মাছ ধরা নিষিদ্ধ
মাছ ধরা নিষিদ্ধ

বাংলাদেশের মৎস্য সম্পদ রক্ষা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জলাশয় যেমন- নদী, উপকূলীয় এলাকা, সমুদ্র, হ্রদ ইত্যাদির সুনির্দিষ্ট অংশে বছরের কোন না সময় বিভিন্ন ধরণের মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। বাংলাদেশে কোথায় কখন কোন মাছ ধরা নিষিদ্ধ সে সম্পর্কে একটা ধারনা পেতে বিগত এক বছর কোথায় কখন মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল সে সব তথ্যের উপর ভিত্তি করে এই লেখাটি সাজানো হয়েছে।

বাংলাদেশের যেসব এলাকায় বছরের কোন না কোন সময় বিভিন্ন ধরণের মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ স্থান গুলো হচ্ছে-

  • মেঘনা অববাহিকা (চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ভোলা ও পটুয়াখালী)
  • উপকূলীয় এলাকা (সাত জেলার ২১ উপজেলা)
  • বঙ্গোপসাগর (৪০ মিটার গভীরতার মধ্যে)
  • কাপ্তাই হ্রদ
  • হালদা নদীর নাজিরহাট ব্রিজ থেকে কালুরঘাট ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিমি এলাকা
  • হালদা নদী সংযুক্ত ১৭ টি খাল
  • মৎস্য অভয়াশ্রমের ভেতরে এবং এর চারপাশের ২০ থেকে ৩০ মিটার এলাকা
বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ জলাশয়সমূহে বছরের যে সময়ে মাছ ধরা নিষিদ্ধ তা চিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে। লাল রং বিশিষ্ট মাসগুলিতে সংশ্লিষ্ট জলাশয়ে মাছ ধরা নিষিদ্ধ।
বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ জলাশয়সমূহে বছরের যে সময়ে মাছ ধরা নিষিদ্ধ তা চিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে। লাল রং বিশিষ্ট মাসগুলিতে সংশ্লিষ্ট জলাশয়ে মাছ ধরা নিষিদ্ধ।

নিচে বিস্তারিত ভাবে উল্লেখিত স্থানের কোথায় কখন কোন ধরণের নিষেধাজ্ঞা বলবত থাকে তা তথ্যসূত্র উল্লেখসহ উপস্থাপন করা হল। কোন স্থান বা তথ্য বাদ পড়ে গেলে মন্তব্যে জানান। দ্রুতই তা যোগ করে দেয়া হবে।

১। মেঘনা অববাহিকা (চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ভোলা ও পটুয়াখালী)

স্থান: মেঘনা নদীর চাঁদপুরের মতলব (উত্তর) উপজেলার ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুরের চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত মোট ১০০ কিলোমিটার এবং ভোলা সংলগ্ন তেঁতুলিয়া নদীর ইলিশার শাহবাজপুর চ্যানেলের পটুয়াখালীর চর রুস্তম পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার
সময়কাল: ১ মার্চ থেকে ৩১ এপ্রিল (২০১১): মোট দু’মাস
নিষিদ্ধের ধরন: সব ধরনের মাছ ধরা ও জাল ফেলা নিষিদ্ধ। মাছ ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহনও নিষিদ্ধ।
উদ্দেশ্য: দেশের ইলিশ সম্পদ রক্ষা, উৎপাদন বাড়ানো এবং সংরক্ষণ
আইনগত ব্যবস্থা: জেলেদের মাছ ও জাল আটক, জেলেদের কারাদণ্ড,
অন্যান্য ব্যবস্থা: জেলে ও তাদের পরিবারকে এসময় চাল, নগদ টাকা ইত্যাদি দেয়াসহ পুনর্বাসনের আওতায় আনা এবং গরু, ছাগল, সেলাই মেশিন, ভ্যানগাড়িসহ বিভিন্ন উপকরণ সহায়তা দেয়া হবে।
কর্তৃপক্ষ:
তথ্যসূত্র: আমারদেশ অনলাইন, ০১ মার্চ ২০১১; বাংলা নিউজ ২৪, ১৩ মার্চ ২০১১; লক্ষ্মীপুর জেলা তথ্য বাতায়ন, ০১ মার্চ ২০১১; প্রথম আলো, ২ মার্চ ২০১১

 

২। উপকূলীয় এলাকা (সাত জেলার ২১ উপজেলা)

স্থান: উপকূলীয় সাত জেলার ২১ উপজেলা: ভোলার লালমোহন, তজুমদ্দিন, চরফ্যাশন, মনপুরা ও দৌলতখান উপজেলা; পটুয়াখালীর দশমিনা, গলাচিপা ও কলাপাড়া উপজেলা; লৰীপুর জেলার রামগতি ও কমলনগর উপজেলা; নোয়াখালী জেলার হাতিয়া, সুবর্ণচর ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা; ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলা; চট্টগ্রামের মীরসরাই, সীতাকু- আনোয়ারা, বাঁশখালী ও সন্দ্বীপ উপজেলা; কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া ও মহেশখালী উপজেলা
সময়কাল: ১৫ – ২৪ অক্টোবর ২০১০: মোট ১০ দিন
নিষিদ্ধের ধরন: ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ
উদ্দেশ্য: ইলিশের উৎপাদন বাড়ানো
আইনগত ব্যবস্থা: মাছ-জাল আটক, জেল-জরিমানা
অন্যান্য ব্যবস্থা:
কর্তৃপক্ষ:
তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ, ১৫ অক্টোবর ২০১০; আমারদেশ অনলাইন ১৫ অক্টোবর ২০১০;

