রুই মাছের মতো দেখতে এই মাছের দেহের পৃষ্ঠদেশের বর্ণ কাল-সবুজাভাব ও অঙ্কীয়দিক কিছুটা ফ্যাকাসে যার মাধ্যমে সহজেই একে রুই মাছ থেকে আলাদা করা যায়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Labeo calbasu এবং স্থানীয়ভাবে এর বেশকিছু নাম প্রচলিক আছে যথা বাউস, কালাবাউস, বাউগনি, কালবাসু বা কলিয়া। আঁইশ মাঝারী ও গোলাকার এবং কোন কোন আঁইশে কাল চিহ্ন বর্তমান। পাখনার বর্ণ কাল। এদের মুখে দু’জোড়া স্পর্শী থাকে। বর্তমানে হ্যাচারিতে প্রণোদিত প্রজননের মাধ্যমে এর রেনু উৎপাদন করা সম্ভব হলেও এভাবে প্রাপ্ত মাছে উল্লেখত স্পর্শী দেখতে পাওয়া যায় না বা ক্ষুদ্রাকৃতির পাওয়া যায়।
জলাশয়ের তলদেশে বসবাসকারী এই মাছ তলদেশের জীবসহ কাঁদা-বালি খেয়ে থাকে। এছাড়াও শৈবাল, প্রোটোজোয়া, ক্রাসটেশিয়া ও শামুকজাতীয় প্রাণীও খেয়ে থাকে। অনুকূল পরিবেশে ৩-৪ বছরেই এরা প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে থাকে। বর্ষাকালে প্লাবিত নদীর অগভীর পানিতে প্রজনন করে থাকে। একপ্রজনন ঋতুতে মা মাছ কম-বেশী দুই লক্ষ ডিম দিয়ে থাকে।
সচারচর পাওয়া না যাওয়ায় এবং স্বাদে কিছুটা ব্যতিক্রম হওয়ায় শৌখিন মৎস্যভোজীদের কাছে এই মাছের আলাদা চাহিদা রয়েছে। তবে বর্ধনহার কম হওয়ায় মাছচাষীরা এর চাষে আগ্রহী না হলেও অনেক চাষীই চাষ করে থাকে। পুকুরে চাষ করা গেলেও সাধারণত পুকুরে ডিম দেয় না।
প্রধানত নদীর মাছ। হাওড়, বাওড়, বিলে, পুকুর প্রভৃতি জলাশয়েও এরা বাস করে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, মায়ানমার, থাইল্যান্ড ও দক্ষিণ চীনে এই মাছ দেখতে পাওয়া যায়।
তথ্যসূত্রঃ
শফি, মো. এবং কুদ্দুস, মি. মু. আ.; ১৯৮২। বাংলাদেশের মাৎস্য সম্পদ। ১ম সংস্করণ। বাংলা একাডেমী, ঢাকা, বাংলাদেশ। মো. পৃ. xii+৪৪৪।
Rahman, A K M; 2005. Freshwater Fishes of Bangladesh, 2nd Edition. Zoological Society of Bangladesh, Department of Zoology, University of Dhaka, Dhaka, Bangladesh, XVIII+394 pp.
Talwar, P.K. and A.G. Jhingran; 1991. Inland Fishes of India and Adjacent Countries. Oxford and IBH Publishing Co. Pvt. Ltd., New Delhi, India. LIV + 1158 pp.
Visited 4,988 times, 1 visits today | Have any fisheries relevant question?