সবারই অতি পরিচিত মলা মাছকে চলন বিল এলাকায় স্থানীয়ভাবে মোয়া বা মসি নামেও ডাকা হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Amblypharyngodon mola এবং ইংরেজী নাম Mola carplet। চ্যাপ্টা দেহের লম্বাটে এ মাছটির আঁইশ ক্ষুদ্রাকার এবং মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত একটি সুস্পষ্ট ডোরা বিদ্যমান। মলা মাছের দেহের বর্ণ রূপালী এবং পার্শরেখা অসম্পূর্ণ ও চোখ বড়। এ মাছ আকারে প্রায় ১৫ সে.মি. পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে।
মলা মাছ খাল-বিল, নদী-নালা, হাওড়-বাওড়, পুকুরে, এমনকি বর্ষাকালে প্লাবিত ধানক্ষেতেও বাস করে। এরা সাধারণত পানির উপরিভাগে ঝাঁকে ঝাঁকে চলাফেরা করে। বর্ষার সময় মলা মাছ প্রচুর পরিমানে ধরা পড়ে। এরা পানির উপরের স্তর হতে খাদ্য গ্রহণ করে। খাদ্য হিসেবে এরা শৈবাল, এককোষী প্রাণী, জলজ পতঙ্গ ইত্যাদি খেয়ে থাকে।
মলা মাছ বর্ষাকালে প্রজনন করে থাকে। বর্ষাকালে চলন বিল এলাকার বিভিন্ন মৎস্য বাজার ও আড়তে প্রাচুর পরিমাণে মলা পাওয়া যায়। অত্যন্ত পুষ্টিকর ও ভালো স্বাদের জন্য ক্রেতাদের কাছে এর ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে। মলা মাছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ রয়েছে যা রাতকানা প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকর।
এখনো বাজারে মলা মাছ দেখা গেলেও পূর্বের মত সেই প্রাচুর্যতা আর নেই। বেশী করে ডিমওয়ালা মাছ ধরার ফলে দিন দিন এ মাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এ মাছের প্রাচুর্যতা রক্ষায় বর্ষার শুরুতে প্রজননক্ষম মাছ ধরা হতে আমাদের দেশের জেলেদের বিরত থাকা থেকে উৎসাহিত করা প্রয়োজন।
তথ্যসূত্রঃ
শফি, মো. এবং কুদ্দুস, মি. মু. আ.; ১৯৮২। বাংলাদেশের মাৎস্য সম্পদ। ১ম সংস্করণ। বাংলা একাডেমী, ঢাকা, বাংলাদেশ। মো. পৃ. xii+৪৪৪।
Rahman, A K M; 2005. Freshwater Fishes of Bangladesh, 2nd Edition. Zoological Society of Bangladesh, Department of Zoology, University of Dhaka, Dhaka, Bangladesh, XVIII+394 pp.
Talwar, P.K. and A.G. Jhingran; 1991. Inland Fishes of India and Adjacent Countries. Oxford and IBH Publishing Co. Pvt. Ltd., New Delhi, India. LIV + 1158 pp.
Visited 1,926 times, 1 visits today | Have any fisheries relevant question?