শিং

এ মাছটি কানোস বা জিওল নামেও পরিচিত। এর বৈজ্ঞানিক নাম Heteropneustes fossilisএবং ইংরেজী নাম Stinging catfish। লম্বা দেহের এ মাছটির মাথা উপরে-নিচে এবং দেহ পার্শীয় ভাবে চ্যাপ্টা। দেহের রং বাদামী বা প্রায় কালো এবং ৪ জোড়া স্পর্শী বর্তমান। এ মাছ দৈর্ঘে প্রায় ৩০ সে.মি. পর্যন্ত হয়ে থাকে।

শিং মাছ নদী-নালা, খাল-বিল, হাওড়-বাওড়, পুকুরসহ সকল ধরনের স্বাদুপানির জলাশয়ে বাস করে। সাধারণত অধিক পঁচা জৈব পদার্থপূর্ণ জলাশয়ে এ মাছ অধিক দেখা যায়। এ মাছ জলাশয়ের নিচের স্তরে বা তলদেশে বসবাস করে এবং এ স্তর হতেই খাদ্য গ্রহণ করে যদিও বাতাস হতে অক্সিজেন গ্রহণের জন্য প্রতিনিয়তই এদের পানির উপরিভাগে আসতে হয়। মিশ্রভোজী স্বভাবের এ মাছ খাদ্য হিসেবে শৈবাল, কোপিপোড, পোকামাকড়, কেঁচো জাতীয় প্রাণী ইত্যাদি খেয়ে থাকে।

শিং বর্ষাকালে প্রজনন করে থাকে এবং ৩০ সে.মি. দৈর্ঘের একটি প্রাপ্তবয়স্ক স্ত্রী মাছ প্রায় ৪০-৪৫ হাজার ডিম দিয়ে থাকে। ডিমগুলো আঠালো এবং পুরুষ মাছ দ্বারা নিষিক্ত হবার পর পানিতে ডুবে যায়। এ মাছের বাজার মূল্য ও চাহিদা উভয়ই অত্যন্ত বেশী। রোগীর খাদ্য হিসেবে সুনাম অতি প্রাচীন। বিদেশে একুয়ারিয়ামেও এ মাছ পালন করা হয়।

শিং মাছে ৬৮% পানি, ০.৬% চর্বি, ২২.৮% আমিষ এবং উল্লেখযোগ্য পরিমাণে অন্যান্য পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান। এক সময় আমাদের দেশের বদ্ধ ও উন্মুক্ত জলাশয়ে প্রচুর পরিমাণে এ মাছ দেখা গেলেও বর্তমানে এদের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। পুকুরে অল্প পরিমাণে চাষ হলেও উন্মুক্ত জলাশয়ে এদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে। অধিক হারে চাষের মাধ্যমে, উন্মুক্ত জলাশয়ে পোনা অবমুক্তকরণ, অভয়াশ্রম সৃষ্টির মাধ্যমে এ মাছকে বিলুপ্তির হুমকি থেকে রা করা সম্ভব।

তথ্যসূত্রঃ
শফি, মো. এবং কুদ্দুস, মি. মু. আ.; ১৯৮২। বাংলাদেশের মাৎস্য সম্পদ। ১ম সংস্করণ। বাংলা একাডেমী, ঢাকা, বাংলাদেশ। মো. পৃ. xii+৪৪৪।

Afroze, S., N. Sultana and M.A. Hossain; 1996. Small Fish as a Source of Nutrition for Our People. In: Small Indigenous Fish Culture in Bangladesh; Edited by Felts, R.A., K. Ahmed and M. Akhteruzzaman; Integrated Food Assisted Development Project Sub Project 2 (IFADEP SP 2), Dhaka, Bangladesh. pp 57-63.

Rahman, A K M; 2005. Freshwater Fishes of Bangladesh, 2nd Edition. Zoological Society of Bangladesh, Department of Zoology, University of Dhaka, Dhaka, Bangladesh, XVIII+394 pp.

Talwar, P.K. and A.G. Jhingran; 1991. Inland Fishes of India and Adjacent Countries. Oxford and IBH Publishing Co. Pvt. Ltd., New Delhi, India. LIV + 1158 pp.

www.fishbase.org


Visited 2,569 times, 1 visits today | Have any fisheries relevant question?
শিং

Visitors' Opinion

শামস মুহাম্মদ গালিব

প্রভাষক, ফিশারীজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী, বাংলাদেশ। প্রাক্তন শিক্ষার্থী, ফিশারীজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী-৬২০৫, বাংলাদেশ। বিস্তারিত ইমেল: thegalib@gmail.com

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.