 

৩। বঙ্গোপসাগর (৪০মি গভীরতার মধ্যে)

স্থান: বঙ্গোপসাগরের ৪০মি গভীরতা পর্যন্ত
সময়কাল: সারা বছর
নিষিদ্ধের ধরন: সমুদ্রের ৪০ মিটার (১২০ ফুট) গভীরতার মধ্যে মাছ ধরা নিষিদ্ধ। চিংড়ি মাছ শিকারের ক্ষেত্রে ৪৫ মি:মি এবং অন্যান্য মাছ শিকারের ক্ষেত্রে ৬০ মি:মি ফাঁসের জাল ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা।
উদ্দেশ্য: দেশের সামুদ্রিক মৎস্য ভাণ্ডার দ্রুত নিঃশেষ হওয়ার হাত থেকে রক্ষা
আইনগত ব্যবস্থা:
অন্যান্য ব্যবস্থা:
কর্তৃপক্ষ:
তথ্যসূত্র: দৈনিক আজাদী, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১১;

 

৪। কাপ্তাই হ্রদ

স্থান: কাপ্তাই হ্রদ
সময়কাল: প্রতি বছর মে থেকে জুলাই: মোট তিন মাস (২০১০ সালে- ১০ মে থেকে ১০ আগস্ট)
নিষিদ্ধের ধরন: হ্রদে মাছ শিকার, বিপণন ও পরিবহন বন্ধ
উদ্দেশ্য: হ্রদে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ও উৎপাদন বাড়ানো
আইনগত ব্যবস্থা:
অন্যান্য ব্যবস্থা: হ্রদে ৩০ থেকে ৩৫ মেট্রিক টন রুইজাতীয় মাছের পোনা ছাড়া (২০১০), জেলেদের ভিজিএফ কার্ড বিতরণ (২০১০), মে থেকে জুন পর্যন্ত মোট ১০ হাজার ১৫৭ জন জেলেকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে, তারা মাসিক ২০ কেজি করে দুইমাস এ সহায়তা পাবেন। (২০১১)
কর্তৃপক্ষ: বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি)
তথ্যসূত্র: প্রথম আলো, ১১ মে ২০১০; বিডিনিউজ২৪, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১; দৈনিক আজাদী, ২৬ জানুয়ারী ২০১১;

 

৫। (ক) হালদা (নাজিরহাট ব্রিজ থেকে কালুরঘাট ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিমি এলাকা) এবং (খ) হালদার সংযুক্ত ১৭টি খাল

স্থান: (ক) হালদার নাজিরহাট ব্রিজ থেকে কালুরঘাট ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিমি এলাকা (খ) হালদার সংযুক্ত ১৭টি খাল
সময়কাল: (ক) সারা বছর (খ) ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত মোট ৬ মাস
নিষিদ্ধের ধরন: মাছ ধরা নিষিদ্ধ
উদ্দেশ্য: হালদা নদী ও নদী-সংযুক্ত খালসমূহে মা মাছ রক্ষা ও অবাধ বিচরণ, প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র পুনরুদ্ধার, হালদা নদীর প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্রটি আরও নিরুপদ্রব করা,
আইনগত ব্যবস্থা:
অন্যান্য ব্যবস্থা: হালদা নদীর আশপাশের গরিব মানুষের বিকল্প কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বিশেষ প্রকল্পের আওতায় ১৫৯ টন চাল বরাদ্দ। ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ২ হাজার ৬৫০ জেলেকে প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল সহায়তা হিসেবে দেয়া হবে।
কর্তৃপক্ষ:
তথ্যসূত্র: কালের কণ্ঠ, ২৩ মার্চ ২০১১; শীর্ষ নিউজ, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০;

 

৬। মৎস্য অভয়াশ্রম

স্থান: মৎস্য অভয়াশ্রমের ভেতরে এবং এর চারপাশের ২০ থেকে ৩০ মিটার এলাকা
সময়কাল: সারা বছর
নিষিদ্ধের ধরন: সকল প্রকার মাছ ধরা নিষিদ্ধ
উদ্দেশ্য: মাছের জীববৈচিত্র অর্থাৎ প্রজাতির সংখ্যা এবং মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি
আইনগত ব্যবস্থা:
অন্যান্য ব্যবস্থা:
কর্তৃপক্ষ:
তথ্যসূত্র: এগ্রোবাংলা

 


Visited 3,152 times, 1 visits today | Have any fisheries relevant question?
বাংলাদেশে কোথায় কখন কোন মাছ ধরা নিষিদ্ধ

Visitors' Opinion

Tagged on:         

এ বি এম মহসিন

প্রফেসর, ফিশারীজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী-৬২০৫, বাংলাদেশ। বিস্তারিত ...

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.