‘জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী ধনী দেশ- বিপন্ন হচ্ছে বাংলাদেশ’, ‘বরেন্দ্র অঞ্চলকে মরুকরণ হতে রক্ষা করুন, ধনী দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করুন’- শ্লোগানকে সামনে রেখে অক্সফাম-জিবি ও অক্সফাম ইন্টারন্যাশনাল এর সহযোগিতায় এবং রেইজিং পিপলস্ ভয়েস ফর ক্লাইমেট জাস্টিস এন্ড কম্প্রিহেনসিভ এগ্রারিয়ান রিফর্ম প্রজেক্ট, আশ্রয় এর আয়োজনে এবং বরেন্দ্র প্রচারাভিযান দল (আশ্রয়, এসেডো, এএসইউএস, প্রভা, জাআপ, টিএসডিএস, বিইউপি ও নিস্কৃতি)এর প্রচারণায় ৯ নভেম্বর ২০০৯ (সোমবার) রাজশাহীর নগর ভবন গ্রীণ প্লাজা চত্ত্বরে আঞ্চলিক জলবায়ু দারিদ্র শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত দারিদ্র গণশুনানী অনুষ্ঠানে প্রথম অংশের সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি এবং আশ্রয় এর পরিচালক জনাব ড. আহসান আলী এবং দ্বিতীয় অংশের সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারীজ বিভাগের সভাপতি ড. মো. আখতার হোসেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র জনাব এ. এইচ. এম. খায়রুজ্জামান লিটন ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব প্রফেসর ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার তাপু, ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগ ও ছাত্র উপদেষ্টা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া অনুষ্ঠানে অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের ধারাবাহিকতায় বিকেল ৩ টায় রাজশাহী শহরের আলুপট্টি মোড় হতে শুরু হয়ে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী নগর ভবন গ্রীণ প্লাজা চত্ত্বরে এসে শেষ হয়। উক্ত র্যালীতে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী ধনী দেশগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে জি-৮ নেতাদের প্রতিকৃতির ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শিত হয়। র্যালীতে বিপুল সংখ্যক বিভিন্ন পেশার (কৃষক, জেলে, মাহালী/তুড়ি, কুমার ইত্যাদি)আদিবাসী সহ সকল পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করে। বিকেল ৪ টায় নগর ভবন চত্ত্বরে আঞ্চলিক জলবায়ু দারিদ্র শুনানী অনুষ্ঠান কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বরেন্দ্র এলাকার বিভিন্ন অঞ্চল হতে আগত ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক/কৃষাণী জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাদের বর্তমান সংকটাপন্ন অবস্থা তুলে ধরেন। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক/কৃষাণীদের বক্তব্যের ভিত্তিতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিচারকমণ্ডলী যে সুপারিশসমূহ প্রদান করেন তার মধ্যে- শিল্পোন্নত দেশগুলোকে বাংলাদেশকে ক্ষতিপূরণ প্রদান ও আসন্ন কোপেনহেগেন সম্মেলনেই তার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ফোরাম গঠন, দেশে কলকারখানার বিকেন্দ্রীকরণ, অভ্যন্তরীণ জলাশয়সমূহের (বিশেষ করে বরেন্দ্র অঞ্চলের খাস পুকুর ও খাড়ি) সংস্কার, ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার হ্রাস ও ভূউপরিস্থিত পানির অধিক ব্যবহারের উপর জোড় দেয়া হয়। এছাড়া সরকারী খাস জলাশয়সমূহ সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের হাত হতে উদ্ধার করে প্রান্তিক ও ভূমিহীন শ্রেণীর মানুষের মধ্যে বন্টন ও দেশীয় প্রজাতির মাছের চাষপ্রযুক্তি সম্প্রসারণের সুপারিশ করা হয়।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাউল সঙ্গীত, আদিবাসী নৃত্য ও গম্ভীরা প্রদর্শিত হয়।
Visited 117 times, 1 visits today | Have any fisheries relevant question?