ও ছোট ছোট প্রবহমান জলধারায় অবাধে বংশবিস্তার করে থাকে (Talwar and Jhingran, 1991)। এরা মূলত অন্ধকারাচ্ছন্ন ভোরে প্রজনন করে থাকে এবং একটি মা মাছ একেবারে ৩০ ডিম ছাড়তে সক্ষম হয় যা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফোটে (IUCN Bangladesh, 2000, Fishbase 2015)।
এ্যাকুয়ারিয়াম ব্যবস্থাপনা (Aquarium Management)
এদের জন্য আদর্শ এ্যাকুয়ারিয়ামের আকার ১২০ x ৩০ সেমি। এ্যাকুয়ারিয়ামে অনুকূল তাপমাত্রা ১৮-২৪°C, পিএইচ ৬-৮, হার্ডনেস ৩৬-২১৫ পিপিএম।
প্রকৃতিতে এরা জলাশয়ের উপরের স্তরের খাবার খেয়ে থাকে। বিশেষত স্থলজ পতঙ্গ ও অমেরুদণ্ডী প্রাণী এদের প্রধান খাবার। এ্যাকুয়ারিয়ামে এরা জীবন্ত ও হিমায়িত ডাফনিয়া (Daphnia), আর্টেমিয়া (Artemia), ব্লাডওয়ার্ম (Bloodworm) ইত্যাদি খেয়ে থাকে (Seriouslyfish, 2015)।
মৎস্য গুরুত্ব (Fisheries importance)
একক প্রজাতি হিসেবে এর উৎপাদন তথ্য পাওয়া যায় না। অন্যান্য মাছের সাথে ধরা পড়ে।
এদেরকে টর (Tor), টাকি বা অন্যান্য শিকারি মাছ ধরার টোপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে (Talwar and Jhingran, 1991)।
সাধারণত Veshal, টানা জাল ও খেপলা জালে এ মাছ ধরা পড়ে (Shafi and Quddus, 2001)।
এ্যাকুয়ারিয়ামের বাহারি মাছ হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এর কদর রয়েছে।
তথ্য সূত্র (References)
- Blyth E (1860) Report on some fishes received chiefly from the Sitang River and its tributary streams, Tenasserim Provinces. Journal and Proceedings of the Asiatic Society of Bengal 29(2):138-174.
- Fishbase (2015) Species summary: Laubuka laubuca (Hamilton, 1822), Indian glass barb. Downloaded on 25 March 2015 and from http://www.fishbase.org/summary/12061
- Hamilton F (1822) An account of the fishes found in the river Ganges and its branches. Edinburgh & London. An account of the fishes found in the river Ganges and its branches: i-vii + 1-405, Pls. 1-39.
- IUCN Bangladesh (2000) Red book of threatened fishes of Bangladesh, IUCN- The world conservation union. xii+116 pp.
- McClelland J (1839) Indian Cyprinidae. Asiatic Researches 19(2): 217-471, Pls. 37-61.
- Rahman AKA (1989) Freshwater Fishes of Bangladesh, 1st edition, Zoological Society of Bangladesh, Department of Zoology, University of Dhaka, Dhaka-1000, pp. 84-85.
- Rahman AKA (2005) Freshwater Fishes of Bangladesh, 2nd edition, Zoological Society of Bangladesh, Department of Zoology, University of Dhaka, Dhaka-1000, pp. 101-102.
- Rahman AKA and Chowdhury GW (2009) Chela laubuca. In: Ahmed, Z.U., Ahmed, A.T.A., Kabir, S.M.H., Ahmed, M., Begum, Z.N.T., Hasan, M.A., and Khondker, M. (eds.) Encyclopedia of Flora and Fauna of Bangladesh, Vol. 23. Freshwater Fishes (In Bengali). Asiatic Society of Bangladesh, Dhaka. pp. 60-61.
- Seriouslyfish (2015) Species Profile: Laubuka laubuca (HAMILTON, 1822), Indian Glass Barb. Downloaded on 25 March 25, 2015 and from http://www.seriouslyfish.com/species/laubuka-laubuca/
- Shafi M and Quddus MMA (2001) Bangladesher Matsho Shampad (Fisheries of Bangladesh) (in Bengali), Kabir publication. Dhaka, Bangladesh. pp. 154-155.
- Talwar PK and Jhingran AG (1991) Inland Fishes of India and Adjacent Countries, Vol. 1, Oxford & IBH Publishing Co. Pvt. Ltd. New Delhi-Calcutta, pp. 316-317.
- Tirant G (1883) Mémoire sur les poissons de la rivière de Hué. Bulletin de la Société des Études Indo-chinoises. Saigon. 1883: 80-101.
- Vishwanath, W. 2010. Laubuca laubuca. The IUCN Red List of Threatened Species. Version 2014.3. Downloaded on 25 March 2015 and from http://www.iucnredlist.org/details/166649/0
English Feature:
Indian glass barb, Laubuca laubuca (Hamilton, 1822)
Photocredit:
Reference: Rainboth, W.J., 1996. Fishes of the Cambodian Mekong. FAO Species Identification Field Guide for Fishery Purposes. FAO, Rome, 265 p.
Source: Fishbase.org
Collaborator: FAO
Copyright: CC BY NC 3.0
Visited 770 times, 1 visits today | Have any fisheries relevant question?