অন্যান্য যে কোন প্রাণীর মতো মাছও মারা যাওয়ার পর দ্রূত পচতে শুরু করে। পচনের এই হার নির্ভর করে মাছের শরীরস্থ অনুজীবের (মূলত ব্যকটেরিয়া) কর্মশীলতার উপর। মৃত মাছের শরীরের পরিবেশ অনুজীবের জন্য যতটা উপযুক্ত হয় ততটা বেশি কর্মশীলতা এরা প্রদর্শণ করে। সাধারণত কম তাপমাত্রায় এসব অনুজীবের কর্মতৎপরতা হ্রাস পায়। তাই বরফ সংযুক্ত করে মৃত মাছ পরিবহণ ও সংরক্ষণ একটি বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি। এছাড়াও নানাবিধ রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতিতে এসব অনুজীব মারা যায় বা এর কর্ম তৎপরতা লোপ পায়। ফলে এসব রাসায়নিক দ্রবাদি ব্যবহার করেও মৃত মাছ সংরক্ষণ ও পরিবহণ করা যেতে পারে। কিন্ত এসব দ্রব্যাদির অনেক গুলোই মানুষের জন্য ভয়ংকর ক্ষতিকর বলে প্রমাণিত। যেমন- ফরমালিন। ফরমালিনের মাধ্যমে অল্প খরচে দীর্ঘ সময়ের জন্য মাছ সংরক্ষণ করা যায় বলে এর ব্যবহার অধিকমাত্রায় পরিলক্ষিত হয়। বিশেষত যেসব মৃত মাছ বিদেশ থেকে আসে তার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ফরমালিনের উপস্থিতির খবর প্রায়ই পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হতে দেখা যায়। কিন্তু ফরমালিন যুক্ত মাছ মানুষের শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর বলে বিবেচিত হয়ে থাকে।
ফরমালিনযুক্ত মাছ খাওয়ার ফলে মানুষের শরীরে নিম্নলিখিত সমস্যগুলো দেখা দিতে পারে-
- বৃক্ক, যকৃত, ফুলকা ও পাকস্থলী সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
- মাছে ফরমালিনের মাত্রা বেশী থাকলে সে ক্ষেত্রে খাওয়ার পর মানুষের শরীর অবশ হয়ে যেতে পারে।
- মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হয়।
- দৈহিক স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
তাই আমাদের প্রত্যেকের টাটকা ও ফরমালিন বিহীন ও ফরমালিনযুক্ত মাছের পার্থক্য জানা প্রয়োজন যাতে করে মাছ ক্রয় করার পূর্বে সহজেই ফরমালিন বিহীন মাছ চেনা সম্ভব হয়।
ফরমালিন বিহীন ও ফরমালিনযুক্ত মাছের পার্থক্য নিম্নরূপ-
ক্রম | টাটকা ও ফরমালিন বিহীন মাছ | ফরমালিন দেয়া মাছ |
১। | ফুলকা উজ্জ্বল লাল বর্ণের হয় | ফুলকা ধূসর ও ফরমালিনের গন্ধ পাওয়া যায় |
২। | আঁইশ উজ্জ্বল হয় | আঁইশ তুলনামূলক ধূসর বর্ণের হয় |
৩। | শরীরে আঁশটে গন্ধ পাওয়া যায় | শরীরে আঁশটে গন্ধ কম পাওয়া যায় |
৪। | মাছের দেহ স্বাভাবিক নরম হয় | দেহ তুলনামূলক শক্ত হয় |
৫। | চোখ উজ্জ্বল হয় | চোখ ঘোলাটে হয় |
.
আরো বিস্তারিত এখানে: মাছে ফর্মালিন ব্যবহারের ভয়াবহতা, ক্ষতিকর প্রভাব ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা
Visited 1,292 times, 1 visits today | Have any fisheries relevant question?