ব্ল্যাক কার্প মাছটি ১৯৮৩ সালে চীন হতে মৎস্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে বাংলাদেশে আনা হয় (Rahman, 2007; Khaleque, 2002; Galib and Mohsin, 2011)। এর বৈজ্ঞানিক নাম Mylopharyngodon piceus । এটি স্নেইল কার্প নামেও পরিচিত (Galib and Mohsin, 2011)। বাংলাদেশে এই মাছটি মূলতঃ শামুক নিয়ন্ত্রণ এবং চাষের উদ্দেশ্যে আমদানী করা হয়েছিল (Rahman, 2007; Khaleque, 2002; Galib and Mohsin, 2011)। ব্ল্যাক কার্প মাছের আদি নিবাস চীন (Khaleque, 2002)।
শ্রেণীবিন্যাসগত অবস্থান
Phylum: Chordata
Class: Actinopterygii (Ray-finned fishes)
Order: Cypriniformes (Carps)
Family: Cyprinidae (Minnows and carps)
Genus: Mylopharyngodon
Species: M. piceus
সিনোনেমসমূহ
Barbus tonkinensis Sauvage, 1884
Leucisculus fuscus Oshima, 1920
Leuciscus aethiops Basilewsky, 1855
Leuciscus dubius Bleeker, 1864
Leuciscus piceus Richardson, 1846
Myloleuciscus aethiops (Basilewsky, 1855)
Myloleuciscus atripinnis Garman, 1912
Myloleucus aethiops (Basilewsky, 1855)
Mylopharyngodon aethiops (Basilewsky, 1855).
দেহবর্ণনা: ব্ল্যাক কার্পের দেহ লম্বাটে এবং পার্শ্বীয়ভাবে চাপা। পার্শ্বরেখা সম্পূর্ণ। সমগ্র দেহ শক্ত আইশ দ্বারা আবৃত (Galib and Mohsin, 2011)। দেহের উপরের অর্ধাংশ নিম্ন অর্ধাংশ হতে অধিকতর কালো বর্ণের।
ফিন ফর্মূলা: D. 8; P1. 16; P2. 9; A. 9; C. 16 (Galib and Mohsin, 2011).
খাদ্য ও খাদ্যাভাস: ১৫ সেমি হতে ছোট ব্ল্যাক কার্প মূলতঃ প্ল্যাকটন খায় এবং যখন এদের আকার ২০-৩০ সেমি হয় তখন এরা শামুক, ঝিনুক ইত্যাদি খাদ্য হিসেবে গ্রহন করে। ব্ল্যাক কার্প মাংশাসী ধরনের মাছ। এরা প্রতিদিন দেহ ওজনেন ২০% হারে খাবার খেয়ে থাকে (Khaleque, 2002)।
প্রজনন: ব্ল্যাক কার্প সাধারণত প্রাকৃতিক উন্মুক্ত জলাশয়ে প্রজনন করে থাকে যেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানির স্রোত বিদ্যমান থাকে (Galib and Mohsin, 2011)। এরা ৪-৫ বছর বয়সে যৌন পরিপক্কতা লাভ করে এবং একই বয়সের পুরুষ মাছ অপেক্ষা স্ত্রী মাছটির ওজন অধিক হয়ে থাকে (Khaleque, 2002)। ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের কেন্দ্রীয় মৎস্য হ্যাচারীতে ব্ল্যাক কার্পের প্রণদিত প্রজনন করা হয়ে থাকে (Siddiqui and Choudhury, 1996) এবং যশোরের চাচড়া এলাকার বিভিন্ন হ্যাচারীতেও এর প্রণদিত প্রজনন করানোর মাধ্যমে পোনা উৎপাদন করা হয় (Galib, 2011; Galib and Mohsin, 2011)।
রোগবালাই: ব্ল্যাক কার্প খুবই শক্ত একটি মাছ এবং এদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অধিক। তবে মাঝে মাঝে এরা ক্ষতরোগে আক্রন্ত হয় (Siddiqui and Choudhury, 1996)।
প্রভাব: সঠিক মাত্রায় ব্ল্যাক কার্প মজুদের মাধ্যমে কোন জলাশয়ের অতিরিক্ত শামুক বা ঝিনুক নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। বালুহর বাওরে এই পদ্ধতিতে সফলতা লাভ করা গেছে (Rahman, 2007)।
ব্ল্যাক কার্প মজুদের কিছু কিছু ক্ষতিকর দিকও আছে। এরা প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো শামুক বা ঝিনুক খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে কোন জলাশয়ে তাদের অস্তিত্ত্ব হুমকীর মুখে ফেলে দিতে পারে। ফলাফলরূপে যে সকল প্রাণী ঐ শামুক-ঝিনুক খেয়ে থাকে (কিছু জলজ পাখি, বিশেষ করে অভিপ্রয়াণিক পাখি) তাদের উপরে বিরূপ প্রভাব পড়ে (Rahman, 2007)। এদের মাছচাষের পুকুরে ২ বছরের বেশী রাখা উচিত নয় (Khaleque, 2002)।
অর্থনৈতিক গুরুত্ব: খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশে চাষকৃত কার্পজাতীয় মাছের মধ্যে অন্যতম এই মাছটি দেশের উত্তরাংশে ব্যাপক পরিসরে চাষ হয় না (Galib and Mohsin, 2011)।
_____________________________________
তথ্যসূত্র:
Basilewsky S. 1855. Ichthyographia Chinae Borealis, Nouveaux mémoires de la Société impériale des naturalistes de Moscou, 10:215-263.
Bleeker P. 1864. Notices sur quelques genres et espèces de Cyprinoïdes de Chine. Nederlandsch Tijdschrift voor de Dierkunde, 2:18-29.
Garman S. 1912. Pisces. In: Some Chinese vertebrates. Memoirs of the Museum of Comparative Zoology, 40(4):111-123.
Khaleque MA. 2002. Bideshee Maachher Chas O Bebasthapana (A book on Fish Culture and Management of Exotic Fishes; in Bengali), published by Mahmuda Begum Jusi, Pallabi, 8/A Jamir Munshi Lane, Mymensingh 2200, Bangladesh, 93 pp.
Oshima M. 1920. Notes on freshwater fishes of Formosa, with descriptions of new genera and species. Proceedings of the Academy of Natural Sciences of Philadelphia, 72:120-135.
Rahman AKA. 2007. Exotic fishes and their impact on environment, 16th Annual General Meeting and National Conference 2007, Zoological Society of Bangladesh, 30 March, Dhaka, Bangladesh, pp.26-39.
Richardson J. 1846. Report on the ichthyology of the seas of China and Japan. Report of the British Association for the Advancement of Science 15th meeting (1845), pp. 187-320.
Sauvage HE. 1884. Contribution a la faune ichthyologique du Tonkin. Bulletin de la Société Zoologique de France, 9:209-215.
Siddiqui K and Choudhury SN (eds.) 1996. Matsha – Pukure Mah Chash Manual (A Manual on Pond Pisciculture) (in Bengali), published by the National Institute of Local Government, Agargaon, Sher-E-Bangla Nagar, Dhaka, Bangladesh, 606 pp.
Visited 3,442 times, 1 visits today | Have any fisheries relevant question?